নিরাপদ ক্যাম্পাস দাবিতে জাবি শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিতের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। তাদের এ দাবির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে মানববন্ধনে অংশ নেন ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট জাবি শাখার নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন শিক্ষকরা।
রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের সংলগ্ন সড়কে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন।
বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) ক্যাম্পাসে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে লাইফ সাপোর্টে যান সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী জাহিদ। এ ঘটনায় দোষীর শাস্তি এবং নিরাপদ ক্যাম্পাস দাবিতে মধ্যরাতে উপাচার্য ভবনের সামনে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এরপর থেকেই কর্তৃপক্ষের কাছে নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবি জানিয়ে আসছেন তারা।
মানববন্ধনে ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক মাছুম শাহরিয়ার বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে প্রত্যেকটা মোটরসাইকেল বেপরোয়া গতিতে চলে। হলগুলোতে ঢুকলে দেখা যায় শত শত বাইক। চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই, নম্বরপত্রও নেই। প্রশাসন তাদের ব্যাপারে কিছুই করতে পারে না। এ বিষয়গুলো নজরে এনে অরাজকতার সমাধান হওয়া উচিত।’
আরও পড়ুন: মধ্যরাতে নিরাপদ ক্যাম্পাস দাবিতে বিক্ষোভ
কলা ও মানবিকী অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোজাম্মেল হক বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান সড়কগুলো আরও প্রশস্ত করতে হবে। সড়কগুলোর পাশে ফুটপাতের ব্যবস্থা করতে হবে। ক্যাম্পাসে গাড়ির সংখ্যা আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের সংখ্যাও অনেক। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সড়কগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা জরুরি।’
সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের সভাপতি রাকিব আহমেদ বলেন, ‘প্রতিদিন অটোরিকশা বা বেপরোয়া মোটরসাইকেলের কারণে এসব দুর্ঘটনা ঘটছে। অথচ মোটরযানের গতি নিয়ন্ত্রণে কর্তৃপক্ষের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। আমরা চাই কর্তৃপক্ষ এসবের জন্য দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিত করবে এবং শিক্ষার্থীদের দাবি আমলে নিয়ে দ্রুত সমস্যার সমাধান করবে।’
আহত শিক্ষার্থীর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ছেলেটা তিনদিন হলো মাত্র ক্যাম্পাসে এসেছে। এতেই সে দুর্ঘটনার শিকার হলো। তার লাইফ সাপোর্ট খুলে নেওয়া হয়েছে, তাই বলে সে এখনই আশঙ্কামুক্ত বলা যাচ্ছে না। গতকাল রাতে এবং আজ সকালেও সে বমি করেছে। ডাক্তার বলেছে, আরও কয়েকদিন গেলে হয়তো বোঝা যাবে তার অবস্থা কোনদিকে যাচ্ছে। তবে এখনো সে শঙ্কামুক্ত না।’
মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলমের কাছে ৬ দফা দাবিতে স্মারকলিপি দেন।
দাবিগুলো হলো দোষী শিক্ষার্থীর দ্রুত শাস্তি নিশ্চিত করা, ক্যাম্পাসে লাইসেন্সবিহীন মোটরসাইকেল নিষিদ্ধ করা, নিবন্ধিত রিকশার বাইরে কোনো ধরনের ব্যাটারিচালিত রিকশা চলতে না দেওয়া, ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় গতিরোধক স্থাপন করা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরের রাস্তাগুলো প্রশস্ত, ফুটপাত ও সড়কবাতি নিশ্চিত করা।
মাহবুব সরদার/এসআর/জিকেএস