স্মৃতিকাতর শাহরিয়ার নাফীস

‘বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গন মানেই বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম’

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৪:০৩ পিএম, ২০ এপ্রিল ২০২৪

এখানে জাতীয় দলের হয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়নি তার। এমনকি বাংলাদেশ জাতীয় যুব অনূর্ধ্ব-১৯ দলের পক্ষেও বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে কোনো খেলায় অংশ নেওয়া হয়নি। তবে তিনি এমন এক ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছেন, যা তাকে স্মরণীয় করে রেখেছে। এবং শাহরিয়ার নাফীসের ক্যারিয়ার প্রতিষ্ঠায় রেখেছে গুরুত্বপূর্ণ অবদান। পাশাপাশি পরিচিতিটাও অনেক বাড়িয়ে দিয়েছিল।

ভাবছেন, কী এমন ম্যাচ যেটা খেলে শাহরিয়ার নাফীস বেশি পরিচিতি পেয়েছিলেন? খেলাটি ছিল আসলে ওয়ার্ম আপ ম্যাচ। ২০০৪ সালের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলে জায়গা হয়নি শাহরিয়ার নাফীসের। আসর শুরুর আগে অন্যতম ফেবারিট ভারতের যুব দলের সাথে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে একটি প্রস্তুতি ম্যাচে ঢাকা মেট্রোর হয়ে খেলতে নেমে সেঞ্চুরি করে বসেন শাহরিয়ার নাফীস।

ভারতীয় যুবাদের বিপক্ষে শতরানের কৃতিত্ব দেখানো কে এই শাহরিয়ার নাফীস? তা জানতে রাজ্যের কৌতুহল ছড়িয়ে পড়ে ভক্তদের মাঝে। যার ফলে রাতারাতি আলোর নিচে চলে আসেন নাফীস।

আজ শনিবার ভোর ৬টা থেকে সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত যখন টেস্ট, ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে জাতীয় পর্যায়ের ৩৪ ক্রিকেটার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে রানিং করলেন, তখন ভীষণ আবেগতাড়িত হয়ে পড়েছিলেন শাহরিয়ার নাফীস। আবেগতাড়িৎ কন্ঠে তিনি বলে উঠলেন, ‘বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গন মানেই বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম।’

কর্ম জীবনে শাহরিয়ার নাফীস বিসিবির ক্রিকেট অপস ম্যানেজার। অপর বন্ধুপ্রতিম ক্রিকেটার নাফিস ইকবালের সঙ্গে জাতীয় দলের রানিং অনুশীলন দেখতে এসেছিলেন তিনি।

বলে রাখা ভালো, শাহরিয়ার নাফীস ঘরোয়া ও কোনো প্রতিযোগিতামূলক আসরে বঙ্গবন্ধুতে কোন ম্যাচ খেলতে না পারলেও নাফিস ইকবাল খেলেছেন। আবাহনীর হয়ে ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগের ২০০৩-২০০৪ এবং ২০০৪-২০০৫ মৌসুমে অংশ নিয়েছেন নাফিস ইকবাল।

বর্তমানে সতীর্থ শাহরিয়ার নাফীসের সঙ্গে বিসিবির ক্রিকেট অপসের ম্যানেজার পদে কাজ করা নাফিস ইকবালের কাছে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম আরও স্মরণীয়। নাফিস ইকবালের টেস্ট অভিষেকও (২০০১ সালের অক্টোবরে) দেশের ক্রীড়াকেন্দ্র বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। নাফিস ইকবালের প্রথম টেস্ট হাফসেঞ্চুরি আর শতরানও এই ঐতিহাসিক স্টেডিয়ামে।

প্রথমটি ভারতের বিপক্ষে ২০০৪ সালের ডিসেম্বরে। আর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একই মাঠে ম্যাচ বাঁচানো শতকও (৪৭০ মিনিটে ৩৫৫ বলে ১২১) আছে ২০০৫ সালের জানুয়ারিতে।

কিন্তু নাফিস ইকবাল গণমাধ্যমে আজ সে সব স্মৃতিচারণ করেননি। মিডিয়ায় কথা বলেছেন শাহরিয়ার নাফীস। ৯০ দশকের শেষ দিকে সাবেক জাতীয় ক্রিকেটার ওয়াহিদুল গনির ক্রিকেটার তৈরির কারখানা ‘অংকুর ক্রিকেট একাডেমি’র ছাত্র হিসেবে এই বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের পূর্ব উত্তর কোণায় বহুদিন অনুশীলন করেছেন নাফিস ইকবাল।

সে স্মৃতি টেনে এনে শাহরিয়ার নাফীস বলে ওঠেন, ‘আমাদের খেলার প্রতি আগ্রহ তৈরি হওয়া, খেলা দেখে শেখা সব এই স্টেডিয়ামকে কেন্দ্র করেই। এখনো মনে আছে খুব সম্ভবত ১৯৯৩ বা ১৯৯৪ সালে প্রথম এই মাঠে এসেছিলাম খেলা দেখতে। কাজিনরা যেহেতু খেলতেন, ফারুক ভাই জাতীয় দলের অধিনায়ক ছিলেন। পাশাপাশি আইকনিক যত খেলোয়াড়রা ছিলেন, তাদের দেখে খেলা শুরু। আমার বাংলাদেশে ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলা এখানে শুরু।’

অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের গা গরমের খেলায় ভারতের যুব দলের বিপক্ষে সেঞ্চুরির প্রসঙ্গ উঠলে শাহরিয়ার নাফীস বলেন, ‘আমার প্রথম যে ইনিংসটা আন্ডার নাইনটিতে একটা অনুশীলন ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে, সেটা এই মাঠে। জাতীয় দলে আমি এখানে কোনো খেলা পাইনি, এটা আমার একটা আক্ষেপ। বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গন মানেই বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম। এখানে আসলে আপনার ভালো না লেগে ফেরার কোনো সুযোগই নাই।’

এআরবি/এমএমআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।