ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

ছাত্রী নির্যাতনের ভিডিও ধারণ করা মোবাইল ফোন উদ্ধারে চিঠি

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া
প্রকাশিত: ০৩:৩১ পিএম, ০৯ মার্চ ২০২৩
ফাইল ছবি

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) প্রথম বর্ষের ছাত্রী ফুলপরী খাতুনের ওপর নির্যাতন চলাকালে ভিডিও ধারণ করা মোবাইল ফোন উদ্ধারে তৎপরতা শুরু করেছে প্রশাসন।

বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আন নূর যায়েদ।

তিনি বলেন, একজন অভিযুক্তের মোবাইল ফোন উদ্ধারের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে রেজিস্ট্রারের একটি চিঠি পেয়েছি। এ বিষয়ে আমরা উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেছি।

ভুক্তভোগী ফুলপরী খাতুনের অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ১১ ও ১২ ফেব্রুয়ারি তার ওপর নির্যাতন চলাকালে হালিমা খাতুন উর্মি নামের এক ছাত্রী তার অপ্রীতিকর ভিডিও ফোনে ধারণ করেন।

তবে তদন্ত কমিটির কাছে অভিযুক্ত ছাত্রী দাবি করেন, তার মোবাইল ফোনটি হারিয়ে গেছে। পরে ফোনটি উদ্ধারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে নির্দেশনা দেন হাইকোর্ট।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এইচএম আলী হাসান বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশনার পূর্ণাঙ্গ কপি পাওয়ার পর আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এ বিষয়ে চিঠি দিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় বেশকিছু তথ্য দেওয়া সম্ভব হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের অন ডে-তে (কার্যদিবস) এগুলো পাঠানো যাবে আশা করি।

এর আগে গত ৪ মার্চ হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ফুলপরী খাতুনের ওপর নির্যাতনের অভিযোগে ছাত্রলীগ সহ-সভাপতিসহ পাঁচ ছাত্রীকে সাময়িক বহিষ্কার করে প্রশাসন।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে গত ১১ ও ১২ ফেব্রুয়ারি দুই দফায় ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী ফুলপরী খাতুনকে রাতভর নির্যাতন করার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, ফিন্যান্স বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের তাবাসসুমসহ আরও ৭-৮ জন জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ছাত্রী।

ঘটনা তদন্তে হল প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে দুটি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এছাড়া ১৫ ফেব্রুয়ারি আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করে শাখা ছাত্রলীগ।

১৫ ফেব্রুয়ারি বিষয়টি হাইকোর্টের নজরে আনেন আইনজীবী গাজী মো. মহসীন ও আজগর হোসেন তুহিন। তখন তাদের লিখিত আবেদন দিতে বলেন আদালত। সে অনুসারে তারা জনস্বার্থে রিট করেন।

পরে ১৬ ফেব্রুয়ারি রিটের শুনানি শেষে একজন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ও একজন প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তার সমন্বয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এছাড়া অভিযুক্তদের ক্যাম্পাসের বাইরে রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়। এরই মধ্যে গত ১৮, ২০ ও ২২ ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন কমিটির ডাকে মোট তিনবার পৃথকভাবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ক্যাম্পাসে এসে সাক্ষাৎকার দেন ভুক্তভোগী ও অভিযুক্তরা।

২৬ ফেব্রুয়ারি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটি। এরই মধ্যে ঘটনার তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা পেয়েছে ছাত্রলীগের গঠিত। এর ভিত্তিতে গত ১ মার্চ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ থেকে অভিযুক্ত পাঁচ নেতাকর্মীকে (অন্তরা, তাবাসসুম, মিম, উর্মী ও মুয়াবিয়াকে) বহিষ্কার করা হয়। একই সঙ্গে তাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

রুমি নোমান/এসআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।