বিনোদন

গানের ভেতরেই বেঁচে আছেন সঞ্জীব চৌধুরী

বাংলা সংগীত ও সংস্কৃতির এক ব্যতিক্রমী নাম সঞ্জীব চৌধুরীর জন্মদিন। যিনি গানকে শুধু বিনোদন নয়, বানিয়েছিলেন প্রতিবাদ, প্রেম আর বিবেকের ভাষা। বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী এই শিল্পী আজও বেঁচে আছেন তার কথায়, সুরে আর দর্শনে।

১৯৬৪ সালের এই দিনে হবিগঞ্জের মাকালকান্দিতে জন্ম নেন সঞ্জীব চৌধুরী। তিনি ছিলেন একাধারে কবি, গীতিকার, সুরকার, গায়ক, গল্পকার, নাট্যকার, সাংবাদিক এবং রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগ্রামী। খুব অল্প বয়সেই নিজের মেধা ও মননের স্বাক্ষর রাখেন তিনি।

১৯৭৮ সালে মাধ্যমিক এবং ১৯৮০ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় মেধাতালিকায় স্থান করে নেওয়া সঞ্জীব পড়ালেখার পাশাপাশি ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন।আরও পড়ুনএখন কেমন আছেন ইলিয়াস কাঞ্চনতারেক রহমানের দেশে ফেরার দিনে নায়ক মান্নার সঙ্গে ছবি ভাইরাল

ঢাকা কলেজে পড়ার সময় ছাত্র ইউনিয়নের মাধ্যমে সাম্যবাদী রাজনীতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে পড়েন তিনি। সেই রাজনৈতিক সচেতনতা পরবর্তীতে তার গান ও লেখায় গভীরভাবে প্রভাব ফেলে। সঞ্জীব চৌধুরীর গান তাই শুধু প্রেমের নয়, সমাজের অসংগতি, অন্যায় আর মানুষের ভেতরের লড়াইয়ের কথাও বলে।

ঢাকার পথে পথে গিটার কাঁধে গান গাওয়া এই মানুষটি কখনোই অর্থ-বিত্ত বা খ্যাতির মোহে পড়েননি। তিনি গেয়েছেন মানুষের জন্য, মানুষের বিবেক জাগানোর জন্য। তার নাম আজ একটি সময়ের সাক্ষী, একটি প্রজন্মের অনুভূতির প্রতিচ্ছবি।

মাত্র ৪৩ বছরের জীবনে তিনি বাংলা সংগীতকে উপহার দিয়েছেন অসংখ্য কালজয়ী গান। ‘আমি তোমাকেই বলে দেব’, ‘কিংবদন্তি’, ‘চল বুবাইজান’, ‘ইয়াসমিন’, ‘চাঁদের জন্য গান’, ‘কালা পাখি’, ‘সাদা ময়লা রঙিলা পালে’, ‘বাজি’, ‘নৌকাভ্রমণ’, ‘বায়োস্কোপ’, ‘সমুদ্রসন্তান’, ‘ভাঁজ খোলো’, ‘কথা বলব না’, ‘বয়স হলো ২৭’, ‘অচিন বৃক্ষ’, ‘জোছনাবিহার’, ‘মনে পড়ে’, ‘নষ্ট শহরে’, ‘হৃদয়ের দাবি রাখো’- এমন অসংখ্য গান আজও শ্রোতাদের হৃদয়ে গভীর দাগ কেটে আছে।

একজন মানুষের একটি গানও যেখানে অনেক সময় শ্রোতার মনে স্থায়ী জায়গা করে নিতে পারে না, সেখানে সঞ্জীব চৌধুরীর গান প্রজন্মের পর প্রজন্ম পেরিয়ে আজও প্রাসঙ্গিক, জীবন্ত ও শক্তিশালী।

 

এলআইএ