জাতীয়

‘একবার স্কুলটা দেখতে পারলে মনটা শান্ত হবে’

‘আমি অনেক দূর থেকে এসেছি, একবার খালি স্কুলটা দেখতে চাই। দেখতে পারলে মনটা শান্ত হবে।’ কথাগুলো বলছিলেন শুক্রবার (২৫ জুলাই) সকালে উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল গেটের সামনে আসা এক ব্যক্তি।

সকাল ১০টায় স্কুলের সামনে গিয়ে দেখা যায়, মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান ফটকসহ তিনটি গেট বন্ধ। প্রধান ফটকের সামনে ভিড় করছেন অর্ধশতাধিক মানুষ। রিকশা, মোটরসাইকেলযোগে আরও মানুষ আসছেন স্কুলটি দেখতে।

কেউ এসেছেন বন্ধু-বান্ধব নিয়ে, কেউ এসেছেন পরিবার নিয়ে। বিভিন্ন স্থান থেকে দাঁড়িয়ে কিংবা উঁকি দিয়ে পোড়া ভবনটি দেখার চেষ্টা তাদের।

মাইলস্টোন স্কুল দেখতে ঠাকুরগাঁও থেকে এসেছেন মাসুদ রানা। তার সঙ্গে আরও চারজন এসেছেন।

মাসুদ রানা বলেন, আমরা কি জায়গাটা দেখতে পারবো না? আমার এক আত্মীয়ের ছেলে এই স্কুলে পড়তো। সে সুস্থ আছে।

প্রধান ফটকের বাইরে গণমাধ্যমকর্মীদের অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।

প্রধান ফটকের ডান দিকে সরু গলি। এই গলির মাঝখানে ও শেষে স্কুলের দুটি গেট, এই দুটি গেটও বন্ধ। গেট দুটোতে উৎসুক জনতার ভিড়।

প্রধান ফটকের সামনে ফিরোজা বেগম নামের এক নারী বলেন, ‘আমি চাঁদপুর থেকে এসেছি। স্কুলটা একবার দেখতে চাই। বেশিক্ষণ থাকবো না। কিন্তু আমাকে ঢুকতেই দিচ্ছে না নিরাপত্তাকর্মীরা।’

উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টর থেকে এসেছেন নুরুল আমিন। সঙ্গে তার ১১ বছরের নাতি। নাতির বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন তিনি। পেছনের গেটে কথা হয় তার সঙ্গে। সেখানে ড্রেন নির্মাণ কাজ চলছিল।

এই ব্যক্তি বলেন, ‘আমি ঢাকায় ছিলাম না। গতকাল রাতে এসেছি। বাসা কাছে তাই দুর্ঘটনার স্থানটি দেখতে এসেছি।’

আরেক ব্যক্তি বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘটনাটি দেখেছি। বাউনিয়া এলাকা থেকে এসেছি। এসে দুঃখপ্রকাশ করেছি।’

স্কুলের ভেতরে পাঁচজন পুলিশ সদস্যকে বসে থাকতে দেখা যায়। তবে প্রধান ফটকের বাইরে পুলিশ সদস্যরা ছিল না। স্কুল সংলগ্ন গোলচত্বরে একাধিক পুলিশ সদস্যকে বসে থাকতেও দেখা গেছে।

পৌনে ১১টার দিকে বেশ কয়েকজনকে স্কুলে ঢুকতে দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন:

এবার অগ্নিদগ্ধ শিক্ষার্থী আইমানও চলে গেল ডিএনএ টেস্টে তিনদিন পর খোঁজ মিললো ওহির মায়ের পোড়া শরীর নিয়ে বের হওয়া সেই মাহতাবের মৃত্যু

তবে কোনো গণমাধ্যমকর্মীকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। গেটের ভেতরে থাকা কমিউনিটি পুলিশের এক সদস্য বলেন, ‘নিষেধ আছে। আইএসপিআরের অনুমতি নিয়ে আসতে হবে।’

এর আগে গত মঙ্গলবার স্কুলটিতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন দুই উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ও সিআর আবরার। তখন তাদের সঙ্গে ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমসহ প্রেস উইংয়ের আরও তিন সদস্য। ৯ ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় তারা সেখান থেকে বেরিয়ে আসেন।

এদিকে, মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দিয়াবাড়ি স্থায়ী ক্যাম্পাসের বিদ্যালয় ভবনে আকস্মিকভাবে বিমানবাহিনীর বিমান ভূপাতিত হওয়ার ঘটনায় হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা নির্ণয় করে ঠিকানাসহ তালিকা প্রস্তুত করতে একটি কমিটি গঠন করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।

এসএম/এসএনআর/এমএস