কানাডায় খালিস্তানি আন্দোলনের নেতা হরদীপ সিং নিজ্জার হত্যার তদন্তে সহযোগিতা করতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এই বিতর্কে বিবদমান দুই পক্ষের সঙ্গেই ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখছে ওয়াশিংটন। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, তারা এ বিষয়ে ‘জবাবদিহিতা’ নিশ্চিত করতে চান।
গত শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা জবাবদিহিতা দেখতে চাই। তদন্তের গতি ঠিকমতো চলা আর তা ফলপ্রসূ হওয়া গুরুত্বপূর্ণ। আমরা আশা করবো, আমাদের ভারতীয় বন্ধুরাও এই তদন্তে সহযোগিতা করবে।
আরও পড়ুন>> ‘বন্ধু থেকে শত্রু’, নেপথ্যে কি শুধুই শিখ নেতার হত্যাকাণ্ড?
এদিন অভিযোগের বিশদ বিবরণ না দিয়ে ব্লিঙ্কেন বলেন, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দমনপীড়নের ঘটনাগুলো অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখে যুক্তরাষ্ট্র।
মার্কিন বিবৃতিটি এমন সময় দেওয়া হয়েছে, যখন ভারত-কানাডা সম্পর্ক একেবারে তলানিতে নেমে এসেছে। নয়াদিল্লি কানাডীয়দের জন্য ভিসা পরিষেবা স্থগিত করেছে। তার আগে ঘটেছে পাল্টাপাল্টি কূটনীতিক বহিষ্কারের ঘটনাও।
আরও পড়ুন>> ভারত-কানাডা বিরোধ নিয়ে শঙ্কায় পশ্চিমারাও
কানাডার অভিযোগ, নিজ্জার হত্যাকাণ্ডে ভারত সরকারের এজেন্টরা জড়িত ছিল। নয়াদিল্লি অবশ্য এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।
ভারত জড়িত থাকার অভিযোগগত ১৮ সেপ্টেম্বর কানাডার হাউজ অব কমন্সের সভায় প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেন, হরদীপ সিং হত্যাকাণ্ডে ভারত সরকারের সংশ্লিষ্টতার ‘বিশ্বাসযোগ্য’ প্রমাণ খুঁজে পেয়েছে কানাডার গোয়েন্দা সংস্থা।
ট্রুডোর এ মন্তব্যের পর কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানি জোলি সাংবাদিকদের জানান, এ ঘটনার জেরে পবন কুমার নামে একজন ভারতীয় কূটনীতিককে বহিষ্কার করা হয়েছে। ওই ব্যক্তি ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা র-এর সদস্য বলে দাবি করা হয়েছে।
তবে নিজ্জার হত্যাকাণ্ডে ভারত সরকার জড়িত থাকার গুরুতর এই অভিযোগকে ‘মনগড়া’ এবং ‘উদ্দেশ্য প্রণোদিত’ বলে নাকচ করে দিয়েছে নয়াদিল্লি।
আরও পড়ুন>> কানাডীয়দের ভিসা দেওয়া বন্ধ করলো ভারত
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী টুইট করে লিখেছেন, এই ধরনের ভিত্তিহীন অভিযোগ খালিস্তানি সন্ত্রাসী ও উগ্রপন্থিদের ওপর থেকে দৃষ্টি ঘুরিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা। যারা ভারতের সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতার প্রতি হুমকি, তাদের কানাডায় আশ্রয় দেওয়া হচ্ছে।
এরপর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ডেকে পাঠায় দিল্লিতে কানাডার রাষ্ট্রদূত ক্যামেরুন ম্যাকেকে। এসময় দেশটির এক জ্যেষ্ঠ কূটনীতিককে পাঁচ দিনের মধ্যে ভারত ছাড়তে নির্দেশ দেওয়া হয়।
সূত্র: ডয়েচে ভেলে, দ্য গার্ডিয়ানকেএএ/