সঞ্চয়পত্র হচ্ছে একটি সঞ্চয় স্কিম বা ফিক্সড ডিপোজিট। বিনিয়োগের সবচেয়ে নিরাপদ উপায় হচ্ছে সঞ্চয়পত্র। ব্যাংকে স্থায়ী আমানত এবং শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের তুলনায় এবং নিশ্চিত ও সর্বোচ্চ মুনাফার দিক থেকেও সঞ্চয়পত্র সবচেয়ে আকর্ষণীয়।
বাংলাদেশ জাতীয় সঞ্চয় অধিদফতরের অধীনে জনগণকে সঞ্চয়ী হতে উদ্বুদ্ধ করা, বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে থাকা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সঞ্চয় জাতীয় সঞ্চয় স্কিমের মাধ্যমে আহরণ করার উদ্দেশ্যে এবং সাধারণের ঝামেলামুক্ত অর্থ বিনিয়োগের পথ প্রশস্ত করার নামই হচ্ছে সঞ্চয়পত্র।
সঞ্চয়পত্র কেনার সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে আপনি নিয়মিত মুনাফা (মাসিক/ত্রৈমাসিক/মেয়াদান্তে) এবং মেয়াদ শেষে আপনার আসল টাকা ফেরত পেতে পারেন। চাইলে আপনি আপনার সঞ্চয়পত্রের সার্টিফিকেটও নিতে পারবেন। অনেকের সঞ্চয়পত্র ট্যাক্স প্রত্যয়ন পত্র দরকার হয় ট্যাক্স রিটার্ন দেওয়ার সময়। সঞ্চয়পত্র ট্যাক্স প্রত্যয়ন পত্র হলো একটি আইনি নথি যা সঞ্চয়পত্র থেকে অর্জিত লাভের উপর কর কর্তনের প্রমাণ দেয়।
এটি দেখায় যে, সঞ্চয়পত্রের মুনাফা থেকে কত টাকা আয়কর হিসেবে কেটে রাখা হয়েছে। আয়কর রিটার্ন দাখিল করার সময়, এই প্রত্যয়নপত্রটি জমা দিতে হয়, যা আপনার মোট আয়ের উপর প্রযোজ্য করের পরিমাণ নির্ধারণে সহায়তা করে। জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর অথবা সংশ্লিষ্ট ব্যাংক থেকে এটি সংগ্রহ করা যায় এবং এটি সরকারের নিয়ম অনুযায়ী প্রদান করা হয়।
ঘরে বসেই আপনি সঞ্চয়পত্রের ট্যাক্স প্রত্যয়ন পত্র পেতে পারেন। এজন্য sp.tax.bd@gmail.com ঠিকানায় মেইল করতে হবে। এজন্য-
>> আপনার একটি ই-মেইল অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে।>> এরপর ইমেল পরিষেবা প্রদানকারীর ওয়েবসাইটে (যেমন জিমেই, আউটলুক) গিয়ে আপনার অ্যাকাউন্টে লগ ইন করুন। >> ‘কম্পোজ অপশনটিতে ক্লিক করে একটি নতুন ই-মেইল উইন্ডো খুলুন।>> ‘টু ফিল্ডে প্রাপকের ই-মেইল ঠিকানা লিখুন, ‘সাবজেক্ট’ ফিল্ডে বিষয়ের সংক্ষিপ্ত বিবরণ লিখুন, এবং মূল বার্তাটি ‘বডি’ অংশে লিখুন। যদি কোন ফাইল সংযুক্ত করতে চান, তাহলে ‘এটাচড ফাইল’ অপশনটি ব্যবহার করুন। সবশেষে, ‘সেন্ড’ বাটনে ক্লিক করে ইমেলটি পাঠিয়ে দিন।
ই-মেইলে প্রত্যয়ণপত্র পেতে আপনার করণীয় হলো শুধু এনআইডি বা জাতীয় পরিচয় পত্রের নম্বর লিখবেন, ভেতরে কোনো স্পেস দেবেন না। এখানে এনআইডির ছবি দিলে হবে না। পুরোনো এনআইডি হলে জন্ম সাল লিখে দিন। একটি মেইলে একটি এনআইডি এর প্রত্যয়ণপত্র পাবেন। একাধিক এনআইডি হলে একাধিক মেইল পাঠাতে হবে। প্রত্যয়ণপত্রটি পাবার পর আপনার সব তথ্য মিলিয়ে নিন। কোন প্রকার ভুল বা ত্রুটি পরিলক্ষিত হলে সঞ্চয় অধিদপ্তর বা সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে যোগাযোগ করুন।
এছাড়া কয়েকটি সহজ ধাপ অনুসরন করে ৩ থেকে ৫ কর্ম দিবসের মধ্যে আপনি নিজের ফোন থেকেই আপনার সঞ্চয়পত্রের সার্টিফিকেট পেতে পারেন। এজন্য-
>> আপনার স্মার্টফোনের গুগল প্লে স্টোর থেকে ‘সোনালী ইসেবা’ অ্যাপটি ডাউনলোড করুন এবং ইন্সটল করুন >> এরপর অ্যাপটি ওপেন করে নিচের দিকে ‘সোর্স ট্যাক্স সার্টিফিকেট’ লেখা আইকনটিতে ক্লিক করুন>> তারপর আপনার সঞ্চয়পত্রে যে কিউআর কোডটি আছে সেটি স্ক্যান করুন >> তারপর স্কিনে অপনার সঞ্চয়পত্রে উল্লেখিত এনআইডি নম্বর সহ ডিটেইলস চলে আসবে এবং এখানে যে ঘরে ই-মেইল অ্যাড্রেস দেওয়ার কথা আছে সেখানে আপনি যে ই-মেইল অ্যাড্রেসে সঞ্চয়পত্রের সার্টিফিকেট পেতে চান সেটা লিখুন।>> ব্রাঞ্চ হিসেবে জাতীয় স্টেডিয়াম ব্রাঞ্চ, ঢাকা ব্রাঞ্চ সিলেক্ট করে সাবমিট করুন। অথবা আপনি যেখান থেকে কিনেছেন সেই ব্রাঞ্চও সিলেক্ট করতে পারেন। মূলত সব সঞ্চয়পত্র সোনালী ব্যাংকের এই ব্রাঞ্চ থেকেই ইস্যু করা হয়। এরপরের ইন্টারফেসে ওকে সিলেক্ট করুন।
এরপর ৩ থেকে ৫ কর্মদিবস অপেক্ষা করলে আপনি আপনার কাঙ্খিত সঞ্চয়পত্রের সার্টিফিকেট ই-মেইলে পেয়ে যাবেন। এরপর চাইলে প্রিন্ট করে নিতে পারেন।
আরও পড়ুন কবে কখন শুরু হয়েছিল কাগজের ব্যবহার জানেন? আয়কর রিটার্ন কীভাবে ফাইল করবেন?কেএসকে/জিকেএস