পেনাল্টি মিসের কারণে বর্ণ বিদ্বেষের শিকার সানচো-সাকারা

ম্যাচটি টাইব্রেকারে গড়িয়ে যাচ্ছে দেশে শেষ মুহূর্তে দুটি পরিবর্তন করেন ইংল্যান্ড কোচ গ্যারেথ সাউথগেট। মার্কাস রাশফোর্ড এবং জেডন সানচোকে মাঠে নামান তিনি। এই দু’জনের সঙ্গে ৭০ মিনিটে মাঠে নামা বুকাইয়ো সাকাও পেনাল্টি শট মিস করেন। যে কারণে ভেঙে যায় ইংল্যান্ডের স্বপ্ন। ৫৫ বছর পর কোনো টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠেও শিরোপা জেতা হলো না।
ইতালির বিরুদ্ধে পেনাল্টি শ্যুট-আউটে হ্যারি কেইন এবং হ্যারি মাগুইরে গোল করতে সক্ষম হন। বাকি তিনটি মিস হওয়ার ফলে ৩-২ ব্যবধানে হেরে ইউরো জয়ের স্বপ্নভঙ্গ হলো ইংল্যান্ডের। পরপর হতাশাজনকভাবে তিনটি পেনাল্টি মিস করার কারণে এবার রাশফোর্ড, সানচো এবং সাকা- এই তিনজনই এখন বর্ণবাদী আচরণের শিকার।
তিন ফুটবলারের উদ্দেশ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় বর্ণবাদমূলক মন্তব্যে ভরিয়ে তুলেছেন একদল ইংরেজ সমর্থক। ঘটনাক্রমে তিনজনের শরীরের রঙই হচ্ছে কালো।
বর্তমানে বিশ্বজুড়ে বর্ণবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রতীক হয়ে উঠেছে হাঁটু গেড়ে বসা। তবে পুরো ইউরোতে ম্যাচ শুরুর আগে ইংল্যান্ড ফুটবলাররা হাঁটু গেড়ে বসলে, তার বিরুদ্ধে মন্তব্য করে নিজেদের মনোভাব আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছিল ইংল্যান্ড সমর্থকরা। যে কারণে এই ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক হলেও অবাক করার মতো নয়। ঘটনাটির তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইংল্যান্ড ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এফএ)।
This England team deserve to be lauded as heroes, not racially abused on social media.
— Boris Johnson (@BorisJohnson) July 12, 2021
Those responsible for this appalling abuse should be ashamed of themselves.
এফএ এক বিবৃতিতে জানায়, ‘এফএ কঠোরভাবে যে কোনরকমেরই বর্নবাদমূলক মন্তব্যের বিরুদ্ধ। এফএ ইংল্যান্ড তারকাদের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় ধেয়ে আসা কুরুচিকর মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে। কেউ যদি এমন মনোভাব পোষণ তাহল সে আমাদের মধ্যে একেবারেই স্বাগত নয়।’
লন্ডন পুলিশও ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বলেই জানানো হয়েছে। মেট্রোপলিটান পুলিশ ইভেন্টস-এর পক্ষ থেকে টুইট করে বলা হয়, ‘আমরা কয়েকজন ফুটবলারের প্রতি অপমানজনক এবং বিদ্বেষমূলক মন্তব্য নিয়ে অবগত। এই ঘটনা একেবারেই মেনে নেওয়া যায় না। এটা সহ্য করা হবে না এবং তদন্ত করা হবে।’
এই ঘটনায় চরম হতাশা প্রকাশ করা হয়েছে ইংল্যান্ড দলের পক্ষ থেকেও। টুইটে বলা হয়েছে, ‘দেশের জার্সি গায়ে সবটুকু উজাড় করে দিয়েছে, দলের এমন কয়েকজনের প্রতি অনলাইনে বিদ্বেষমূলক মন্তব্যে আমরা বিরক্ত। আমরা খেলোয়াড়দের পাশেই দাঁড়াচ্ছি।’
ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীও বরিস জনসনও এ ঘটনায় হতাশা প্রকাশ করেছেন। নিজের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে তিনি লেখেন, ‘ইংল্যান্ড দলের খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় বর্ণবাদমূলক মন্তব্য করা নয়, বরং তাদের নায়কের সম্মান জানানো উচিত। যারা এই ঘটনায় জড়িত তাদের নিজেদের ওপর লজ্জা হওয়া উচিত।’
আইএইচএস/