জাতীয়

বিতর্কিত ভোট যাচাই: তদন্ত কমিশনে ইসির তিন কর্মকর্তা সংযুক্ত

সর্বশেষ তিন ‘বিতর্কিত’ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ওঠা অভিযোগ পর্যালোচনা এবং ভবিষ্যতে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে গঠিত তদন্ত কমিশনকে সহায়তা দিতে সেখানে তিন কর্মকর্তাকে সংযুক্ত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ইসির সিনিয়র সহকারী সচিব নাজমুল কবীর স্বাক্ষরিত এক চিঠি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

চিঠি থেকে জানা যায়, ইসি সচিবালয়ের ১৩ আগস্টের স্মারক অনুযায়ী চার কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এর মধ্যে তিনজনকে স্থায়ীভাবে তদন্ত কমিশনে সংযুক্তির অনুরোধ করা হলেও পরে নতুনভাবে তিন কর্মকর্তাকে সংযুক্ত করা হলো।

প্রথমে প্রস্তাবিত কর্মকর্তারা ছিলেন নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান, ইসি সচিবালয়ের উপ-সচিব মো. রফিকুল ইসলাম ও মোহাম্মদ এনামুল হক। পরে তাদের পরিবর্তে নতুন যাদের সংযুক্ত করা হয়েছে তারা হলেন উপ-সচিব মো. আব্দুল মমিন সরকার, মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন ও মো. হেলাল উদ্দিন খান।

তদন্ত কমিশনটি দ্য কমিশন অব ইনকোয়ারি অ্যাক্ট, ১৯৫৬ অনুযায়ী গঠিত হয়েছে। যার দায়িত্ব হলো অতীত নির্বাচনে ওঠা অভিযোগগুলো যাচাই-বাছাই করে ভবিষ্যতের নির্বাচনী প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ, অংশগ্রহণমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য করতে প্রয়োজনীয় সুপারিশ করা।

আরও পড়ুনসাবেক সিইসিদের পরিণতি স্মরণ করিয়ে দেওয়া হলো বর্তমান সিইসিকেশান্তিপূর্ণ নির্বাচনে সহায়তা করতে চায় যুক্তরাজ্য: সারাহ কুকনির্বাচনে ১৫০ পর্যবেক্ষক পাঠাতে চায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির দশম নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ১৫৩টিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য হন। সেই সংসদকে ‘বিনা ভোটের সংসদ’ আখ্যা দেয় ভোট বর্জন করা বিএনপি। তখন কাজী রকিব উদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন ইসিতে চার নির্বাচন কমিশনার ছিলেন সাবেক অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ আবু হাফিজ, সাবেক যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ আব্দুল মোবারক, অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাবেদ আলী ও অবসরপ্রাপ্ত জেলা দায়রা জজ মো. শাহনেওয়াজ।

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের একাদশ জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিলেও ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ উঠে। অধিকাংশ ভোট আগের রাতে হয়ে যাওয়ার অভিযোগ আনা বিএনপি ওই নির্বাচনে মাত্র সাতটি আসনে জয় পায়। পরে নির্বাচনটির নাম হয় ‘রাতের ভোট’। কে এম নূরুল হুদা নেতৃত্বাধীন তৎকালীন ইসির সদস্য ছিলেন সাবেক সচিব রফিকুল ইসলাম, সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব তালুকদার, অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ কবিতা খানম ও অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহাদৎ হোসেন চৌধুরী।

২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারিতে বিএনপি ও সমমনাদের বর্জনে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন হয়। তবে তা অংশগ্রহণমূলক দেখাতে শরিক ও জাতীয় পার্টির জন্য আসন ছেড়ে দেয় আওয়ামী লীগ। নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় নৌকার প্রার্থীদের সঙ্গে দলের বিদ্রোহীদের। এ ভোটের নাম হয় ‘ডামি নির্বাচন’। তা পরিচালনা করে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন ইসি। এতে চার নির্বাচন কমিশনার ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর ও আনিছুর রহমান, অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ রাশেদা সুলতানা এবং অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহসান হাবীব খান।

এমওএস/একিউএফ/এএসএম