ঈদ বাজার
দেশি পোশাকে ক্রেতার ঝোঁক বেশি

পবিত্র ঈদুল ফিতর আসন্ন। ঈদকে সামনে রেখে জমে উঠেছে শপিং সেন্টার থেকে শুরু করে ফুটপাতের দোকান। বাহারি পোশাক, প্রসাধনী ও অঙ্গসজ্জা সামগ্রির দোকানে বাড়ছে ভিড়। ঝিনাইদহ শহরেও বেচাকেনার ধুম পড়েছে।
দোকানিরা বলছেন, ২০ রোজা পর্যন্ত বেচাকেনার চাপ কম ছিল। ঈদের দিন যত এগিয়ে আসছে, বেচাকেনাও বাড়ছে। সন্ধ্যা হলেই দোকান, শপিং সেন্টার ও তুলনামূলক কম দামের পোশাকের বাজারে বাড়ছে ক্রেতাদের ভিড়। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে নানা উপায় অবলম্বন করছে বিপণি বিতানগুলো। ভারতীয়সহ বিদেশি পোশাকের চেয়ে এবছর দেশি পোশাকের প্রতি ক্রেতাদের ঝোঁক বেশি। তবে পোশাকসহ সাজসজ্জার পণ্যের দাম চড়া বলে জানান ক্রেতারা।
সরেজমিন দেখা গেছে, জেলা শহরের গার্মেন্টসপট্টি, বঙ্গবাজার, সায়াদাতিয়া কমপ্লেক্স, মুন্সি মার্কেটে ক্রেতারা ভিড় করছেন। এছাড়া পিপীলিকা মার্কেট, কেসি কলেজ মার্কেট, জিন্নাহ সুপার মার্কেটেও বেড়েছে বেচাকেনা।
ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন বলেন, এবার বেচাকেনা ভালো। গরমের সময়, এজন্য বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত বেচাকেনার চাপ বেশি হয়। দাম এবার নাগালেই আছে। বিদেশি পোশাকের মধ্যে পাকিস্তানি থ্রি-পিস, লন, ওয়ান পিস, ইরানি বোরকা, গাউনের চাহিদা বেড়েছে।
ক্রেতাদের অনেকেই বলছেন, সামনে তীব্র গরমের দিন আসছে। তাই, এবারের ঈদের কেনাকাটায় আসন্ন গরমের বিষয়টি মাথায় রেখেছেন ক্রেতারা। যে কারণে সূতি ও দেশীয় কাপড়ের চাহিদা বেড়েছে। সেই সঙ্গে হালকা রঙের পাঞ্জাবি, থ্রি-পিস, লন, ওয়ান পিস, গাউনসহ অন্যান্য পোশাকের চাহিদা বেশি। একই ভাবে শিশুদের পোশাক ক্রয়ের ক্ষেত্রেও ক্রেতারা গরমের বিষয়টি বিবেচনায় নিচ্ছেন। কিনছেন ঢিলেঢালা হালকা রঙের শিশুদের পোশাক।
এদিকে মধ্যম ও নিম্ন আয়ের মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে শহরের পিপীলিকা মার্কেট, কেসি কলেজ মার্কেট ও জেলা পরিষদ মার্কেটে। এসব দোকান থেকে পছন্দের পোশাক কিনছেন অনেকেই।
শহিদুজ্জামান নামের এক ক্রেতা জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের আয় সীমিত। কিন্তু ঈদ বলে কথা। সন্তানরা নতুন পোশাকের আশায় থাকে। সাধ্যের মধ্যে পোশাক কেনার জন্য পিপীলিকা মার্কেট, কেসি কলেজ মার্কেট ও জেলা পরিষদ মার্কেট ভালো।
নিলুফার বেগম নামে এক ক্রেতা বলেন, বছরে দুটা ঈদ আসে। পরিবারের সবার মুখে হাসি ফুটানোর চেষ্টার মাঝেই আমাদের আনন্দ। আমরা যখন ছোট ছিলাম, আমাদের বাবা-মায়েরাও আমাদের জন্য করেছেন।
জিন্নাহ সুপার মার্কেটের দোকানি জাকির হোসেনে বলেন, পণ্যের কোয়ালিটির শেষ নেই। কোয়ালিটি অনুযায়ী দাম কমবেশি হয়। ক্রেতারা তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী পণ্য কেনার চেষ্টা করছেন। এবার কাপড়ের দাম স্বাভাবিক আছে। পুরুষদের পোশাকের দামে তারতম্য হয় না। তবে মেয়েদের পোশাকের ক্ষেত্রে ট্রেন্ডিং ইফেক্ট একটা ব্যাপার।
দোকানি ওয়াজির হোসেন বলেন, আর কদিন পর ঈদ। এখন আর ছিট কাপড় বিক্রি তেমন হবে না। তৈরি পোশাকের বিক্রি বেড়েছে। দাম নাগালেই আছে। চড়া দামে মাল কিনলে এখন বিক্রি করা কষ্ট। মানুষ আগের চেয়ে সচেতন। বেশি দামের পোশাকও আছে, সেগুলোর ক্রেতাও আলাদা।
সমবায় মার্কেটের একটি দোকানের বিক্রিয় প্রতিনিধি মাহফুজ হোসেন বলেন, মার্জিত ও বাজেটের মধ্যে বাহারি পাঞ্জাবির জন্য সমবায় মার্কেটের একটা নাম আছে। তরুণ-যুবকদের ভিড় এখনো ততটা শুরু হয়নি। ঈদের তিন-চারদিন আগে থেকে চাপ শুরু হতে পারে।
জান্নাতুল ফেরদৌস নামে এক ক্রেতা জাগো নিউজকে বলেন, ঈদ আমাদের প্রাণের উৎসব। সামর্থ্য অনুযায়ী প্রত্যেক মুসলমান পরিবারের সদস্যদের মুখে হাসি ফোটানোর চেষ্টা করি। তবে আমাদের আশপাশে বসবাসকারী ও প্রতিবেশীদের প্রতিও নজর দেওয়া উচিত। সবাই মিলে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো উচিত।
ঝিনাইদহ জেলার দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম বাদশা বলেন, ১৫ রোজা পর্যন্ত বেচাকেনা খুব একটা হয়নি। গত দুদিন মোটামুটি বেচাকেনা বেড়েছে। ঈদের দিন যত এগিয়ে আসবে, বেচাকেনা তত বাড়বে। দোকান মালিক সমিতির পক্ষ থেকে যাবতীয় তদারকি করা হচ্ছে।
শাহজাহান নবীন/জেডএইচ/এমএস