আগামী ১৫ মে-এর মধ্যে সুন্দরবন ধ্বংসকারী বিদ্যুৎ প্রকল্প বন্ধের জন্য সরকারকে সময় দিয়েছেন তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ।রোববার বিকেল ৩টায় বাগেরহাটের কাটাখালীতে জনযাত্রার সমাপনী জনসমাবেশে তিনি সরকারকে এসময় বেধে দেন।তিনি আরও বলেন, এই সময়ের মধ্যে তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা কমিটির নেতৃৃবৃন্দ সরকারের সঙ্গে বসে এ প্রকল্প ক্ষতির বিষয়টি আবারও তুলে ধরে তা বন্ধ করার প্রস্তাব দেবে। সরকার যদি তাদের এই নায্য দাবি মেনে না নেয় তাহলে সারাদেশ থেকে লংমার্চের মতো কর্মসূচি দিয়ে ঢাকায় প্রতিবাদ সমাবেশের মতো বৃহৃৎ আন্দোলন করা হবে।তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি বাগেরহাটের আহ্বায়ক রণজিৎচট্টপধ্যায়ের সভাপতিত্বে সুন্দরবনমুখী জনযাত্রার সমাপনি সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন, গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বায়ক জোনায়েদ সাকি, সিপিবির কেন্দ্রীয় নেতা রহিন হোসেন প্রিন্স, বাসদের কেন্দ্রীয় নেতা বজলুর রশীদ ফিরোজ, রাজেকুজ্জমান রতন, ইউসিএলবির সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু, বিপ্লবী ওয়াকার্স পার্টির সভাপতি সাইফুল হক প্রমুখ।এর আগে বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে শুরু হওয়া বাগেরহাট অভিমুখী `জনযাত্রা` নামে লংমার্চ রোববার দুপুরে বাগেরহাটে পৌঁছায়। বাগেরহাট শহরের দাসপাড়া মোড়ে মোটর শোভাযাত্রা থামার পর ব্যানার ও খণ্ড খণ্ড প্রতিবাদী মিছিল শহরে প্রবেশ করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে সমাবেশে মিলিত হয়। এখানে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, সুন্দরবনের কাছে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র হলে প্রায় ১০ লক্ষ মানুষের জীবিকা হারাবে। এটির প্রভাবে উপকূলের ৪ কোটি মানুষের জীবন ও সম্পদ ভয়াবহ হুমকির মুখে পড়বে। চার কোটি মানুষের বিনিময়ে ১৩শ মেঘাওয়াট বিদ্যুৎ হতে পারে না। সরকার বাংলাদেশকে অরক্ষিত করে ভয়াবহ এই প্রকল্প করছে আমরা কোনোভাবেই মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশকে অরক্ষিত হতে দিতে পারি না।তিনি বলেন, সুন্দরবন বিনাশী এই কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে জনযাত্রার এই কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে, যতদিন না সুন্দরবন বিনাশী প্রকল্প বাতিল হয়, যতদিন না বঙ্গোপসাগর নিরাপদ না হয়। যত দিন না বাংলাদেশের মানুষের উপর বাংলাদেশিদের কর্তব্য প্রতিষ্ঠা না হয়। যে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য সারাদেশের ভারসাম্য রক্ষা করছে, সেই সুন্দরবন এখন বাংলাদেশ ও ভারতের মুনাফাখোরদের হাতে খুন হতে চলেছে। জনগণকে নিয়েই আমাদের আন্দোলন-আমরা সেই আন্দোলনে মানুষের অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছি। এরপরও সরকার সুন্দরবন বিনাশী এ প্রকল্প থেকে সরে না আসলে কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।জনসভায় বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক সংগঠনের নেতারা এবং ছাত্র-শিক্ষক ও পরিবেশবিদরা অংশ নেন। শওকত বাবু/এমএএস/আরআইপি