নরসিংদীর বেলাবোতে যাত্রীবাহী বাস ও মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ১৩ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো ৯ জন। রোববার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বেলাবো দড়িকান্দি নামক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত সবাই মাইক্রোবাসের যাত্রী। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ঘাতক বাসচালকের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ।নিহতরা হলেন- মানিক মিয়া (৫৫), তার স্ত্রী মাফিয়া খাতুন (৪৫), শিশু পুত্র অন্তর আলম (১২), মো. হাসান (৪০), তার স্ত্রী হালিমা খাতুন (৩০), পুত্র ইসান (১০), হালিমার বোন ঝুমা খাতুন (১৫), সাধনা খাতুন (৪০), হিরা মিয়া (৪৫), নাজমুল (৩০) ও মাইক্রোবাসের ড্রাইভার মো. সাঈদ (৫০)। এছাড়া ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর আহত শরমিন (১৮) মারা গেছেন।আহতদের মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে শিশু রাব্বি (১), ফিরুজা বেগম (৩৫), তার ছেলে মারুফ (৭)। পুলিশ ও এলাকাবাসী জানিয়েছে, সকালে ঢাকার কামরাঙ্গী চর থেকে ১৪ জন যাত্রী নিয়ে কিশোরগঞ্জের নিকলী থানার ছাতীর চর গ্রামে যাচ্ছিল একটি মাইক্রোবাস। মাইক্রোবাসটি ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বেলাবো দড়িকান্দি বাজারে পৌঁছালে বিপরীতদিক থেকে আসা আগ্রদূত পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস অপর একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে ওভারটেক করার সময় মাইক্রোবাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এসময় মাইক্রোবাসটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থালেই ১৩ জন মারা যান। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর একজন মারা যান। আহত হন কমপক্ষে ৯ জন। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ, দমকল বাহিনী ও স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে ভৈরবসহ আসপাশের হাসপাতালে পাঠায়। দুর্ঘটনার পর ঢাকা-সিলেট মসহাসড়কে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় এক ঘণ্টা পর দুর্ঘটনা কবলিত যানবাহন সড়িয়ে নিলে যানচলাচল স্বাভাবিক হয়। খবর পেয়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. মোজ্জাম্মেল হক ও উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা উম্মে হাবিবা, বেলাবো থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ প্রসাশনের ঊর্ধ্বতন ব্যক্তিরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। প্রতক্ষ্যদর্শীরা স্থানীয় চেয়ারম্যান মোসলেহ উদ্দিন খান জানান, অগ্রদূত পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস অপর একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে ওভারটেক করার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাইক্রোবাসটির ওপর উঠিয়ে দেয়। এতে মাইক্রোবাসের ১৩ যাত্রী মারা যান। ভৈরব হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, নিহতের স্বজনদের আবেদনের প্রেক্ষিতে দুপুরে ১৩ জনের মরদেহ ময়না তদন্ত ছাড়াই স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাস ও মাইক্রোবাসটিকে আটক করা হয়েছে। তবে বাসের চালক ও তার সহকারী পালিয়েছেন। এ ঘটনায় বেলাবো থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।নরসিংদীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোজাম্মেল হক বলেন, দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যেই একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে নিহতদের মরদেহ দাফন-কাফনের জন্য জনপ্রতি পাঁচ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়েছে। সঞ্জিত সাহা/এফএ/আরএআর/এমএস