অনিয়মের অভিযোগ তদন্তে হাবিপ্রবিতে যাচ্ছে ইউজিসির কমিটি
বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) করা অভিযোগ তদন্তে দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) যাবে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)
আগামী ১৫ মার্চ হাবিপ্রবিতে সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করবে চার সদস্যের এই কমিটি।
ইউজিসি’র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের উপ-পরিচালক ও সংশ্লিষ্ট তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব আমিরুল ইসলাম শেখ গত ৮ মার্চ এক পত্রের মাধ্যমে হাবিপ্রবির রেজিস্ট্রারকে বিষয়টি অবগত করেছেন।
এতে উল্লেখ করা হয়েছে, কমিশন কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটি আগামী ১৫ মার্চ সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ে সশরীরে উপস্থিত থেকে তদন্ত কাজ পরিচালনা করবে। উল্লেখিত তারিখ ও সময়ে দালিলিক প্রমাণাদি ও প্রক্টরের দায়িত্বসহ ভর্তি পরীক্ষা ২০১৮-এর সহযোগী সদস্য সচিব খালেদ হোসেন, উদ্যানতত্ব বিভাগের অধ্যাপক এবং ইন্সটিটিউট অব রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিংয়ের (আইআরটি) পরিচালক ড. তরিকুল ইসলাম, জেনেটিক্স অ্যান্ড অ্যানিমেল ব্রিডিংয়ের চেয়ারম্যান ড. আবদুল গাফফার, ট্রেজারার অধ্যাপক ড. বিধান চন্দ্র হালদার (বর্তমান উপাচার্য, রুটিন ওয়ার্ক) ও অধ্যাপক ড. শ্রীপতি শিকদার (পরিচালক, জনসংযোগ ও প্রকাশনা বিভাগ), মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের চেয়ারম্যান এবং প্ল্যানিং অ্যান্ড উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান, অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. ফাহিমা খানম, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ডা. ফজলুল হক, কন্ট্রোলার অধ্যাপক মিজানুর রহমান, প্রকৌশল শাখার চাঁদ আলী, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (সিভিল) আব্দুর রাজ্জাক, নির্বাহী প্রকৌশলী এবং পরিবহন শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল ওয়াহেদকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।
এর আগে গত ২ মার্চ ইউজিসি কর্তৃক এক চিঠিতে বলা হয়েছে, দুদকের প্রধান কার্যালয়-১ এর স্মারকপত্রের পরিপ্রেক্ষিতে গঠিত তদন্ত কমিটি সরেজমিন বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করবে।
গত ২০১৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয়ে সাজ্জাদুল করিম দুদক দিনাজপুরের উপ-পরিচালক বরাবরে অভিযোগ দায়ের করেন (অভিযোগ নং-৪০৮/২০১৯)। পরে অভিযোগটি দুদক দিনাজপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয় ২০২০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি দুদক প্রধান কার্যালয়ে পাঠায়। প্রাপ্ত অভিযোগের বিষয়ে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য ইউজিসির চেয়ারম্যান পাঠানোর জন্য কমিশন সিদ্ধান্ত নেয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২০২০ সালের ১৩ আগস্ট ৫ পাতার অভিযোগের ছায়ালিপিসহ ইউজিসি’র চেয়ারম্যানের কাছে চিঠি দেয় দুদকের পরিচালক ও অভিযোগ যাচাই-বাছাই কমিটির সদস্য জহিরুল ইসলাম।
উল্লেখ্য, হাবিপ্রবির উপাচার্য প্রফেসর ড. মু. আবুল কাশেম মেয়াদ শেষ হওয়ার ১৮ দিন আগেই স্ত্রীর অসুস্থতার কথা বলে গোপনে কাউকে কিছু না জানিয়ে মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) রাতের আঁধারে ক্যাম্পাস ত্যাগ করে চলে যান।
তার এই চলে যাওয়াটাকে শিক্ষক ছাত্ররা পালিয়ে যাওয়া বলে দাবি করে আসছেন। যাওয়ার আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার বর্তমানে উপাচার্যের রুটিন দায়িত্ব পাওয়া অধ্যাপক ড. বিধান চন্দ্র হালদারকে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব দিয়ে নোট দিয়ে যান।
তার মেয়াদ পূর্তির শেষ সময়ে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয়। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে বৈরী আচরণ, ক্লাস-পরীক্ষা চালুসহ বিভিন্ন দাবি নিয়ে ১২ জানুয়ারি ভিসির বাসভবনের ভিতরে দিনভর অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শতাধিক ছাত্র। কিন্তু তিনি কারও সঙ্গে দেখা করেননি। উপাচার্য রেজিস্ট্রারকে ফোনে জানান তার স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ায় তিনি ঢাকায় চলে গেছেন।
এমদাদুল হক মিলন/এসজে/জেআইএম