সোনারগাঁয়ে লিচুর বাম্পার ফলন, লাভের স্বপ্নে বিভোর ব্যবসায়ীরা

উপজেলা প্রতিনিধি উপজেলা প্রতিনিধি সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ)
প্রকাশিত: ১১:৫৮ এএম, ০৪ মে ২০২৫

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার লিচু বাগানগুলোতে এবার বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলে ব্যবসায়ীরা অধিক লাভের অপেক্ষায় দিন গুনছেন। তবে অপেক্ষার প্রহর প্রায় শেষ, এবার বিক্রির পালা।

ভৌগোলিক ও নির্দিষ্ট জাতের হওয়ায় দেশের অন্যান্য জেলা থেকে সোনারগাঁয়ের লিচুর ফলন দ্রুত হয়। যার ফলে এর কদর দেশব্যাপী রয়েছে। বাগানিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এখানে তিন প্রজাতির লিচু হয়ে থাকে। পাতি লিচু, কদমী কিচু ও চায়না লিচু।

উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, এবার ১০৭ হেক্টর জমিতে লিচুগাছ রয়েছে। যেখানে বাগানের সংখ্যা ২৮২টি।

উপজেলার পৌরসভা এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে সারি সারি লিচু বাগান চোখে পড়ে। বাগানের গাছ লিচুতে ছেয়ে গেছে। যার যত্ন নিচ্ছেন শ্রমিকরা। বাগান মালিকরা বলছেন, এবারের ফলনে তারা বেশ আনন্দিত।

সোনারগাঁয়ে লিচুর বাম্পার ফলন, লাভের স্বপ্নে বিভোর ব্যবসায়ীরা

সোনারগাঁ পৌরসভার বালুয়া দিঘিরপাড় গ্রামের মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে মো. জাহিদ হাসান (৫৭)। তিনি বহু বছর যাবত লিচুর বাগান করে আসছেন। এবারো এই ব্যবসায়ীর পানাম গাবতলি গ্রামে ২১০ শতাংশ জমিতে ১০০ লিচুগাছ রয়েছে।

বাগান মালিক জাহিদ হাসান জানান, সাড়ে ৭ লাখ টাকার ভাড়ার চুক্তিতে তিনি ৩ বছর যাবত এই বাগান করছেন। প্রথম বছর ভালো লাভবান হয়েছিলেন। এরপর দ্বিতীয় বছর অর্থাৎ গত বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ নানা কারণে লোকসান গুনলেও এ বছর আবার ফলন ভালো হয়েছে। এবার পুরো বাগানে সার্বিক খরচে ৪ লাখ টাকার মতো ব্যয় হয়েছে। আর বাগানে থাকা লিচু তিনি অন্তত ৬ থেকে সাড়ে ৬ লাখে বিক্রি করতে পারবেন বলে আশাবাদী।

তিনি বলেন, তার বাগানে ১০-১১ জন শ্রমিক কাজ করেন। যাদের প্রতিজনের দিনপ্রতি ১ হাজার টাকা মজুরি ব্যয় হয়ে থাকে। বছরে ফল উত্তোলনের সময় ২০ দিনের মতো এই শ্রমিকরা কাজ করেন।

সোনারগাঁয়ে লিচুর বাম্পার ফলন, লাভের স্বপ্নে বিভোর ব্যবসায়ীরা

কৃষি অফিস থেকে সহযোগিতা বা পরামর্শ পান কি না জানতে চাইলে তিনি জানান, কৃষি অফিস থেকে তাদের কোনো সহযোগিতা করা হয় না বা পরামর্শও দেয় না।

মো. জাহিদ হাসানের বাগানের আড়াইশ গজ দূরে মো. তাজুল ইসলামের লিচু বাগান। দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে তিনি লিচুর বাগান করছেন।

বাগান মালিক তাজুল ইসলাম বলেন, করোনা ভাইরাসের পরবর্তী ৩ বছর ফলন মন্দ হয়েছিল। এ বছর ফলন এবং বাজার খুব ভালো রয়েছে। তার দুটি বাগান রয়েছে, যার দেখভালের জন্য ৩ জন শ্রমিক নিয়োজিত আছেন। এ বছর তার ২ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে বাগানের জন্য। তিনি আশাবাদী ৪ লাখে বিক্রি হবে তার বাগানের লিচুগুলো। এই ব্যবসায়ীরও অভিযোগ কৃষি অফিস থেকে কোনো সহযোগিতা কিংবা পরামর্শ পান না তিনি।

সোনারগাঁয়ে লিচুর বাম্পার ফলন, লাভের স্বপ্নে বিভোর ব্যবসায়ীরা

এ বিষয়ে সোনারগাঁ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু সাঈদ তারেক জাগো নিউজকে বলেন, এই মৌসুমে লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে। যদি খরা না হতো, তাহলে হয়ত আরও বেশি ফলন হতে পারতো। উপজেলায় মোট ২৮২টি বাগান রয়েছে।

বাগান মালিকদের অসহযোগিতা সম্পর্কে তিনি জানান, মূলত লিচু বাগানকে ঘিরে কোনো সহযোগিতা বরাদ্দ নেই। তবে আমরা কিছু স্প্রে মেশিন ক্রয় করবো। যা আগামী বছর বাগানিদের কাজে ব্যবহার হবে।

এফএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।