কে হচ্ছেন শরীয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, কে ধরছেন জেলা আওয়ামী লীগের হাল, কে হবেন নৌকার প্রকৃত কাণ্ডারী এ নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই চলছে জেলার সর্বত্র মানুষের মাঝে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা। বিত্তবানদের ড্রয়িংরুম থেকে শুরু করে চায়ের দোকান পর্যন্ত চলছে এর জল্পনা-কল্পনা। জেলা আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ চৌদ্দ বছর পর শরীয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের দিনক্ষণ ঘোষণা করা হয়েছে। প্রতি তিন বছর অন্তর কমিটি হওয়ার কথা থাকলেও দীর্ঘ চৌদ্দ বছর হয়ে গেলেও আর কোনো সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়নি। দীর্ঘদিন যাবৎ সম্মেলন না হওয়ায় ঝিমিয়ে পড়েছে জেলা আওয়ামী লীগ। স্থবির হয়ে পড়েছে তাদের দলীয় কার্যক্রম। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিভিন্ন পদে থাকা নেতাদের কাছে মূল্যহীন হয়ে পড়েছে তৃনমূল আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা। আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি শরীয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম শরীয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে এ সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করেছেন। দীর্ঘ চৌদ্দ বছর পর শরীয়তপুর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের দিনক্ষণ ঘোষণা হওয়ায় চাঙ্গা হয়ে উঠেছে জেলা আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাকর্মীরা। তাদের মধ্যে বইছে উৎসবের আমেজ। জেলা কমিটিতে জায়গা করে নিতে ইতোমধ্যে দৌঁড়ঝাপ শুরু হয়েছে নেতাকর্মীদের। জাতীয় নেতা, সাবেক পানিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকের উপস্থিতিতে ২০০৩ সালের জুন মাসে জাজিরায় সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সম্মেলনে আব্দুর রব মুন্সীকে সভাপতি ও অনল কুমার দেকে সাধারণ সম্পাদক করে ৬১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি করা হয়েছিল। নতুন করে কমিটি ঘোষণার সংবাদে স্থানীয় নেতাকর্মীরা নতুন কমিটিতে ঢোকার জন্য লবিং গ্রুপিং শুরু করেছে। জেলা আওয়ামী লীগের নতুন কমিটিতে ঢোকার জন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য ও সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল ফজল মাস্টার, জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি ও শরীয়তপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র আব্দুর রব মুন্সী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক ইকবাল হোসেন অপু, জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোবারক আলী সিকদার, জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ- সভাপতি নুর মোহাম্মদ কোতোয়াল, জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি সাবেদুর রহমান খোকা সিকদার, অ্যাডভোকেট সুলতান মাহামুদ সীমন ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অনল কুমার দে চেষ্টা ও তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন। পাশাপাশি সাধারণ সম্পাদক হিসেবে জেলা কমিটিতে ঢোকার জন্য জেলা আওয়ামী লীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ও নড়িয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম ইসমাইল হক, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ মো. দেলোয়ার হোসেন তালুকদার, শরীয়তপুর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও শরীয়তপুর সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি মো. নুরুল আমিন কোতোয়াল ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ কমিটির সহ-সম্পাদক ও শরীয়তপুর পৌরসভার মেয়র মো. রফিকুল ইসলাম কোতোয়ালের জোর তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন। আর সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে শরীয়তপুর সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. আলমগীর হোসেন হাওলাদার এবং আবুল কালাম আজাদ (আবুল পাহার) এর নাম জোড়ালোভাবে শোনা যাচ্ছে।তৃণমূল নেতারা বলেন, আমরা চাই বঙ্গবন্ধুর মতো আদর্শবান নেতা। যারা আওয়ামী লীগ আদর্শ প্রতিষ্ঠার জন্য জীবন বাজি রেখে কাজ করবেন। দলের সর্বস্তরের লোকই শুধু নয় জনগণের সেবক হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার জন্য যিনি সর্বদা লড়াই করে যাবেন এমন নেতৃত্ব আমাদের কাম্য।এ ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অনল কুমার দে বলেন, দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী আগামী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলনে অযোগ্যদের স্থান পাওয়ার কোনই সুযোগ নেই। কারণ আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন ডিজিটাল বাংলাদেশ, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের সোনার বাংলা গড়ার জন্য অবশ্যই শরীয়তপুরবাসীকে নির্ভীক, যোগ্য, সৎ এবং নিষ্ঠাবান নেতাদের নিয়েই একটি কমিটি গঠন করা হবে এ বিষয়ে আমি দৃঢ়ভাবে আশাবাদী। ছগির হোসেন/এসএস/আরআইপি