রাজধানীর গুলশান ও প্রগতি সরণির যানজট কমাতে বাড্ডার গুদারাঘাট থেকে শাহজাদপুর পর্যন্ত লেকপাড় সড়ক উদ্বোধন করা হয়েছিল। কিন্তু উদ্বোধনের আট বছরেও এ সড়ক সংস্কার করা হয়নি। এখন সড়কে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। অনেক জায়গায় গর্তে যানবাহনের চাকা আটকে যাচ্ছে। ছোট যানবাহনগুলো উল্টে দুর্ঘটনা ঘটছে। তারপরও সড়কটি সংস্কারে কোনো উদ্যোগ দিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ।
একইভাবে গুদারাঘাট থেকে হাতিরঝিল পর্যন্ত (দক্ষিণ বাড্ডা) সড়কে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এসব গর্তের কারণে সড়কে নিয়মিত যানজট সৃষ্টি হচ্ছে।
গুলশান লেকের পূর্বপাড়ে ওই সড়কটি নির্মাণ করেছিল রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। তবে এলাকাটি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) অঞ্চল-৩ এর আওতাধীন। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাজউক সড়কটি উদ্বোধনের পর আর খোঁজ রাখেনি। সড়ক যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ার বিষয়টি রাজউককে বারবার জানানো হলেও তারা তা ঠিক করেনি। অন্যদিকে, ডিএনসিসিও জানিয়েছে এ সড়কটি তাদের নয়। ফলে দুই সংস্থার ঠেলাঠেলিতে দীর্ঘদিন ধরে সড়কটি ব্যবহার করা যাচ্ছে না।
তবে ডিএনসিসির সংশ্লিষ্টরা জানান, গুলশান লেকের মালিকানা রাজউকের। তারাই লেকপাড়ে সড়ক নির্মাণ করেছিল। কিন্তু পরে আর তারা সড়কটি সংস্কার করেনি। এ নিয়ে দুই সংস্থার মাঝে অনেক দেনদরবার হয়েছে। বছরখানেক আগে রাজউক এ সড়ক রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব ডিএনসিসিকে দিয়েছে। এখন ডিএনসিসি সড়ক সংস্কারে দরপত্র আহ্বান করে তা চূড়ান্ত করেছে। শিগগির সড়কটি সংস্কার করা হবে।
রোববার (২০ জুলাই) সরেজমিনে দেখা যায়, দক্ষিণ বাড্ডা থেকে গুদারাঘাট হয়ে শাহজাদপুর পর্যন্ত লেকপাড় সড়কটির বিটুমিন উঠে গেছে। এর মধ্যে গুদারাঘাট থেকে শাহজাদপুর পর্যন্ত সড়কটির অবস্থা সবচেয়ে করুণ। প্রায় আড়াই কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই সড়কে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ব্যক্তিগত গাড়ি খুব কম চলছে।
পিকআপ, সিএনজি, রিকশা চলছে হেলেদুলে।
বাড্ডা গুদারাঘাট বাজার এলাকার বাসিন্দা আমিরুল ইসলাম বলেন, ঢাকার সবচেয়ে দর্শনীয় স্থান হাতিরঝিল ও গুলশান লেক এলাকা। অথচ এখানের একটি সড়ক বছরের পর বছর ভেঙে রয়েছে। গুলশানে ডিএনসিসির নগর ভবন থাকলেও তারা সড়কটি সংস্কার করছে না। অন্যদিকে রাজউকেরও কোনো খবর নেই। ফলে প্রতিদিন সড়কটিতে যাতায়াত করতে গিয়ে যাত্রীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
শাহজাদপুর থেকে পিকআপে মালামাল নিয়ে দক্ষিণ বাড্ডা যাচ্ছিলেন চালক উজ্জ্বল মিয়া। সড়কটি ভাঙার বিষয়ে উজ্জ্বল বলেন, সপ্তাহে অন্তত পাঁচ থেকে ছয়দিন ওই ভাঙা সড়কে যাতায়াত করতে হয়। প্রতিবারই সড়কে গাড়ির চাকা হেলেদুলে চলে। কখন যে উল্টে যায়, এ আতঙ্কে থাকি। বিশেষ করে অটোরিকশা প্রায়ই উল্টে পড়ে যেতে দেখি।
ডিএনসিসি সূত্র জানায়, ২০১৮ সালে গুলশান লেক উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ওই সড়কটি নির্মাণ করেছিল রাজউক। এর মধ্যে বাড্ডার গুদারাঘাট থেকে শাহজাদপুর অংশের দৈর্ঘ্য ২ দশমিক ৪০ কিলোমিটার, চওড়া প্রায় ৩০ ফুট। অন্যদিক, গুদারাঘাট থেকে দক্ষিণবাড্ডা সড়কটি ২০১৩ সালে হাতিরঝিল প্রকল্পের সঙ্গে উদ্বোধন করা হয়। এ সড়কটিও প্রায় ৩০ ফুট চওড়া।
জানতে চাইলে ডিএনসিসির অঞ্চল-৩ এর নির্বাহী প্রকৌশলী নুরুল আলম জাগো নিউজকে বলেন, এরইমধ্যে সড়কটি সংস্কারে ডিএনসিসি দরপত্র চূড়ান্ত করেছে। সড়কের পৃথক দুটি স্থানে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়কটি সংস্কার করা যাবে।
এমএমএ/এএমএ/জিকেএস