ঈদুল ফিতরে কোরবানির আমেজ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি চাঁপাইনবাবগঞ্জ
প্রকাশিত: ০৪:৪০ পিএম, ৩১ মার্চ ২০২৫

সাধারণত ঈদুল আজহায় ভাগে কোরবানির দৃশ্য দেখা গেলেও এবার ঈদুল ফিতরে চাপাইনবাবগঞ্জে তৈরি হয়েছে সেই আবহ। সারাবছর চাঁদা সংগ্রহ করে যৌথ উদ্যোগে ঈদে গরু জবাই করছেন অনেকে। এজন্য তৈরি করা হয়েছে মাংস সমিতি। সমিতির মাধ্যমে চাঁদা দিয়ে ভাগে গরু জবাই করে মাংস ভাগ করে নিচ্ছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। এতে ঈদুল ফিতরে মিলছে কোরবানির আমেজ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ইসলামপুর, নয়াগোলা, মহারাজপুর, শিবগঞ্জ উপজেলার ধাইনগর, শ্যামপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে মাংস সমিতি। এটিকে গ্রামের ভাষায় অনেকে গোসত সমিতিও বলছেন। এই সমিতির কাজ বছরের বারো মাস সদস্যদের থেকে চাঁদা উঠিয়ে ঈদুল ফিতরে গরু কিনে জবাই করে মাংস বিতরণ করা।

শ্যামপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা সোহেল রানা বলেন, এক কেজি গরুর মাংসের দাম সাড়ে আটশ টাকা। আমাদের কাছে যা অনেক। তাই এলাকার মানুষ একত্রিত হয়ে গড়ে তুলেছি মাংস সমিতি। এই সমিতিতে মাসে ৫০০ টাকা করে ১৮ জন চাঁদা দিয়ে আসছি বছর জুড়ে। সে টাকা দিয়ে গত তিনদিন আগে এক লাখ ৬ হাজার টাকায় একটি গুরু কিনে ঈদের দিন জবাই করেছি। এতে আমাদের ঈদের আনন্দ দ্বিগুণ হয়েছে। অনেকটা ঈদুল আজহার মতো। নামাজ পড়ে এসে গরু জবাইয়ের কাজ শুরু করেছি।

দায়পুকুরিয়া এলাকার বাসিন্দা আব্দুল মবিন জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের এলাকার বেশিরভাগ মানুষ নিম্নবিত্ত। তাই ঈদুল ফিতরে অনেকে গরুর মাংস কিনে খেতে পারে না। অনেকে আছেন ঈদুল আজহায় গরুর মাংস খেতে পারেন। বাকি সারাবছর গরুর মাংস তাদের বাড়িতে উঠে না। কারণ দাম অনেক বেশি। তাই নিম্ন আয়ের মানুষের কথা চিন্তা করে এলাকায় গড়ে তোলা হয়েছে মাংস সমিতি।

ঈদুল ফিতরে কোরবানির আমেজ

তিনি বলেন, এলাকার ৪০-৪৫ জন নিম্ন আয়ের মানুষ এই সমিতিতে মাসে ৩০০ টাকা করে জামা দেই। পরে ১২ মাসে যে টাকা জমা হয়। সে টাকা দিয়ে একটি গরু বাজার থেকে কিনে জবাই করে মাংস ভাগ করে দেওয়া হয়। এতে আমরা ঈদুল আজহার কিছুটা আমেজ পাই। এমনকি গরুর মাংসের দামও কম পড়ে।

শ্যামপুর ইউনিয়নের চা দোকানি জসিম উদ্দিন বলেন, সারাবছর অল্প টাকা আয় করে গরুর মাংস কিনে খাওয়া সম্ভব হয় না। তাই চায়ের দোকান থেকে মাসে ৫০০ টাকা করে সমিতিতে জামা দিয়ে আসছি সারাবছর। সে টাকা থেকে গরু কিনে আজ জবাই করা হলো। ভালো লাগছে।

শ্যামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম বলেন, মাংস সমিতি বিভিন্ন গ্রামে গড়ে উঠেছে। এতে উপকৃত হচ্ছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। সারাবছর গরুর মাংস কিনে খেতে না পারলেও ঈদের দিনে খেতে পারছেন। এতে নামাজ শেষে গরু জবাইয়ের একটা আনন্দ থাকে।

জেলা পুলিশ সুপার রেজাউল করিম বলেন, ঈদ উপলক্ষে বিভিন্ন স্থানে জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চেকপোস্ট ও টহল কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

সোহান মাহমুদ/এমএন/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।