দেশজুড়ে

ধুলায় ধূসর টাঙ্গাইল!

ঘর থেকে বের হলেই ধুলা। শহর থেকে প্রত্যন্ত গ্রাম সর্বত্রই এখন যেন ধুলার রাজত্ব চলছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ধুলার কারণে মানবদেহ চরম ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি অর্থের বিরাট একটা অংশ অপচয় হচ্ছে। যা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলছে।ঘরের দরজা-জানালা খুললেই পর্দায় ধুলা, পরিষ্কার জামা কাপড়ে ধুলা পড়ে, রাস্তায় বের হলে নাক, মুখ, চোখ দিয়ে প্রবেশ করে ধুলা। প্রকৃতি যেন শুধু ধুলা আর ধুলা।শুধু জামা কাপড় নয়, মাথার চুল থেকে পা পর্যন্ত ধুলার প্রলেপ। আর এ প্রলেপ পরিষ্কার করতে পরিধেয় বস্ত্রের জন্য লাগবে সাবান-সোডা। নিজের জন্য ফেসওয়াস, শ্যাম্পু এবং লোশনসহ নানা কসমেটিক্স সামগ্রী। এক একটি পরিবারে ধুলার কারণে প্রতিদিন গুণতে হচ্ছে কমপক্ষে তিন’শ থেকে চার’শ টাকা। এজন্য ধুলায় আটকে আছে আমাদের অর্থনীতির চাকা।ধুলার প্রভাবে মানবদেহে দেখা দিচ্ছে বিভিন্ন সংক্রমণ রোগ। এ সম্পর্কে টাঙ্গাইলের মেডিসিন ও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সুরঞ্জিত কুমার মন্ডল বলেন, ধুলার কারণে মানবদেহ ব্রংকাইটিস, এনার্জিক রাইনাইটিস, নিউমোনিয়া, টনসিলাইটিস ও অ্যাজমাসহ জটিল রোগে আক্রান্ত হয়।টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. মাসুদুজ্জামান বলেন, ধুলার কারণে সব চেয়ে ঝুঁকিতে আছে শিশুরা। শ্বাসকষ্টজনিত রোগ, পেট ফাঁপা, পেট ব্যথা, চোখের ইনফেকশন, নেত্রনালী বন্ধ হয়ে চোখে ঝাপসা দেখাসহ বহুবিদ রোগে আক্রান্ত হয় শিশুরা। এক্ষেত্রে শিশুদের ধুলা থেকে সাবধান রাখার পরামর্শ দেন তিনি।ধুলার কারণে যে শুধু মানুষের ক্ষতি হচ্ছে তা নয় বিরূপ প্রভাব পড়ছে পরিবেশেও। গাছ-পালায় ধুলার প্রলেপ পড়ায় সালোকসংশ্লেষণ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলছে। খাদ্যাভাবে মরে যাচ্ছে গাছ-পালা। কমে যাচ্ছে অক্সিজেন তৈরি প্রক্রিয়া। পশু পাখির উপর পড়ছে এর বিরূপ প্রভাব।বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির উচ্চতর গবেষণা কর্মকর্তা সোমনাথ লাহেড়ী জানান, বাতাসে বহনকারী ধুলাতে আছে নাইট্রোজেন, কার্বন, কার্বন মনো-অক্সাইড, সিসা, এ্যামোনিয়াসহ ক্ষতিকর পদার্থ। যার প্রভাবে পরিবেশ ও মানবদেহে মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে।ধুলা থেকে পরিত্রাণ পেতে প্রয়োজন সমন্বিত উদ্যোগ। পরিকলপনা আর সমন্বিত উদ্যোগ নিয়ে এ সমস্যার সমাধান করা হবে এমনটাই আশা করেন ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষ।এসএস/পিআর