পিরোজপুর পৌরসভা
ব্যবহার অযোগ্য ৯৪ শতাংশ সড়ক, সংস্কারের নাম নেই

খানাখন্দকে বেহাল দশা পিরোজপুর পৌরসভার ৯৪ শতাংশ সড়কের। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়া ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে এসব সড়ক। বর্ষায় পানি জমে এসব সড়ক মৃত্যুকূপে পরিণত হয়েছে। ঝুঁকি নিয়ে এসব সড়ক দিয়ে চলাচল করে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ হাজার হাজার মানুষ।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ১৮৬৫ সালে পিরোজপুর পৌরসভায় উন্নীত হয়। পাঁচ বছর পর ১৯৯০ সালে প্রথম শ্রেণির পৌরসভার স্বীকৃতি পায়। ২৯ দশমিক ৫ বর্গ কিলোমিটারের পৌরসভাটি প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত হলেও চোখে পড়ার মতো অবকাঠামো উন্নয়ন হয়নি।
সূত্র জানায়, পৌরসভায় ৩৩০ কিলোমিটার সড়ক রয়েছে। এর মধ্যে ২০ কিলোমিটার পাকা সড়ক ব্যবহার উপযোগী। বাকি সড়কের পিচ উঠে গেছে। ইটের সলিং করা সড়কগুলো যেন গলার কাটা হয়ে উঠেছে। ইট উঠে খানাখন্দে ভরে গেছে বাকি সব সড়ক। পর্যাপ্ত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় অল্প বৃষ্টিতে পৌর শহরের জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়।
‘পৌরসভায় ৩৩০ কিলোমিটার সড়ক রয়েছে। এর মধ্যে ২০ কিলোমিটার পাকা সড়ক ব্যবহার উপযোগী। বাকি সড়কের পিচ উঠে গেছে।’
পৌর শহরের বাসিন্দা সোহরাব হোসেন বলেন, ‘পৌর শহরের ব্যাংক রোড, ক্লাব রোডসহ প্রায় সব সড়কের বেহাল দশা। বৃষ্টি হলেই পানি জমে যায়। আমরা যারা শহরে চলাচল করি তাদের অনেক সমস্যা হয়। এটা বছরের পর বছর চলছে। আমরা এর সমাধান চাই। শহরের এমন অবস্থা হলে সুন্দর দেখায় না।’
- আরও পড়ুন
দুই কিলোমিটার সড়কের দুর্ভোগে ২০ হাজার শ্রমিক - মেরামতের অভাবে সড়ক অচল : দুর্ভোগ চরমে
- ৯০০ মিটার সড়ক বেহাল, ঘুরতে হয় ৫ কিমি পথ
এখলাস উদ্দিন নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘পিরোজপুর সব থেকে অবহেলিত। একটু বৃষ্টি হলে রাস্তায় পানি জমে যায়। ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভালো নয়। পৌরসভার বেশিরভাগ রাস্তা খানাখন্দে ভরা। নারীরা রাস্তাঘাটে চলাফেরা করতে পারেনা। শিক্ষার্থীরা স্কুল-কলেজে যেতে সমস্যা হয়।’
সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব খালিদ আবু বলেন, ‘শহরের ড্রেনেজ ব্যবস্থা সব থেকে বেশি খারাপ। দুই-তিন বছরে রাস্তায় কোনো কাজই হয়নি। জোড়াতালি দিয়ে যা চলে সেটি চলার মতো না। খানাখন্দে ভরে থাকায় রিকশা-গাড়িতে চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে।’
‘একটু বৃষ্টি হলে রাস্তায় পানি জমে যায়। ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভালো নয়। পৌরসভার বেশিরভাগ রাস্তা খানাখন্দে ভরা। নারীরা রাস্তাঘাটে চলাফেরা করতে পারেনা।’
জাহিদুল ইসলাম নামে আরেকজন বলেন, ‘সামান্য বৃষ্টি হলেই মনে হয় গ্রামের কোনো রাস্তা দিয়ে হাঁটছি। স্কুলগামী বাচ্চাদের এ রাস্তা দিয়ে চলতে ফিরতে খুব কষ্ট হয়। পৌরবাসী এ সমস্যা থেকে মুক্তি চায়।’
পৌর শহরে ২০ বছর ধরে রিকশা চালায় মোস্তফা আকন। তিনি বলেন, ‘শহরের রাস্তাঘাট একদম ভালো না। কিছু রাস্তা আছে যেখানে রিকশা নিয়ে যেতে বয় হয়। এ কারণে সব জায়গায় রিকশা নিয়ে যাই না।’
‘পর্যাপ্ত বাজেট না থাকায় এসব সড়ক সংস্কার করা যাচ্ছে না। বরাদ্দ পেলে দ্রুত সড়ক সংস্কার করে জনগণের চলার উপযোগী করা হবে।’
হায়দার আলী নামে আরেক রিকশাচালক বলেন, ‘সড়ক দিয়ে মানুষ ঠিকঠাক মতো হাঁটতে পারে না রিকশার মোটর ডুবে যায়। শহরের রাস্তাগুলো সংস্কারের দাবি করছি।’
এ বিষয়ে পিরোজপুর পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী ধ্রুব লাল দত্ত বণিক জাগো নিউজকে বলেন, ‘পৌরসভায় ৩৩০ কিলোমিটার রাস্তা রয়েছে। যার অধিকাংশের অবস্থা ভালো না। পর্যাপ্ত বাজেট না থাকায় এসব সড়ক সংস্কার করা যাচ্ছে না। বরাদ্দ পেলে দ্রুত সড়ক সংস্কার করে জনগণের চলার উপযোগী করা হবে।’
আরএইচ/জেআইএম