প্রচণ্ড গরমে ক্রিকেটারদের সুস্থ রাখতে বিসিবির উদ্যোগ

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৭:৪১ পিএম, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়েছে। গরমে প্রাণ ওষ্ঠাগত। অস্বাভাবিক তাপমাত্রায় স্কুল, কলেজ আর বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ। সূর্যতাপ আগুনের লেলিহান শিখার মত গায়ে এসে লাগছে। খোলা আকাশে চলাফেরাই দায়।

সেখানে রাজধানী ঢাকার মিরপুরের শেরে বাংলা, ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়াম আর বিকেএসপিতে চলছে প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগ। শীর্ষ তারকা সাকিব আল হাসান ছাড়া বাকি সব তারকা আর প্রতিষ্ঠিত পারফরমাররাই প্রিমিয়ার লিগ খেলছেন।

সাকিব ঈদের আগে ৩ ম্যাচ খেলে পরিবারের সাথে ঈদ করতে যুক্তরাষ্ট্র গেছেন। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা-৫টা অবধি ম্যাচ খেলছেন ক্রিকেটাররা। কীভাবে? তারা কিভাবে গরমের এ প্রচণ্ডতা সহ্য করেও ৭-৮ ঘণ্টা মাঠে খেলছেন, দৌড়াচ্ছেন? কীভাবে তারা ১৫-২০ গজ দৌড়ে এসে বল করছেন, রান নিচ্ছেন আর ফিল্ডাররা বলের পেছন পেছন ছুটছেন?

ক্রিকেটাররা এই জায়গায় ভীষণ পেশাদার। খেলা তাদের নেশা, ভালবাসা কিংবা ভালোলাগাই শুধু নয়, পেশাও। জীবন-জীবিকার কারণে তারাও এত কষ্ট সহ্য করে সারাদিন খেলছেন।

তবে এভাবে খেলায় অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি আছে নিঃসন্দেহে। ক্রিকেটাররা এমন খরতাপ সহ্য করে কীভাবে ৮ ঘণ্টা মাঠে কাটাবেন, সে সম্পর্কে তাদের সচেতন করতে এবং এমন অস্বাভাবিক গরমের সাথে মানিয়ে নিয়ে তারা যাতে সুস্থ থাকতে পারেন, সে লক্ষ্যে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড আর এআইইউবি এক যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

আজ বুধবার বিসিবিতে ওই দুই সংস্থার এক যৌথ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হলো। সেখানে বিসিবি তথা জাতীয় দলের সংশ্লিষ্ট সবাই এবং ক্লাবগুলোর একজন করে প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

কর্মশালা শেষে বিসিবির প্রধান চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরী গণমাধ্যমকে জানান, ‘বাতাসে প্রচুর তাপ, শুধু তাপ হলে অতটা সমস্যা ছিল না। কিন্তু জলীয়বাষ্পের কারণে এখানে আর্দ্রতা বেড়ে গেছে এবং এই আর্দ্রতা খেলার জন্য ক্ষতিকর। এটা শারীরিক দিক থেকেও ক্ষতিকর। আমাদের এ অবস্থায়ও খেলা তো চলবে। উষ্ণায়নের এই সময় গরম আরও বাড়বে। আমরা তো খেলা বন্ধ করতে পারছি না। এটার সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে।’

‘আমাদের বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে এটাকে মানিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়াটা জানতে হবে। সচেতনতা দিয়ে আমরা এটাকে ঠেকাতে পারব। আমাদের কাজ হচ্ছে যারা এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ তাদের নিয়ে এসে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোকে যারা আছেন, আম্পায়ারিং, গ্রাউন্ডস...এসব বিভাগ এবং বিভিন্ন ক্লাবের সঙ্গে বসিয়ে দেওয়া। বিভিন্ন ক্লাবের যে সাপোর্ট স্টাফরা আছেন, যারা এটাকে ডিল করে ফিজিও ট্রেনার কোচ, এদের সবাইকে একসঙ্গে এনে আমরা এই বৈজ্ঞানিক তথ্যগুলো দিচ্ছি যে, কীভাবে এটাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারব। পুরোপুরি পারব না। কিন্তু এ গাইডলাইনগুলো ফলো করলে আমরা হয়তোবা পারফরম্যান্সের দিক থেকে ভালো করব। অসুস্থতা কমে আসবে এবং পারফরম্যান্স ভালো হবে।’

ডা. দেবাশীষ আরও বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে এআইইউবির একটা শিক্ষামূলক চুক্তি আছে। তারা আমাদের কিছু বিভিন্ন একাডেমিক ট্রেনিংয়ে সাহায্য করবে। ওনাদের যে পাবলিক হেলথের বিভাগ আছে, ওটার প্রফেসর সাহেব আজ আমাদের সঙ্গে ছিলেন। আপাতত আমরা আজ করলাম, সবাইকে একসঙ্গে পাওয়াও কঠিন। বিসিবির বিভিন্ন বিভাগের লোকজন ছিল।’

‘আমাদের ক্রিকেট বোর্ডে যে টিমগুলো আছে, যেমন জাতীয় দল; এদের ম্যানেজমেন্ট সহজ। কারণ এরা সংখ্যায় কম। দ্বিতীয়ত হচ্ছে, ওরা ভালো লজিস্টিক সাপোর্ট পায়। ওদের দেখাশোনার জন্য বিশেষ দু’চারজন লোক আছে। সবমিলিয়ে ওদের ম্যানেজমেন্ট অনেক ভালো হয়। কিন্তু এই ম্যানেজমেন্ট তো আমরা ক্লাব লেভেলে ওভাবে করতে পারছি না। ক্লাব তো সব সুযোগ-সুবিধা দিতে পারছে না। তাদের ট্রাভেল করতে হয়, ক্লাবকে আরেকটা হয়তো অনুন্নত জায়গায় থাকতে হচ্ছে, খাবার দাবার নিউট্রেশনের ব্যাপার আছে। আমরা প্রত্যেক ক্লাবের ফিজিও ও ট্রেনারকে ডেকেছি। আমি যদি তাদের এডুকেট করতে পারি, তারা দলকে করবে। একটা গাইডলাইন দেওয়া হয়েছে।’

এআরবি/এমএমআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।