চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার সন্তোষপুর-আন্দুলবাড়ীয়া সড়কে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে গণডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। সড়কে বেরিকেড দিয়ে প্রায় ২০-৩০ যানবাহনে ঘণ্টাব্যাপী তাণ্ডব চালায় ডাকাত সদস্যরা।
Advertisement
বৃহম্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ঘণ্টাব্যাপি সন্তোষপুর-আন্দুলবাড়ীয়া সড়কের জাহান মাল্টিপারপাস কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেডের অদূরে পুলিশ বক্সের কাছে এ ঘটনা ঘটে। এসময় গাড়িচালকসহ কয়েকজনকে কুপিয়ে জখম করা হয়। পরে নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার লুট করে পালিয়ে যায় ডাকাত দল।
ডাকাতদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে জখম ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার দত্তনগর গ্রামের বাসিন্দা ট্রাকচালক আব্দুল ওয়াহেদ বলেন, ‘রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু থেকে ট্রাক নিয়ে জীবননগর হয়ে বাড়ি ফিরছিলাম। সন্তোষপুর সড়কে পুলিশ বক্সের কাছে পৌঁছালে দেখতে পাই সড়কের ওপর খেজুর গাছ ও বিদ্যুতের পোলসহ ট্রলি আড়াআড়ি করে রাখা রয়েছে। গাড়ি থামাতেই ১৫-১৬ মুখোশধারী আমাকে রাম দা দিয়ে পিঠে ও গলাই কোপ মারে। আমার হেল্পার রাজুকেও মারধর করে। আমার কাছে থাকা ট্রাকের ভাড়া বাবদ ১৫ হাজার টাকা তারা ছিনিয়ে নেয়। এই অবস্থাতেই বাড়ি ফিরেছি। এখানেই চিকিৎসা নেব।‘
বগুড়ার শান্তাহারের বাসিন্দা রুমন নামের যুবক বলেন, কাজ শেষ করে ট্রাকে করে দর্শনা রেলস্টেশনে যাচ্ছিলাম। এসময় ‘সড়কের ওপর বেরিকেড দিয়ে ট্রাক, আলমসাধু, পাখিভ্যান, মিশুক, মোটরসাইকেলসহ প্রায় ২০-৩০ টির মতো গাড়ি থামিয়ে গণডাকাতি হয়। তারা অনেককে কুপিয়েছে, বেধড়ক পিটিয়েছে। আমাকে রামদার উলটো পিট দিয়ে মারধর করে আমার কাছ থেকে নগদ ৭ হাজার টাকাসহ মানিব্যাগ ছিনিয়ে নিয়েছে। এমনকি মহিলা যাত্রীদেরও বেধড়ক পিটিয়ে তাদের থেকে হনা ও নগদ টাকা নিয়েছে।’
Advertisement
এদিকে, রাতেই জীবননগর উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একজন ভুক্তভোগী চিকিৎসা নিয়েছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। রাত ২টা পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল ও অন্যান্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কেউ চিকিৎসা নেননি। তবে বেশিরভাগ ভুক্তভোগী ঘটনাস্থল থেকেই নিরাপদস্থানে চলে গেছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে কয়েকজন ভুক্তভোগীর মতে নারীসহ অন্তত ১০-১৫ জনকে পিটিয়ে ও কুপিয়েছে ডাকাত সদস্যরা।
ঘটনাস্থলটি শাহাপুর পুলিশ ক্যাম্পের আওতাধীন। এ বিষয়ে শাহাপুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই মনির তরফদারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন ব্যস্ত আছি। অভিযান চলছে। বিস্তারিত কিছু পরে জানানো হবে। প্রায় ঘন্টাখানেক পর কল করা হলে তিনি আর রিসিভ করেননি।
জীবননগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম জাবীদ হাসানকে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
চুয়াডাঙ্গা সহকারী পুলিশ সুপার (দামুড়হুদা সার্কেল) জাকিয়া সুলতানা বলেন, কোনো গণডাকাতির ঘটনা ঘটেনি। কয়েকজনকে কুপিয়ে আহত করে টাকা-পয়সা নিয়ে গেছে বলে জেনেছি। অপরাধীদের ধরতে পুলিশ মাঠে নেমেছে।
Advertisement
হুসাইন মালিক/এএইচ/এমএস