বেহাল ভৈরব-মেন্দিপুর সড়ক, দুর্ভোগে লক্ষাধিক মানুষ
দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় বেহাল অবস্থা ভৈরব-মেন্দিপুর সড়কের। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন উপজেলার চার ইউনিয়নসহ পৌর এলাকা লক্ষাধিক মানুষ। বিকল্প সড়ক না থাকায় ঝুঁকি নিয়েই প্রতিদিন যাতায়াত করছে এসব এলাকার মানুষ।
এদিকে সড়ক সংস্কারের দাবিতে মানববন্ধনসহ উপজেলা প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন এলাকাবাসী।
তবে সড়ক ও জনপদ বিভাগ বলছে, সড়ক প্রসস্থকরণ ও সংস্কারের জন্য উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর পর অনুমোদন পাওয়া গেছে। দ্রুতই কাজ শুরু হবে
সরেজমিনে দেখা যায়, ভৈরব শহরের স্টেডিয়াম সংলগ্ন এলাকা থেকে শুরু হয়ে সড়কটি সাদেকপুর ইউনিয়নের মেন্দিপুর গিয়ে শেষ হয়েছে। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বাজার, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা রয়েছে। উপজেলার চার ইউনিয়নসহ পৌর শহরের কয়েকটি এলাকার বাসিন্দাদের একমাত্র সড়ক হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। গত ১৬ বছর ধরে সংস্কারের অভাবে সড়কের বিভিন্ন স্থানে ভেঙে গিয়ে ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে।

রসুলপুর উত্তরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সরকার আনোয়ার হোসেন বলেন, সময়মতো বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করতে সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। সড়কের বিভিন্ন স্থান ভাঙতে ভাঙতে এমন অবস্থা হয়েছে। গাড়িতে উঠলে বুঝা যায় না বৃষ্টি হলে মনে হয় এটা ডোবা।
সাদেকপুর ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার রুবেল মিয়া বলেন, সড়কটি সংস্কারের অভাবে ভৈরব থেকে মেন্দিপুর পর্যন্ত চলাচল খুব কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। ছোট-বড় গর্তের কারণে যাত্রীরা শারীরিকভাবে ঝুঁকিতে রয়েছেন। যদি রাত্রে বেলায় কেউ অসুস্থ হয়ে পড়েন তাহলে তাকে হাসপাতালে নিতে কোনো গাড়ি পাওয়া যায় না।
সড়কে সিএনজিচালক আনোয়ার হোসেন বলেন, রাস্তাটির যে বেহাল অবস্থা হয়েছে সেটি কেউ না দেখলে বুঝবেন না। রাতে বেলায় যদি কোনো মানুষ অসুস্থ হয়ে সদরে হাসপাতালে নিয়ে আসতে কোনো গাড়িচালক আসতে চায় না। খারাপ রাস্তার কারণে দ্রুত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে গাড়ি।
অটোরিকশাচালক রফিক মিয়া বলেন, আমরা গরিব মানুষ, দিনে আনি দিন খাই। রাস্তার কারণে গাড়ির পেছনে যত টাকা খরচ হয় তাতে পরিবার নিয়ে দুবেলা খাওয়াই কঠিন হয়ে পড়েছে।

অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ইমন জানায়, বাড়ি থেকে আমার বিদ্যালয়ের দূরত্ব এক কিলোমিটার। এ জন্য হেঁটে বিদ্যালয়ে যাতায়াত করি। কিন্তু ভাঙা রাস্তায় অবিরাম যানবাহন চলাচলের কারণে প্রচুর ধুলাবালি সৃষ্টি হয়েছে। প্রায়ই হাঁটার রাস্তায় বিভিন্ন যানবাহন তুলে দেন চালকরা।
ভৈরব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শবনম শারমিন জানান, সড়কটি দিয়ে আমিও কয়েক দিন আগে একটি বিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম। সড়কটির অবস্থা খুবই বেহাল। কেউ যদি একবার সড়কটি দিয়ে যাতায়াত করেন তাহলে পরদিন স্বাভাবিক কার্যক্রম করতে পারবেন না। সড়ক ও জনপদ বিভাগের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা জানিয়েছেন, সড়ক সংস্কারের বিষয়ে প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ের পাঠানো হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্য তারা সংস্কার কাজ শুরু করবেন।
এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাকিল মোহাম্মদ ফয়সাল জানান, সড়কটির সংস্কারের প্রস্তাব পাঠিয়েছিলাম। আহ্বানের পরবর্তীতে ঠিকাদারের মূল্যায়ন প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।
রাজীবুল হাসান/আরএইচ/এএসএম