পর্দানশিন নারীদের ছবি না তুলে বায়োমেট্রিক নিয়মের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:১২ পিএম, ২১ মার্চ ২০২২

মুখ না দেখিয়ে পর্দানশিন নারীদের শনাক্তকরণে আধুনিক ও আইনসম্মত বায়োমেট্রিক পদ্ধতি (ফিঙ্গারপ্রিন্ট) ব্যবহারের দাবি জানিয়েছে রাজারবাগ দরবার শরিফের মহিলা আনজুমান। একই সঙ্গে সরকারি অফিসে পর্দানশিন নারীদের সঙ্গে যোগাযোগ বা শনাক্তকরণের জন্য নারী কর্মকর্তা-কর্মচারীর ব্যবস্থা রাখার দাবি জানান তারা।

সোমবার (২১ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়।

সম্মেলনে মোহাম্মদিয়া জামেয়া শরিফ গবেষণাগারের মুফতি আব্দুল হালিম কোরআনে বর্ণিত সুরা আজহাবের শেষ আয়াতের ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, নারীদের চোখসহ পুরো অঙ্গ ডেকে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন আল্লাহ নিজেই। নারীদের সৌন্দর্য তাদের মুখ বা চোখের মাধ্যমেই বোঝা যায়। এখান থেকেই যতো ফেতনা শুরু হয়।

রাজারবাগ দরবার শরিফের মহিলা আনজুমানের সদস্য শারমিন ইয়াসমিন বলেন, বাংলাদেশে অসংখ্য পর্দানশিন নারী আছেন, যারা পবিত্র কোরআন-সুন্নাহ অনুসারে পরিপূর্ণ পর্দা করার চেষ্টা করেন। তারা কোনো গায়রে মাহরামকে (যেসব পুরুষের সঙ্গে বিয়ে বৈধ) চেহারা দেখান না। অথচ একজন নাগরিক হিসেবে রাষ্ট্রের সুযোগ-সুবিধা পেতে জাতীয় পরিচয়পত্রসহ বিভিন্ন কাগজ করার সময় শনাক্তের জন্য চেহারা খুলে ছবি তুলতে হয়। গায়রে মাহরাম পুরুষকে তার চেহারা দেখিয়ে নিশ্চিত করতে হয়, এটি তার ছবি।

তিনি বলেন, পর্দানশিন হওয়ায় এসব নারী চেহারা খুলে ছবি তুলছেন না বা গায়রে মাহরাম পুরুষকে চেহারা দেখাচ্ছেন না। এতে তারা জাতীয় পরিচয়পত্রসহ কোনো সরকারি কাগজ তৈরি করতে পারছেন না। কোনো নাগরিক অধিকারও লাভ করতে পারছেন না। পরিস্থিতি বেশি জটিল হয়েছে বিধবা, তালাকপ্রাপ্ত নারী বা প্রবাসীদের স্ত্রীদের জন্য। সামান্য সহযোগিতার জন্য তারা মাহরাম পুরুষকে কাছে পাচ্ছেন না। এমন অবস্থায় সন্তান-সন্ততি নিয়ে জীবন ধারণ তাদের জন্য বেশ জটিল হয়ে উঠেছে।

Press-Conference-2.jpg

ছবি তুলতে রাজি না হওয়ায় পর্দানশিন নারীদের রাষ্ট্রীয় সুবিধা ও নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হওয়ার চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, কোরআন-সুন্নাহ অনুসারে পরিপূর্ণ পর্দা করার কারণে মুখ খুলে ছবি তুলতে রাজি না হওয়ায় অনেক নারী রাষ্ট্রীয় সুবিধা ও নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

শারমিন দাবি জানিয়ে বলেন, শনাক্তকরণে ছবির পরিবর্তে আধুনিক যুগে বহুল ব্যবহৃত পদ্ধতি হয়ে উঠেছে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি। প্রযুক্তিনির্ভর এ পদ্ধতিতে শনাক্তকরণ প্রায় শতভাগ নির্ভুল। বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে শনাক্তকরণে কখনই দুই ব্যক্তির মধ্যে মিল পাওয়া যায় না। বয়স বা শারীরিক অবস্থার সঙ্গেও এ পদ্ধতিতে কোনো তারতম্য ঘটে না। তাই পর্দানশিন নারীদের শনাক্তকরণে ছবি পদ্ধতির বদলে আধুনিক ও আইনসম্মত বায়োমেট্রিক পদ্ধতি ব্যবহারের দাবি জানাচ্ছি।

এসময় রাজারবাগ দরবার শরিফের নারী আনজুমানের সদস্য সুমাইয়া আহমদ, মাশহুরা ফেরদৌসিসহ শতাধিক সদস্য উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া রাজারবাগ দরবার শরিফের পুরুষ সদস্যরাও অংশ নেন।

আরএসএম/এমআইএইচ/বিএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।