মাদারীপুরে স্টেডিয়াম যেন মাদকসেবীদের অভয়ারণ্য

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি মাদারীপুর
প্রকাশিত: ১১:৫৪ এএম, ২৪ জুন ২০২৫

প্রায় বছরজুড়েই মাদারীপুর স্টেডিয়ামে নানা ধরনের খেলা অনুষ্ঠিত হতো। একসময়ের প্রাণচাঞ্চল্যপূর্ণ ক্রীড়াঙ্গন এখন রূপ নিয়েছে মাদকসেবী ও মাদক ব্যবসায়ীদের অভয়ারণ্যে। সন্ধ্যা হতেই স্টেডিয়ামে বসে মাদকের আসর। গভীর রাত পর্যন্ত চলে বিক্রি ও সেবন।

স্থানীয় জানান, একটা সময় মাদারীপুর স্টেডিয়ামে খেলাধুলা লেগেই থাকতো। বেশ কয়েক মাস ধরে খেলাধুলা কমে যাওয়ায় স্টেডিয়াম ও তার আশপাশ এলাকা কিছুটা নীরব হয়ে যায়। আর সেই সুযোগে সন্ধ্যার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে মাদক সেবনসহ কেনাবেচা। রাত যত গভীর হয়, ততই বাড়ে মাদকসেবীদের উপস্থিতি। স্টেডিয়ামের বিভিন্ন কোণায় কোণায় অন্ধকারে বসে গাঁজা, ইয়াবা, ফেনসিডিলসহ নানা ধরনের মাদক সেবনের আসর।
স্থানীয়রা আরও জানান, মাদকসেবীরা রাতের বেলায় চুরি-ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়াচ্ছে। এজন্য সন্ধ্যার পরে অনেকে ভয়ে স্টেডিয়াম এলাকায় যাচ্ছেন না। তারা নিজেদের সন্তানদের নিয়েও আতঙ্কে রয়েছেন। কেউ সাহস করে কিছু বলতেও পারছেন না।

বিজ্ঞাপন

এদিকে শহরের মধ্যে ও মাদারীপুর সদর মডেল নিকটবর্তী হওয়ার পরও মাদকের এমন রমরমা আসর ও ব্যবসায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন সচেতন নাগরিকরা।

নাম প্রকাশ না করে স্থানীয় একজন প্রবাসী বলেন, আমরা সন্তানদের নিয়ে মাঠে যেতে পারি না। ভয় হয় কখন কী হয়ে যায়। স্টেডিয়াম এখন আর খেলার জায়গা নেই, মাদকের হাট হয়ে উঠেছে। এছাড়া এ ব্যাপারে কোনো প্রতিবাদ করলে মাদকসেবী ও মাদক ব্যবসায়ীরা উল্টো হুমকি দেয়। তাই এখানকার কোনো বাসিন্দা কথা বলতে চান না।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন জানান, শহরের মধ্যেই স্টেডিয়ামটি অবস্থিত। মাদারীপুর সদর মডেল থানাও কাছেই। তবুও কীভাবে এখানে সন্ধ্যা হলেই মাদকের আসর বসে তা আমরা বুঝি না। সন্ধ্যার পর এখান দিয়ে হাঁটতেও ভয় লাগে। পুলিশ প্রশাসন যদি নিয়মিতভাবে এখানে অভিযান চালায়, মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারীদের ধরে নিয়ে জেলে দিত, তাহলে হয়ত এগুলো বন্ধ হতো।

মাদারীপুরে স্টেডিয়াম যেন মাদকসেবীদের অভয়ারণ্য

মেহেদী হাসান নামে স্থানীয় একজন বলেন, অবিলম্বে স্টেডিয়ামে পুলিশি টহল ও নিয়মিত নজরদারির ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে যাবে।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা অ্যাডভোকেট মাসুদ পারভেজ বলেন, প্রশাসন যদি এখনই ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে পুরো যুবসমাজ ধ্বংস হয়ে যাবে। বারবার আমরা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি কিন্তু কোনো কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না।

জাগোনিউজের খবর পেতে ফলো করুন

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর সাহা বলেন, স্টেডিয়ামটির কাছে পুরাতন বাসস্ট্যান্ড হওয়ায় এক শ্রেণির মানুষের সেখানে যাতায়াত আছে। পুলিশ প্রশাসন সব সময়ই ওখানে অভিযান চালাচ্ছে। বহুবার সেখানে অভিযান চালানো হয়েছে। একাধিক অভিযানের সময় বেশ কয়েকজনকে আটকও করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আমরা সবসময় কাজ করে যাচ্ছি। আরও জোড়ালোভাবে কাজ করা হবে। যাতে কেউ সেখানে এ ধরনের কোনো কর্মকাণ্ড করতে না পারে।

আয়শা সিদ্দিকা আকাশী/এমএন/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়।