শ্রেণিকক্ষে মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করছে দক্ষিণ কোরিয়া। বৃহস্পতিবার দেশটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দক্ষিণ কোরিয়া সারাদেশের স্কুলগুলোতে শ্রেণিকক্ষে মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করার জন্য একটি বিল পাস করেছে। অপ্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার রোধ করার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবেই এমন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। খবর এএফপির।
শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্মার্টফোন আসক্তি নিয়ে উদ্বেগের কথা উল্লেখ করে দক্ষিণ কোরিয়া সম্প্রতি স্কুলে ইলেকট্রনিক ডিভাইসের ওপরও কঠোর নিয়ম আরোপের চেষ্টা করছে।
দেশটির জাতীয় পরিষদের এক মুখপাত্র এএফপিকে বলেন, আগামী বছরের মার্চ মাসে এই বিলটি কার্যকর হবে। এই বিলটিতে শ্রেণিকক্ষে মোবাইল ফোনসহ স্মার্ট ডিভাইস নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বুধবার বিলটি পাস হয়েছে।
এর আগে অস্ট্রেলিয়া এবং নেদারল্যান্ডসসহ অনেক দেশই এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে। সিউলের শিক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে যে, এই আইনের মাধ্যমে বিশেষ শিক্ষার প্রয়োজনে বা শিক্ষাগত উদ্দেশ্যে সহায়ক সরঞ্জাম ছাড়া শ্রেণিকক্ষে স্মার্টফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হবে।
এই পদক্ষেপের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শেখার অধিকার এবং শিক্ষকের শিক্ষাদান কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সমর্থন করার অভ্যাস গড়ে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিরোধী দল পিপল পাওয়ার পার্টির সদস্য চো জং-হুনসহ বিলটি উত্থাপনকারী আইনপ্রণেতারা বলছেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের উদ্বেগের মধ্যে বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরে বিতর্কিত ছিল।
কিন্তু দেশটির জাতীয় মানবাধিকার কমিশন সম্প্রতি তাদের অবস্থান পরিবর্তন করেছে। বলা হচ্ছে, শিক্ষাগত উদ্দেশ্যে ফোন ব্যবহারের ওপর সীমা নির্ধারণ অধিকার লঙ্ঘন করে না কারণ এটি শিক্ষার্থীদের শেখার এবং মানসিক সুস্থতার উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
বিলটি উত্থাপনকারী একটি নথিতে আইনপ্রণেতারা বলেছেন, এই পটভূমিতে, ‘স্কুলে স্মার্ট ডিভাইস ব্যবহারের নিয়ম স্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত করে’ সামাজিক দ্বন্দ্ব কমানোর জন্য আইনটির প্রয়োজন ছিল।
কিন্তু বামপন্থি জিনবো পার্টিসহ বিভিন্ন গোষ্ঠী এর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। তারা বলছে, এই আইন শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল অধিকার এবং শিক্ষার অধিকার লঙ্ঘন করবে। এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই পদক্ষেপ কিশোর-কিশোরীদের নিজেদেরই দায়িত্বশীল সিদ্ধান্ত নিতে শেখা থেকে বিরত রাখবে এবং ডিজিটাল পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করবে।
টিটিএন