নাফ নদীতে মাছ ধরার সুযোগ পেয়ে উচ্ছ্বসিত জেলেরা

উপজেলা প্রতিনিধি উপজেলা প্রতিনিধি টেকনাফ (কক্সবাজার)
প্রকাশিত: ০৬:২৬ পিএম, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

আট বছর পর কক্সবাজারের টেকনাফে নাফ নদীতে মাছ ধরার সুযোগ পেয়ে উচ্ছ্বসিত জেলেরা। তারা নদীতে গিয়ে উল্লাস করছেন। জেলেরা জানান, তাদের জালে মণের পর মণ মাছ ধরা পড়ছে।

সূত্রে জানা গেছে, উখিয়া ও টেকনাফে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ বেড়ে গেলে তা নিয়ন্ত্রণ এবং মাদকপাচার ঠেকাতে নাফনদীতে মাছ ধরা বন্ধ করে দেয়ে তৎকালীন সরকার।

তখন থেকে এ অঞ্চলের জেলে পরিবারের মধ্যে নেমে আসে দুঃখ-দুর্দশা। অনেক জেলে নাফ নদীতে মাছ ধরতে না পেরে দিনমজুর ও জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ করে সংসার চালাতে থাকেন।

নাফনদীতে মাছ ধরার সুযোগ পেয়ে উচ্ছ্বসিত জেলেরা

শাহপরীর দ্বীপের জেলে মো. আব্দুল্লাহ বলেন, নাফ নদীতে এখন সরকারি বিধিনিষেধ অনুযায়ী মাছ ধরতে পেরে আমরা আনন্দিত। যখন নাফনদী বন্ধ ছিল তখন আট বছর পরিবার নিয়ে খুব দুশ্চিন্তার মধ্যে দিন কাটিয়েছি। এখন নদীতে মাছ ধরতে গেলে মণ মণ মাছ পাচ্ছি। এক-দুদিন মাছ ধরলে তিন-চার হাজার টাকা পাই। নৌকার মাঝিরাও হাজার হাজার টাকা পাচ্ছেন।

টেকনাফ জালিয়াপাড়ার ইমাম হোসেন বলেন, মাছ ধরলে সংসারের খরচ জোগাড় হয়। আর ধরতে না পারলে ধারদেনা করতে হয়। যখন নাফনদীতে মাছ ধরা বন্ধ ছিল, তখন নিরুপায় হয়ে সংসার চালাতে বনে গিয়ে জ্বালানি কাঠ এনে বাজারে বিক্রি করেছি। এখন আর কোনো চিন্তা নেই। সরকারি নিয়ম মেনে নদীতে জাল নিয়ে মাছ ধরা হচ্ছে। বড় বড় পোপা মাছ থেকে শুরু করে নদীতে ছুরি, চিংড়ি, বাটা, রূপচাঁদা, কোরাল ইত্যাদি সামুদ্রিক নানা প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়।

নাফনদীতে মাছ ধরার সুযোগ পেয়ে উচ্ছ্বসিত জেলেরা

সাবরাং শাহপরীর দ্বীপের মেম্বর আবদুস সালাম বলেন, রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের পর নাফনদীতে মাছ ধরা বন্ধ ছিল। তখন কিছু জেলে সাগরে মাছ ধরতে যেত, সেখানেও আরাকান আর্মির ভয় ছিল। এখন নাফ নদী খুলে দেওয়া হলো। ট্রলার ও নৌকার মালিকসহ জেলেদের পরিবারের মধ্যে আনন্দ দেখা দিয়েছে।

টেকনাফ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন বলেন, জেলেরা নাফ নদীতে এখন বড় বড় মাছ পাচ্ছেন। গত রোববার শাহপরীর দ্বীপের ৬-৭ জন জেলে নাফ নদীতে জাল ফেলেন। কয়েক ঘণ্টা পর জাল টানেন। এসময় ১৯৪ কেজি ওজনের বিশাল ভোল মাছটি জেলের জালে আটকে যায়। তবে জেলেদের কাছ থেকে আশা করবো ছদ্মবেশে কোনো ধরনের অপরাধে যেন জড়িয়ে না পরেন।

নাফনদীতে মাছ ধরার সুযোগ পেয়ে উচ্ছ্বসিত জেলেরা

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, আমাদের প্রত্যাশা জেলেরা মাছ শিকার করে সুন্দর মতো সংসার চালাবে। তবে বাংলাদেশ সীমানার মধ্যে মাছ শিকার করতে হবে।

জাহাঙ্গীর আলম/জেডএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।