বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম সংস্কার, দরপত্র চূড়ান্ত

অক্টোবরের মধ্যে সব কাজ শেষ করার লক্ষ্য

রফিকুল ইসলাম
রফিকুল ইসলাম রফিকুল ইসলাম , বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৮:২৫ পিএম, ১২ এপ্রিল ২০২৪

বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম সংস্কারের জন্য বর্ধিত ৬০ কোটি টাকা বাজেটের কাজের দরপত্র হয়ে গেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৩৮ কোটি টাকা ফ্লাডলাইট স্থাপনে।

গ্যালারির বাকি অংশে শেড বসাতে ১০ কোটি (আগের দরপত্রের ২৯ কোটি টাকার কাজ চলমান), গ্যালারিতে চেয়ার বসাতে ৪ কোটি এবং স্টেডিয়ামের বাইরের রাস্তা ও সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য আছে আরো সাড়ে ৪ কোটি টাকার মতো কাজ। ভিভিআইপি গ্যালারিতে প্রধানমন্ত্রীর আসনের সামনে ২০ ফুট বাই ৮ ফুটের বুলেটপ্রুফ গ্লাস, প্রেসবক্স, মাঠে পানি দেওয়ার জন্য আধুনিক যন্ত্র স্থাপন বাকি কাজগুলোর অন্যতম।

স্টেডিয়াম সংস্কারের বাজেট দফায় দফায় যেমন বেড়েছে, তেমন বেড়েছে প্রকল্প শেষ হওয়ার সময়ও। বর্ধিত বাজেটের কাজ শেষ হওয়ার কথা এ বছর ৩১ ডিসেম্বর। তবে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ওয়ার্ক অর্ডার দিচ্ছে দুই মাস হাতে রেখে কাজ শেষ করতে। তাদের লক্ষ্য ৩১ অক্টোবরের মধ্যে সংস্কার কাজ শেষ করা।

জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সহকারী পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) সুকুমার সাহা জাগো নিউজকে বলেছেন, ‘নতুন প্রকল্পে কাজ শেষ হওয়ার কথা ডিসেম্বরের মধ্যে। কিন্তু আমরা ডিসেম্বর পর্যন্ত যেতে চাচ্ছি না। ফ্লাডলাইট, গ্যালারির বাকি অংশে শেড বসানো ও গ্যালারিতে চেয়ার বসানোর দরপত্র হয়ে গেছে। ওয়ার্ক অর্ডারে আমরা অক্টোবরের মধ্যে কাজ শেষ করতে বলবো। মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে এলইডি ফ্লাডলাইট স্থাপনের কাজ শুরু হবে। আর শেডের কাজ তো চলমানই।’

৯৮ কোটি টাকা বাজেটে শুরু হওয়া সংস্কারে সবচেয়ে বেশি ২০ কোটি টাকার কাজ সম্পন্ন হয়েছে অ্যাথলেটিকস ট্র্যাক স্থাপনে। বেশ কয়েক মাস আগেই এই কাজ শেষ হয়েছে। এরই মধ্যে জাতীয় পর্যায়ের খেলাও হয়েছে নতুন ট্র্যাকে। ড্রেসিং রুম ও ফুটবল মাঠ তৈরি কাজও শেষ। তবে প্রায় ৬ কোটি টাকার মাঠ নিয়ে আছে নানা অভিযোগ। বাফুফের অভিযোগ, মাঠের কাজগুলো তাদের চাহিদা মতো করা হয়নি।

মাঠের সীমানা ও অ্যাথলেটিকস ট্র্যাক এতটাই কাছাকাছি যে ফুটবলারদের ইনজুরি হওয়ার আশঙ্কা অনেক। মাঠে পানি দেওয়ার জন্য যে যন্ত্র বসানো হয়েছে তা আরো ঝুঁকিপূর্ণ। বাফুফের আপত্তিতে পানি ছেটানোর ওই যন্ত্র পরিবর্তন করা হচ্ছে। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সহকারী পরিচালক জানিয়েছেন, আগেরগুলোর পরিবর্তে এখন ১২ পয়েন্টে পপআপ সিস্টেম করে দেওয়া হচ্ছে।

আগামী অক্টোবরে অনুষ্ঠিতব্য নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ আয়োজন করতে চায় বাফুফে। যদি অক্টোবরের মধ্যে স্টেডিয়াম সংস্কারের সব কাজ শেষ হয় তাহলে তো মেয়েদের সাফ হতে পারে বঙ্গবন্ধুতে? ‘আসলে সেটা আমাদের বিষয় না। আমরা চেষ্টা করছি অক্টোবরের মধ্যে কাজ শেষ করার। খেলা আয়োজন করার বিষয়টি বাফুফের’-বলছিলেন সুকুমার সাহা।

বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম সংস্কারের জন্য ২০১৭ সালে যখন প্রথম ডিপিপি (ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল) তৈরি করেছিল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি), তখন এর ব্যয় ধরা হয়েছিল ৮০ কোটি টাকার মতো। ওই প্রজেক্ট তৈরি হয়েছিল ২০১৯ সালের মধ্যে সংস্কারকাজ শেষ করার লক্ষ্য নিয়ে।

কিন্তু যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে স্টেডিয়াম সংস্কার পরিকল্পনায় পরিবর্তন এনেছিল এনএসসি। পরিবর্তিত পরিকল্পনায় বাজেট বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ৯৮ কোটি টাকা এবং সংস্কার শেষ করার সময় নির্ধারণ করা হয়েছিল ২০২২ সালের জুন। পরে সময় বাড়িয়ে ওই বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছিল। কাজ শুরু হওয়ার পর আবার থেমে যায় বাজেটে বেড়ে যাওয়ায়।

৯৮ কোটি টাকায় যখন স্টেডিয়াম সংস্কার হচ্ছিল না তখন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ প্রথমে ৫৭ কোটি টাকা অতিরিক্ত চেয়েছিল অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে এবং পরিবর্তিত বাজেটের কাজ শেষ করার কথা ছিল এ বছর জুনের মধ্যে। পরে ওই বাজেটেও বৃদ্ধি করা হয়েছে। ৬০ কোটি টাকার বর্ধিত বাজেটে পুরো স্টেডিয়াম সংস্কারের ব্যয় দাঁড়াবে ১৫৮ কোটি ২০ লাখ টাকা। বর্ধিত বাজেটের কাজ শেষ করার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে এ বছরের ৩১ ডিসেম্বর।

সংস্কার পরিকল্পনায় অন্য কাজগুলোর মধ্যে রয়েছে-মাঠ উন্নয়ন, ড্রেসিংরুম আধুনিকায়ন, সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন, জেনারেটর স্থাপন, ডিজিটাল বিজ্ঞাপন বোর্ড স্থাপন, মিডিয়া সেন্টার তৈরি, টিকিট কাউন্টার, ডোপ টেস্ট রুম তৈরি, চিকিৎসা কক্ষ, ভিআইপি বক্স নির্মাণ, প্রেসিডেন্ট বক্স, টয়লেট উন্নয়ন ও সাব-স্টেশন তৈরি।

আরআই/এমএমআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।