যাত্রী ছাউনিতে মাংসের দোকান
সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক আর বাস মালিকদের কারণে নিয়মিত ভোগান্তিতে পড়তে হয় সাধারণ যাত্রীদের। যানজট ঠেলে নিজ গন্তব্যে পৌঁছাতে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করতে হয় তাদের। তাই তাদের বিশ্রামের জন্য রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে তৈরি করা হয়েছে যাত্রী ছাউনি। তবে বরাবরের মতো এই সুখও কপালে জুটছে না সাধারণ যাত্রীদের। পান-সিগারেটের দোকানের পাশাপাশি এখন মাংসও বিক্রি করা হচ্ছে রাজধানীর যাত্রী ছাউনিগুলোতে।
সরেজমিনে রাজধানীর মৌচাক মোড়ের যাত্রী ছাউনিতে গিয়ে এই চিত্র দেখা গেছে। মৌচাক মার্কেটের বিপরীতে ফরচুন শপিং মলের পাশেই যাত্রী ছাউনিটি। ওই ছাউনিতে বসে থাকাতো দুর নিচেও দাঁড়াতে চান না যাত্রীরা।
ছাউনিটির নিচে দুটি দোকান আর একটি টিকেট কাউন্টার। এর মধ্যে একজন চা বিক্রেতা তার দুটি বড় টং নিয়ে বসে আছেন। এরপরই একটি টেবিল ও একটি বেঞ্চ নিয়ে ফাল্গুন বাসের টিকেট কাউন্টার গেড়ে বসেছেন একজন। তবে ছাউনিটির প্রায় তিনভাগের একভাগ জায়গা নিয়ে তৈরি করা হয়েছে একটি মাংসের দোকান। দোকানের বোর্ডে নেই কোনো নাম।
প্রায় ৩০ স্কয়ার ফিটের এই মাংসের দোকানটিতে প্রায়ই ভিড় থাকে। আর তাই ছাউনিটির নিচে হাঁটাচলা কিংবা দাঁড়াতে দ্বিধাবোধ করেন অনেকেই।
সিটি কলেজের শিক্ষার্থী জাহানারা জাগো নিউজকে বলেন, আগে এই ছাউনিটির নিচে দাঁড়িয়ে বাসের জন্য অপেক্ষা করতাম। এখন দোকানপাট থাকায় ছাউনিটির পরিধি অনেকাংশে কমে গেছে। দাঁড়িয়ে থাকলে ফুটপাথে হাঁটা মানুষের সঙ্গে গায়ে ঘষা লাগে। তাই এখন ছাউনির পাশের রাস্তায় দাঁড়িয়েই বাসের জন্য অপেক্ষা করি।
জাভেদ নেহাল নামে আরেক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, দোকান থাকার কারণে অনেকে এখানে দাঁড়িয়ে গল্পগুজব করেন আর সিগারেট খান। ছাউনিটির নিচে দাঁড়ানোর কোনো পরিবেশই নেই।
তবে সিটি কর্পোরেশনের মালিকাধীন এই যাত্রী ছাউনিটির নিচে দোকান বসানোর অনুমতি তারা কিভাবে পেলেন? জানতে চাইলে ওই মাংস বিক্রেতা বলেন, ‘টাকা দিয়ে দোকান নিয়েছি। প্রতি মাসে টাকা দিই।’ কাকে টাকা দেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যাকে দেয়ার তাকেই দিই।’ জাগো নিউজকে নিজের নামটিও বলেননি ওই মাংস বিক্রেতা।
জানতে চাইলে ফাল্গুন বাসের টিকেট কাউন্টার কর্মকর্তা বলেন, ‘মানুষের উপকারের জন্যেই বাসের টিকেট বিক্রি করছি।’
ঢাকায় দুই সিটি কর্পোরেশন মিলিয়ে প্রায় আড়াইশ` যাত্রী ছাউনি রয়েছে। তবে মালিবাগের স্থানীয়রা জানান, দোকানিদের কাছ থেকে টাকা আদায় করে ক্ষমতার প্রভাবে যাত্রী ছাউনিতে দোকান বসতে দিচ্ছে রমনা এলাকার যুবলীগ কর্মীরা এবং পুলিশ। এগুলোতে সিটি কর্পোরেশনের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই।
এআর/একে/আরআইপি