ব্যাটিংবান্ধব উইকেটে দায়্ত্বি নিতে হবে তাসকিন-শরিফুলদের

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৮:৫২ পিএম, ০৫ মার্চ ২০২৪

শেষ পর্যন্ত ব্যবধান মোটে ৩ রানের। যদিও এক সময় মনে হচ্ছিল হয়ে যাবে। দুই তরুণ জাকের আলি অনিক আর রিশাদ হোসেন বুঝি দল জিতিয়েই বিজয়ীর বেশে নাচতে নাচতে সাজঘরে ফিরবেন। এরকম পরিস্থিতির পর অনেকে বেমালুম ভুলেই গেছেন যে, ব্যাটিং ব্যর্থতায় নয়, আসলে আলগা ও কমজোরি বোলিংই ডুবিয়েছে বাংলাদেশকে।

কেউ কেউ সোমবার রাতে অল্পের জন্য জয় হাতছাড়া হওয়ার পর নানাভাবে আঙ্গিকে হিসাব কষছেন। এর মধ্যে উপরের দিকে লিটন দাস (০), তাওহিদ হৃদয় (৮), সৌম্য সরকার (১২) আর অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর (২০) দোষ খুঁজে পেয়েছেন সবচেয়ে বেশি। তাদের আফসোস, ওই চারজনের একজন লম্বা ইনিংস খেলতে পারলেই হয়তো জিতে পারতো বাংলাদেশ। প্রথম চারজনের কেউ লম্বা ইনিংস খেললে মাহমুদউল্লাহ আর জাকের আবার বড় ইনিংস খেলতে পারতেন কিনা? তা কিন্তু কেউ খুঁটিয়ে দেখছেন না ।

আসল কথা সেটা নয়। ২০৭ রানের বড় টার্গেট সামনে নিয়ে ৩০ রানে ৩ উইকেট পতনের পর আসলে জেতা কঠিন। তারপরও ৩৮ বছরের বর্ষীয়ান যোদ্ধা মাহমুদউল্লাহ প্রাণপণ চেষ্টা করেছেন। আর জাতীয় দলের জার্সি গায়ে প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচেই জাকের দুঃসাহসী নাবিকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হচ্ছিলেন প্রায়। কিন্তু তাদের চেষ্টা সফল হয়নি।

আসলে মাহমুদউল্লাহ ও জাকেরের চেষ্টা ভেস্তে যায় মূলত অন্য কারণে। ম্যাচে শ্রীলঙ্কার রানটা বেশি হয়ে গিয়েছিল। উইকেট অবশ্যই অনেক ভালো ছিল। বল ব্যাটে এসেছে। গতির পাশাপাশি বাউন্সটাও ছিল চমৎকার। সব মিলে আদর্শ টি-টোয়েন্টি উইকেট।

এমন ব্যাটিংবান্ধব পিচে সবার আগে দরকার বোলারদের মাপা বোলিং। বাংলাদেশের বোলাররা গতকাল সোমবার সেই কাজটিই করতে পারেননি। তরুণ লেগস্পিনার রিশাদ হোসেন (৪ ওভারে ১/৩২) ছাড়া তাসকিন আহমেদ (৪ ওভারে ১/৪০), শরিফুল ইসলাম (৪ ওভারে ১/৪৭), মোস্তফিজুর রহমান (৪ ওভারে ০/৪২) আর শেখ মেহেদি (৩ ওভারে ০/৩০) প্রত্যেকে ওভার পিছু ১০ রানের বেশি দিয়েছেন। আর তাই লঙ্কানদের স্কোর দুইশ-তে গিয়ে ঠেকেছে।

অন্তত দুইজন বোলার রানটা তিরিশের আশপাশে রাখতে পারলে লঙ্কানদের স্কোর ১৭০ থেকে ১৮০ এর মধ্যে বেঁধে রাখা সম্ভব ছিল। কিন্তু সবাই একযোগে আলগা বেলিং করে বেদম মার খেয়েছেন লঙ্কান ব্যাটারদের হাতে।

আগামীকাল বুধবারের ম্যাচে বাংলাদেশের সাফল্যের প্রথম ও পূর্বশর্তই হলো বোলারদর সুনিয়ন্ত্রিত বোলিং। সারা বছর বোলিং সহায়ক, স্লো-গতি আর নিচু বাউন্সি পিচে খেলে খেলে বাংলাদেশের বোলারদের অভ্যাস খারাপ হয়ে গেছে।

ব্যাটিংবান্ধব পিচে কোন লাইন ও লেন্থে বল করলে প্রতিপক্ষ ব্যাটারদের হাত খুলে খেলা থেকে বিরত রাখা যাবে; তাসকিন, শরিফুল, মোস্তাফিজ আর শেখ মেহেদিরা সে কৌশল খুব ভালো করে রপ্ত করতে পারেননি। কিন্তু সিলেটে প্রথম দিন যে ব্যাটিং স্বর্গে খেলা হলো, সেখানে জিততে হলে যে বোলারদের ভালো বল করতেই হবে।

তাসকিন, শরিফুল, মোস্তাফিজ ও শেখ মেহেদিরা কি তা করে দেখাতে পারবেন আগামীকাল? যদি করে দেখাতে পারেন, তবেই কেবল সিরিজে লড়াইয়ে ফিরতে পারবে বাংলাদেশ।

এআরবি/এমএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।