`মোদের গরব মোদের আশা, আ-মরি বাংলা ভাষা` বিখ্যাত এই গানটির রচয়িতা ব্যারিস্টার অতুল প্রসাদ সেনের বাড়িটি আজ ভূমিদস্যুদের দখলে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা এবং সঠিক তদারকির অভাবে তার বাড়িটি আজ বেদখল হয়ে গেছে। অতি সম্প্রতি তার হাতে প্রতিষ্ঠিত পঞ্চপল্লী গুরুরাম উচ্চ বিদ্যালয়ে তার একটি মুরাল নির্মাণ করা হলেও তার পৈত্রিক ভিটাটি আজ নিগৃহীত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। আর এই সুযোগে কতিপয় স্থানীয় প্রভাবশালী ভূমিদস্যুরা বাড়িটি দখল করে নিয়েছে।জানা গেছে, অতুল প্রসাদ সেন পেশায় আইনজীবী হলেও সংগীতের প্রতি তার আগ্রহ ছিল প্রবল। তাই আইন পেশার পাশাপাশি প্রচুর গান রচনা করেছেন এবং প্রত্যেকটি গানের সুর দিয়েছেন তিনি নিজেই। যার সৃষ্টি মানুষের মনকে আন্দোলিত করেছে। তার এ অমর সৃষ্টি ৫২’র ভাষা আন্দোলকে ত্বরান্বিত করেছে। তার সৃষ্টি ২০৮টি গানের মধ্যে দেশের প্রতি ভালোবাসা, মানুষের প্রতি শ্রদ্ধার কথা সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে। এমনি একটি গান ‘মোদের গরব মোদের আশা, আ-মরি বাংলা ভাষা’ যা শুধু ভাষা আন্দোলনই নয়, ৭১’র মুক্তিযুদ্ধকেও করেছে বেগবান।১৮১৭ সালের ২০ অক্টোবর জন্মগ্রহণের পর অতুল প্রসাদ সেন বড় হয়েছেন দাদাবাড়ি নড়িয়া উপজেলার বিঝারী ইউনিয়নের মগর গ্রামে। এখানেই কেটেছে তার শৈশব ও কৈশোর। আর লন্ডনে ব্যস্ত সময় কেটেছে ব্যারিস্টারি পড়া নিয়ে। এর মধ্যে চলেছে সংগীতের চর্চা।সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অতুল প্রসাদ সেনের স্মৃতি বিজড়িত বাড়িটি রয়েছে অন্যের দখলে এবং তার মৃত্যুর পরে নষ্ট হয়ে গেছে তার বাড়ির সকল স্মৃতিচিহ্ন। অত্যন্ত আনন্দের বিষয়, দীর্ঘদিন পরে হলেও তার হাতে প্রতিষ্ঠিত পঞ্চপল্লী গুরুরাম উচ্চ বিদ্যালয়ে তার একটি মুরাল নির্মাণ করেছেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। কিন্তু তার স্মৃতি বিজড়িত বাড়িটি রয়ে গেছে ভূমিদস্যুদের হাতে।১৯৩৪ সালের ২৬ আগস্ট কলকাতার লখনৌতে অতুল প্রসাদ সেন পরলোক গমন করলেও তার অমর সৃষ্টি নতুন প্রজন্মের কাছে রয়েছে গবেষণার লক্ষ্যবস্তু হিসেবে। যা বাংলা সাহিত্যে অতুল প্রসাদ সেনের অবদান অবিস্মরণীয় হয়ে আছে। পাশাপাশি সরকার তার স্মৃতিবিজড়িত বাড়িটি ভূমিদস্যুদের হাত থেকে উদ্ধার করে সাহিত্য চর্চার কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে নির্মাণ করেন সে দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় জনগণ।এ ব্যাপারে বিঝারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল রাজ্জাক হাওলাদার বলেন, প্রখ্যাত গীতিকার ও সুরকার অতুল প্রসাদ সেন এর বাড়িটি অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে তা আমি আপনাদের কাছেই শুনলাম। সরকার যদি বাড়িটি রক্ষণাবেক্ষণ করেন তাহলে ভালো হয়। শরীয়তপুর জেলা প্রসাশক মাহমুদুল ইসলাম খান বলেন, এতো বড় একজন গুণী ব্যক্তির বাড়িটি ভূমিদস্যুরা দখল করে নেবে তা মোটেই মেনে নেয়া যায় না। আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। ছগির হোসেন/এসএস/পিআর