কদমতলিতে বিদ্রোহী নিয়ে বিপাকে আ.লীগ-বিএনপি
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার চন্দ্রঘোনা কদমতলি ইউপি নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী নিয়ে বিপাকে পড়েছেন প্রধান দু`দলের নেতাকর্মীরা। আগামী ২২ মার্চ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে প্রথম ধাপে রাঙ্গুনিয়ার এ ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। স্থগিত থাকার ১৩ বছর পর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে এ ইউনিয়নটিতে। নির্বাচন উপলক্ষে এলাকার সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা দিলেও বিদ্রোহী প্রার্থী নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন দুই দলের নেতাকর্মীরা।
ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ থেকে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ও বতর্মান চেয়ারম্যান ইদ্রিছ আজগরকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে তিনি মনোনয়নপত্র জমাও দিয়েছেন। কিন্তু এতে বাধ সাধেন উপজেলা যুবলীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াছ কাঞ্চন চৌধুরী। তিনিও মনোনয়নপত্র দাখিল করায় দলীয় নেতাকর্মীরা চিন্তায় আছেন।
অপরদিকে বিএনপি থেকে মুজিবুল হক দলীয়ভাবে মনোনয়ন পেয়েছেন। তার বিপরীতে প্রার্থী রয়েছেন সাবেক চন্দ্রঘোনা-কদমতলী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শামসুল আলম কন্ট্রাকটর। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম আ.লীগ নাকি বিএনপি এ নিয়েও রয়েছে নানা কথা। তিনি নিজেকে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা দাবি করলেও এলাকার অনেকেই তাকে বিএনপি ও এনডিপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল বলে জানান। এ ইউনিয়নে জাতীয় পার্টি ও জামায়াতের কেনো প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না।
রাঙ্গুনিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলম তালুকদার জানান, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নির্দেশনা অনুযায়ী ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রত্যক্ষ ভোটে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নির্বাচিত করা হয়েছে। এখানে কেউ দলের সিদ্ধান্তের বাইরে অবস্থান করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
রাঙ্গুনিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শওকত আলী নূর জানান, কেন্দ্র থেকে মুজিবুল হককে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। তিনি দলের কোনো বিদ্রোহী প্রার্থী নয় বলে জানান।
এদিকে উপজেলার চন্দ্রঘোনা-কদমতলী ইউনিয়নের নির্বাচনে ৫ চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ ৬০ প্রার্থী গত ২২ ফেব্রুয়ারি সোমবার উপজেলা নির্বাচন অফিসে মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন। সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য পদে ১১ জন ও সাধারণ সদস্য পদে ৪৪ জন প্রার্থী মনোনয়ন ফরম জমা দেন।
চেয়ারম্যান পদে ৫ প্রার্থী হলেন- আওয়ামী লীগের বর্তমান চেয়ারম্যান ইদ্রিছ আজগর, স্বতন্ত্র থেকে উপজেলা যুবলীগের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক ইলিয়াছ কাঞ্চন চৌধুরী, বিএনপি থেকে মুজিবুল হক, স্বতন্ত্র থেকে বিএনপি নেতা শামসুল আলম কন্ট্রাক্টর, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা (বিএনপি-এনডিপি) জাহাঙ্গীর আলম ।
সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ১,২,৩ নং ওয়ার্ডে রেহেনা আকতার, শামীম আকতার, উষা চৌধুরী, জুলেখা বেগম, ৪,৫,৬ নং ওয়ার্ডে জয়নাব বেগম, আয়শা পারভীন বাপ্পী, সামশুন নাহার, জাহানার বেগম, রোজিনা আকতার চৌধুরী,৭ ,৮,৯ নং ওয়ার্ডে আনোয়ারা বেগম, নয়ন তালুকদার।
সাধারণ সদস্য পদে ১ নং ওয়ার্ডে মো. রেজাউল করিম, শরন বড়ুয়া, আবু সামাদ, মো. নজরুল ইসলাম, নুর মোহাম্মদ, ২ নং ওয়ার্ডে মো. আবু তৈয়ব, মো. রেজাউল করিম, মো. ফজল করিম, মো. নাসির উদ্দিন, ৩ নং ওয়ার্ডে মোজাম্মেল হক, মো. মনছুর আলম, মো. নাসের সিকদার, মো. সাদুল্লাহ, মো. সেকান্দর।
৪ নং ওয়ার্ডে মো. ফোরকান, মো. শামসুল আলম, আজিজুল ইসলাম, মো. এনাম, মো. ওসমান ৫ নং ওয়ার্ডে মো. সেকান্দর, আবদুল্লাহ আল মামুন, মো. আবদুর রহিম, মো. শাহ আলম, মোহাম্মদ জাহেদুল হক ৬ নং ওয়ার্ডে মো. হাবিবুর রহমান, মো. রাশেদ আলী, মো. আলী রানা, মো. দিদার হোসেন।
৭ নং ওয়ার্ডে মো. নুরুল ইসলাম, মো. আজাদ হোসেন, আহমদুল হক তালুকদার, আজগর চৌধুরী, মো. আবদুল মালেক, মো. নাসির উদ্দিন, মো. জসিম উদ্দিন ৮ নং ওয়ার্ডে রিপন কান্তি গুহ, কনক বড়ুয়া, মো. ইকবাল পারভেজ, আবুল হক ৯ নং ওয়ার্ড কবির আহমদ, ওমর ফারুক, আবদুল মান্নান মুনাফ, মো. সেলিম, মো. ইলিয়াছ।
রাঙ্গুনিয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা কামরুল আলম জানান, নির্বাচনের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। ৩ মার্চ প্রতীক বরাদ্দের পর প্রচারণা শুরু করবেন প্রার্থীরা। ১৩ বছর পর নির্বাচন হচ্ছে তাই এ নিয়ে এলাকার সাধারণ ভোটারের মধ্যে উৎসাহের কোন কমতি নেই।
জীবন মুছা/এসএস/এমএস