শিক্ষক নিয়োগে ‘ক্ষমতার প্রভাব’, জাবি ছাত্রফ্রন্টের তদন্ত দাবি
![শিক্ষক নিয়োগে ‘ক্ষমতার প্রভাব’, জাবি ছাত্রফ্রন্টের তদন্ত দাবি](https://cdn.jagonews24.com/media/imgAllNew/BG/2019November/joy-20221129163731.jpg)
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে ‘ক্ষমতার প্রভাব খাটানো ও অনৈতিক পন্থা অবলম্বনের’ অভিযোগ তুলে এর তদন্ত দাবি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট। একইসঙ্গে অভিযুক্ত শিক্ষককে দায়িত্ব থেকে অপসারণ এবং তার বিচার দাবি জানিয়েছ সংগঠনটির নেতারা।
সোমবার (২৮ নভেম্বর) বিকেলে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের জাবি শাখার সম্পাদক আরিফুল ইসলামের করা বিবৃতিতে বিষয়টি জানানো হয়।
বিবৃতিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ও পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান জনির বিরুদ্ধে শিক্ষক নিয়োগে ক্ষমতার প্রভাব ও একাধিক নারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ উঠেছে।
এতে বলা হয়েছে, ‘প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকা একজন শিক্ষকের নামে এরকম অভিযোগকে আমলে না নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে। যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তিকে শুধু নষ্ট করে ফেলছে না, বরং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়েও হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। নিয়োগ পদ্ধতিতে এমন অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত না হলে পুরো প্রশাসনের চরিত্র নিয়েই বিশাল প্রশ্ন ওঠে। শিক্ষক নিয়োগে অনৈতিক পন্থা অবলম্বন করা শিক্ষক ও প্রশাসনের মর্যাদাবোধ ও দায়িত্ববোধকেও প্রশ্নবিদ্ধ করে।’
এ বিষয়ে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক কনোজ কান্তি রায় জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা সহকারী প্রক্টরের একাধিক অনৈতিক সম্পর্ক ও শিক্ষক নিয়োগে প্রভাব বিস্তারের বিষয়টি বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছি। প্রক্টরিয়াল বডির সদস্য হিসেবে এ ধরনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তাকে ভাবিয়ে তোলে। আমরা অবিলম্বে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তের বিচার দাবি করছি। পাশাপাশি তদন্ত চলাকালে তাকে প্রক্টরিয়াল বডি থেকে অপসারণ করা হোক।’
এর আগে শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম এক বিবৃতিতে জনির অনৈতিক কর্মকাণ্ডের তদন্তের দাবি জানিয়েছে।
এতে উল্লেখ করা হয়, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগে অনৈতিক সম্পর্কের প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ উঠেছে। একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনৈতিক সম্পর্ক ও অর্থের বিনিময়ে নারী শিক্ষার্থীদের ফলাফল ও নিয়োগে বেআইনি প্রভাব বিস্তার করেছেন বলে তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। ওই একই শিক্ষক ক্যাম্পাস সংলগ্ন এলাকায় অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত থাকা অবস্থায় ক্ষুব্ধ জনতার হাতে মারধরের শিকারও হয়েছেন। এসব অভিযোগের সত্যতা থাকলে, বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের জন্য অসম্মানজনক হওয়ার পরও তাকে বিভিন্ন প্রশাসনিক দায়িত্বে বহাল রেখে অসামাজিক কার্যকলাপের সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে। যার দায় প্রশাসন কোনোভাবেই এড়াতে পারে না।’
এ ব্যাপারে ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ মোহাম্মদ কামরুল আহছান বলেন, ‘যদি ওই শিক্ষক দোষী হয়ে থাকেন তাহলে তার চাকরিতে থাকার কোনো যৌক্তিকতা নেই। এ ঘটনায় প্রশাসনের কোনো পদক্ষেপ না নেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য লজ্জাকর ব্যাপার।’
এসব বিষয়ে অভিযুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মাহমুদুর রহমান জনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘যেগুলো ছড়ানো হচ্ছে সেসব সত্য নয়। আমার অবস্থান ব্যাখ্যা করে প্রশাসনকে চিঠি দেবো। সেক্ষেত্রে প্রশাসন যে সিদ্ধান্ত দেবে তা মেনে নেবো। আর এখন যেসব চলছে তা আমাকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে দিচ্ছে।’
পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের চেয়ারম্যান সহযোগী অধ্যাপক মাহফুজা মোবারক বলেন, ‘আমাদের বিভাগে এ বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে না। এটা তাদের ব্যক্তিগত বিষয়।’
২১ নভেম্বর অভিযুক্ত শিক্ষক জনির সঙ্গে সদ্য নিয়োগ পাওয়া এক শিক্ষিকার ছবি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থাপনায় সেঁটে দেওয়া হয়। সেই ছবিতে ওই শিক্ষিকার নিয়োগে জনির তদবিরের ইঙ্গিত দেওয়া হয়। এ নিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমেও প্রকাশিত হয়।
এসজে/এমএস