ভোলায় স্বামীকে রাতভর নির্যাতন, স্ত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ভোলা
প্রকাশিত: ০৮:৩৮ এএম, ০১ জুলাই ২০২৫

ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলায় স্বামীকে আটকে রেখে নির্যাতন করে টাকা দাবিসহ স্ত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী গৃহবধূর স্বামী বাদী হয়ে সোমবার (৩০ জুন) বিকেলে তজুমদ্দিন থানায় ৭ জনের নাম উল্লেখ ও ৪-৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করেছেন।

দলবদ্ধ ধর্ষণের মামলায় তজুমদ্দিন উপজেলার শ্রমিক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. ফরিদ ও তার সহযোগী মো. আলাউদ্দিনের নাম রয়েছে।

এদিকে মামলার পর সোমবার রাতে ওই ভুক্তভোগী নারীকে মেডিকেল পরীক্ষার জন্য ভোলা ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ভুক্তভোগী গৃহবধূর স্বামীর অভিযোগ, শনিবার (২৮ জুন) রাতে তার তৃতীয় স্ত্রী তজুমদ্দিন উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের বসতঘরে ডেকে আনেন। পরে কথা বলে ভাত খেতে বসেন তিনি। ওই সময় প্রথমে ঘরে প্রবেশ করেন ৪ জন। তারা তৃতীয় স্ত্রীর সামনে তাকে পাইপ দিয়ে এলোপাথাড়ি মারধর করতে থাকেন। পরে যুক্ত হন আরও কয়েকজন। তারা তাকে তৃতীয় স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার জন্য সাড়ে ৪ লাখ টাকা দাবি করেন।

এরপর রাত ১টার দিকে তার প্রথম স্ত্রীকে ফোন করে টাকা নিয়ে আসতে বলেন। তিনি রাতে আসতে না পারায় রাতভর চলে নির্যাতন। রোববার সকালের দিকে প্রথম স্ত্রী টাকা না নিয়ে এলে তার সামনেও চলে নির্যাতন। এক পর্যায়ে তাকে বাহির থেকে চা খেয়ে আসার জন্য জোর করে বাজারে পাঠান। এসময় তার প্রথম স্ত্রীকে শ্রমিকদলের নেতা মো. ফরিদ ও তার সহযোগী মো. আলাউদ্দিন ধর্ষণ করেন। তাদের সহযোগিতা করেন আরও কয়েকজন।

ভোলায় স্বামীকে রাতভর নির্যাতন, স্ত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ

শ্রমিকদলের নেতা মো. ফরিদ ও তার সহযোগী মো. আলাউদ্দিন

তিনি প্রায় ৪০ মিনিট পর ফিরে এলে দরজা বন্ধ থাকায় ডাকতে থাকেন। কিছুক্ষণ পর অভিযুক্তরা এসে দরজা খুলে চলে যান। পরে স্ত্রী দলবদ্ধ ধর্ষণের বিষয়টি স্বামীকে বলেন।

এরপর এ ঘটনা থানায় না জানাতে তাকে মোবাইল ফোনে হুমকি দেন অভিযুক্তরা। পরে স্ত্রীকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি একই উপজেলার শম্ভুপুর ইউনিয়নের ফেরেন তিনি। বাড়ি ফিরে স্ত্রী কয়েকবার আত্মহত্যা করার চেষ্টাও বলেন বলে জানান। এরপর ওই রাতেই ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে পুলিশের সহযোগিতায় তজুমদ্দিন থানায় যান তারা। পুলিশ তাদের থেকে ঘটনার কথা শুনে তদন্ত করে। বিকেলের দিকে মামলা নিয়ে রাতে তার স্ত্রীকে মেডিকেল পরীক্ষার জন্য ভোলা ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসে পুলিশ।

ভোলা ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. আমিনুল ইসলাম জানান, সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে তজুমদ্দিন উপজেলার ভুক্তভোগী নারীকে মেডিকেল পরীক্ষার জন্য ভোলা ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ। ওই নারীর চিকিৎসা চলছে।

তজুমদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মহব্বত খান জানান, এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর স্বামী ৭ জনের নাম উল্লেখ ও ৪-৫ জনকে অজ্ঞাত করে একটি মামলা করেছেন। ওই মামলায় এজাহারভুক্ত আসামিদের সহযোগী তৃতীয় স্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

জুয়েল সাহা বিকাশ/এফএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।