অপরাজিত আবাহনীর কাছে পাত্তাই পেল না শেখ জামাল

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০২:৪২ পিএম, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

জিতলেই আবাহনী লিমিটেডকে ছুঁয়ে ফেলা সম্ভব ছিল না শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাবের। কারণ, দশ ম্যাচে টানা জিতে আবাহনী যে আগেই ধরা-ছোঁয়ার বাইরে চলে গিয়েছিল।

তবে আজ বৃহস্পতিবার শেরে বাংলায় আবাহনীকে হারাতে পারলে পয়েন্ট ব্যবধান কমিয়ে ফেলতে পারতো শেখ জামাল। তখন প্রথম লেগ শেষে আবাহনীর পয়েন্ট হতো ১১ ম্যাচে ২০। আর শেখ জামালের ১১ ম্যাচে ১৮। ব্যবধান থাকতো মাত্র ২ পয়েন্টের।

কিন্তু তা আর হলো কই? সাকিব আল হাসান ছাড়া শেষ ম্যাচে আবাহনীর বিপক্ষে মাঠে নেমে যে লেজে-গোবরে অবস্থা হয়েছে শেখ জামালের।

জয় তো বহু দূরে। দুরন্ত গতিতে এগিয়ে চলা আবাহনীর শৌর্য-বীর্য ও টিম পারফরম্যান্সের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি নুরুল হাসান সোহানের শেখ জামাল। মাত্র ৮৮ রানে গুটিয়ে ১০ উইকেটের ন্যাক্কারজনক পরাজয়ে মাঠ ছাড়লো শেখ জামাল।

প্রথম সেশনে আবাহনীর ফাস্ট বোলার শরিফুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ ও বাঁহাতি স্পিনার তানভীর ইসলাম, অপর মিডিয়াম পেসার তানজিম সাকিব ও অফস্পিনার মোসাদ্দেক হোসেনের সাঁড়াশি বোলিংয়ে ভেঙে যায় শেখ জামালের ব্যাটিং মেরুদণ্ড।

একজন ব্যাটারও রান পাননি ফিফটি। ওপেনার সাইফ হাসান ১৬, সৈকত আলী ২৩, রবিউল ইসলাম রবি ৪, অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান ০, নাইমুল পারভেজ ১৪, ইয়াসির আলী রাব্বি ১৭ ও অভিজ্ঞ জিয়া ২। এই ছিল শেখ জামালের ব্যাটারদের দৈন্যদশার চিত্র।

আবাহনীর পেসার শরিফুল একাই ৩৫ রানে ৪ উইকেটের পতন ঘটিয়েছেন। আরেক পেসার তাসকিন ও বাহাতি স্পিনার তানভীর দুটি করে উইকেট পান। তানজিম সাকিব ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত পান একটি করে উইকেট। এতে মাত্র ৮৮ রানে শেষ হয় শেখ জামালের ইনিংস।

৮৯ রান করলে জয় ধরা দিবে এই সহজ সমীকরণকে সামনে রেখে আবাহনীর দুই ওপেনার নাইম শেখ ও এনামুল হক বিজয় শেখ জামাল বোলারদের নিয়ে ইচ্ছেমতো খেললেন। তাদেরকে সাধারণ মানে নামিয়ে মাত্র ১০.২ ওভারে শেখ জামালের করা ৮৮ রানকে টপকে ১০ উইকেটের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন।

বিজয় তাও রয়েসয়ে ২২ বলে ৩৭ রান করলেন। আর নাইম শেখ করলেন ৪০ বলে হার না মানা ৫৩ রান।

যে ম্যাচটিতে হতে পারতো পয়েন্ট টেবিলের গুরুত্বপূর্ণ লড়াই সে ম্যাচটিই একপেশে হয়ে গেল। আবাহনী শেষ পর্যন্ত একমাত্র দল হিসেবে প্রথম লেগে ১১টি ম্যাচের সবকটিতে জিতে অনেক দূর এগিয়ে গেল।

প্রথম লেগ শেষে আবাহনীর পয়েন্ট এগারো ম্যাচে শতভাগ জয় ২২। অন্যদিকে যে দলটি থাকতে পারতো দ্বিতীয়স্থানে সে দলটি ৩ পরাজয়ে প্রথম লেগ শেষ করল ১৬ পয়েন্ট নিয়ে।

আবাহনীর থেকে ছয় পয়েন্ট পেছনে বর্তমান অবস্থানে শেখ জামালকে ছুঁয়ে ফেলতে পারে পয়েন্ট টেবিলের অন্য দুটি দল- মোহামেডান ও শাইনপুকুর।

এ দুটি দলেরই ১০ ম্যাচে ৭টি করে সমান ১৪ পয়েন্ট। আগামীকাল যদি মোহামেডান ব্রাদার্সকে হারায় এবং শাইনপুকুরও শেষ ম্যাচে জয়ী হয় তাহলে শেখ জামাল, শাইনপুকুর ও মোহামেডানের পয়েন্ট হবে সমান ১৬। তারপর নেট রানরেটে নির্ধারিত হবে দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ স্থান।

বাকি দুই দলের লড়াই হচ্ছে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ ও গাজী গ্রুপের মধ্যে।

এখানে একটি কথা না বললেই নয়, আবাহনী কিন্তু প্রায় সবার ধরাছোঁয়ার বাইরে। প্রথম লীগের পয়েন্ট যেহেতু সুপার লিগে যোগ হয় তাই আবাহনী ছয় পয়েন্ট এগিয়ে থাকবে। দ্বিতীয়স্থানে যেই থাকুক না কেন, শেখ জামাল, শাইনপুকুর বা মোহামেডান, সেই দলের থেকে ৬ পয়েন্ট এগিয়ে থেকে সুপারলিগ শুরু করবে আবাহনী।

অর্থাৎ আবাহনী যদি টানা ৩ ম্যাচ হারে তাহলে কোনো দলের পক্ষে আবাহনীকে ছুঁয়ে ফেলা সম্ভব; কিন্তু টপকে যাওয়া সম্ভব না।

এত সমীকরণ নিয়ে বসে আসলে কোনো লাভ নেই। সহজ কথা হচ্ছে, সুপার লিগে দুই ম্যাচ জিতলেই চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাবে আবাহনী। অর্থাৎ প্রথম লেগ শেষেই আবাহনী পাচ্ছে শিরোপার গন্ধ।

হয়তো গতবারের চ্যাম্পিয়ন ধানমণ্ডির ক্লাব ভবনেই যাচ্ছে এবারের শিরোপা।

এমএইচ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।