ফুটবলের প্রধান সমস্যা খেলার জায়গা নেই: ক্রীড়ামন্ত্রী

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৯:৩৬ পিএম, ২৪ জানুয়ারি ২০২৪

২০২১ সালের আগস্টে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের সংস্কার কাজ শুরুর পর থেকেই মাঠ সমস্যায় ভুগছে দেশের ফুটবল। মাঠ নেই বলে বাফুফে অনেক খেলাই আয়োজন করতে পারছে না। এমনকি কিছু আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা ও ম্যাচ আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েও ভেন্যু সংকটের কারণে পরিকল্পনা থেকে সরে আসতে হয়েছে বাফুফেকে।

বুধবার মন্ত্রণালয়ে নতুন যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রীর সঙ্গে প্রায় ৩ ঘণ্টা আলোচনা করেছেন বাফুফে কর্মকর্তারা। সেখানে মাঠের সংকট ও অপ্রতুল বাজেটের বিষয়টিই তুলে ধরেছেন তারা।

বাফুফের সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দিন অসুস্থতার কারণে এ বৈঠকে যোগ দিতে পারেননি। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রীর সঙ্গে এ আলোচনায় বাফুফে সিনিয়র সহসভাপতি সালাম মুর্শেদীসহ উপস্থিত ছিলেন সহসভাপতি কাজী নাবিল আহমেদ, মহিউদ্দিন আহমেদ, নারী ফুটবল উইংয়ের প্রধান মাহফুজা আক্তার কিরণ ও সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষার।

ফুটবল ফেডারেশনের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠকের পর ক্রীড়ামন্ত্রী মো. নাজমুল হাসান পাপন ব্রিফিংয়ে গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘ফুটবলের মূল সমস্যা দুটো। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াসে সংস্কার কাজ চলায় তাদের খেলার জায়গা নেই। দুই একটা টুর্নামেন্ট বা ফ্রেন্ডলি করার জায়গাও পাচ্ছে না তারা। আমরা এটা দেখছি। তাদের দুই একটা সাজেশন দিয়েছি। মেয়েদের ফুটবল নিয়ে আলাপ হয়েছে। ওদের জন্য কি করা যায় সেটাও দেখা হবে।'

ফুটবলের বাজেটটা মোটাসোটা হলেও সেটাকে বাস্তবসম্মতই বলেছেন ক্রীড়ামন্ত্রী, ‘ফুটবলের বাজেট অন্যান্য ফেডারেশনের চেয়ে বেশি। এটা স্বাভাবিক। ওরা একটা রিপোর্ট দিয়েছে। আমি বিস্তারিত চেয়েছি। কারণ, আমাকে বিস্তারিত জানতে হবে। এখন জরুরী ইস্যু হলো- বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম ডেটলাইন অনুযায়ী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে যেন শেষ করতে পারি। দ্বিতীয়ত কমলাপুরকে যদি একটু আপগ্রেড করা যায়, তাহলে টুর্নামেন্টগুলো ওখানে চালাতে পারে।’

ক্রীড়ামন্ত্রী বলেন, ‘যতটুকু জানি ক্রীড়াক্ষেত্রে পুরো বাজেট ৩২ কোটি টাকা। এটা ট্রেনিং ও বিদেশে খেলায় অংশগ্রহণ দিয়ে। এটা খুবই সামান্য। আগামী অর্থবছরে এটাকে বাড়ানো যায় কিনা দেখবো। এখনকার পদ্ধতিতে অর্থ বাড়ানোর সুযোগ নেই বললেই চলে। বাড়াতে পারবো সেটা ১০ শতাংশ। কারণ, একটা সীমাবদ্ধতা আছে। আগামী অর্থবছরে যদি বাড়াতে পারি, তাহলে এই চাহিদাগুলো পূরণ সম্ভব। ফান্ড বাড়াতেই হবে। এ ছাড়া আমাদের উপায়ও নেই। দ্বিতীয়ত স্পন্সরশিপ যোগার করা। আমার ধারণা বেশ কিছু ফেডারেশনের স্পন্সর যোগার সম্ভব।'

স্টেডিয়াম নেই বলে বাফুফে মেয়েদের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ আয়োজনের ভেন্যুর নাম জমা দিতে পারছে না বাফুফে। ক্রীড়ামন্ত্রী মেয়েদের সাফের ভেন্যু নিয়ে বলেছেন, ‘মেয়েদের সাফ বিকল্প কোথায় করা যায় আলোচনা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম কাজ চালানোর মত করা যায় কিনা, সেটা পরিদর্শন শেষে বুঝতে পারবো।’

মন্ত্রী জানিয়েছেন, এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের সভায় থেকে ফিরে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে তিনি বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম, মওলানা ভাসানী স্টেডিয়াম ও কমলাপুর স্টেডিয়াম পরিদর্শন করবেন।

প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা দিলে দেশের ফুটবলকে কোথায় নিয়ে যেতে পারবে বাফুফে? মন্ত্রীকে সেই লক্ষ্যের কথাও বলেছেন বাফুফে কর্মকর্তারা। ‘ফুটবল কোথায় যেতে পারে বাফুফে তার একটা পরিকল্পনা দিয়েছে লিখিত আকারে। বাফুফে কর্মকর্তারা এশিয়ান কাপে খেলার টার্গেটের কথা বলেছেন। এটা পারলে তো বিরাট ব্যপার হবে। এর জন্য আরও আরও বিস্তারিত দেবে তারা, কি কি লাগবে। বছরে কি টাকা লাগবে এবং অবকাঠামো কি প্রয়োজন সেটা তারা বলে গেছেন। এশিয়ান কাপে খেলতে হলে কি কি দরকার তা আমাদের দেখা লাগবে। সামনের বাজেট থেকে মেটানোর চেষ্টা থাকবে। সরকারের তরফ থেকে যেটা পারবো করবো, যেটা পারবোনা এটা প্রাইভেট সেক্টর থেকে নেবো'- বলেছেন ক্রীড়া প্রতিমমন্ত্রী।

প্রাইভেট সেক্টর থেকে স্পন্সর পাওয়া সম্ভব বলে আত্মবিশ্বাসী ক্রীড়ামন্ত্রী, ‘আমি যে জায়গা থেকে আসছি ওখানে টাকা চাইলেই টাকা পেতাম। কার কার কাছ থেকে নেবো এটাও চিন্তা করতাম। এটা তো নতুন জায়গা। আমি আশা করছি পাবো। অতীত অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, বাংলাদেশে স্পন্সরের অভাব নেই। তবে হ্যাঁ, তারা যে টাকাটা দেয় সেভাবে কাজটা করতে হবে।’

আরআই/আইএইচএস/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।