সাতক্ষীরা
লোকালয়ে সুন্দরবনের হরিণ, উদ্ধারের পর বনবিভাগে হস্তান্তর
সুন্দরবন থেকে লোকালয়ে চলে আসা একটি চিত্রা হরিণ উদ্ধার করেছে স্থানীয়রা। পরে সেটি বন বিভাগে হস্তান্তর করা হয়েছে। হরিণটিকে সুন্দরবনে অবমুক্ত করা হয়।
বুধবার (৬ আগস্ট) দুপুরে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার আটুলিয়া ইউনিয়নের তালবাড়িয়া গ্রাম থেকে হরিণটি উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধারকারী দীনবন্ধু জানান, আমাদের বাড়ির সামনে বনের দিকে একটি নৌকা করে কয়েকজন মানুষ ঘোরাফেরা করছিল। তাদের আচরণ সন্দেহজনক মনে হলে আমরা নজর রাখি। কিছুক্ষণ পর একটি হরিণ দৌড়ে এসে রাস্তা পার হয়ে সন্তোষ কাকার পুকুরে পড়ে যায়। আমরা স্থানীয় কয়েকজন মিলে হরিণটিকে পানি থেকে তুলে আনতে সক্ষম হই। এরপর বনবিভাগে খবর দিই। তবে যারা হরিণ খুঁজছিল লোকজন জড়ো হলে তারা পালিয়ে যান।
সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের মুন্সিগঞ্জ টহল ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নির্মল কুমার মণ্ডল বলেন, ‘স্থানীয়দের সহযোগিতায় হরিণটি উদ্ধার করে আমরা তাৎক্ষণিক শারীরিক পরীক্ষা করি। হরিণটির শরীরে বড় কোনো আঘাত ছিল না। সে সুস্থ ছিল বলে সুন্দরবনের নিরাপদ এলাকায় অবমুক্ত করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, হরিণটি লোকালয়ে চলে আসার পেছনে চোরা শিকারিদের তাড়া রয়েছে কী না, সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিষয়টি আমাদের জন্য গুরুত্বের সঙ্গে তদন্তাধীন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সুন্দরবনের সীমান্তবর্তী এলাকায় চোরা শিকারিদের চলাচল আগের চেয়ে বেড়েছে। বিশেষ করে জলপথে নৌকা নিয়ে গভীর জঙ্গলে ঢুকে বন্যপ্রাণী শিকার ও পাচারের চেষ্টা করছে একাধিক চক্র। মাঝে মাঝে লোকালয়ে বন্যপ্রাণীর অনুপ্রবেশ দেখা যাচ্ছে। যা একটি বিপজ্জনক সংকেত।
স্থানীয় পরিবেশকর্মী মো ফজলু বলেন, হরিণের মতো নিরীহ প্রাণী মানুষের বসতভিটায় এসে পড়ে মানে সে গভীরভাবে আতঙ্কিত। এর মানে বনের অভ্যন্তরে তার জন্য নিরাপত্তা নেই। চোরা শিকারিদের দৌরাত্ম্য কমানো না গেলে এ ধরনের ঘটনা বাড়তে থাকবে।
ঘটনার পর স্থানীয়রা বন বিভাগের প্রতি আরও কঠোর নজরদারির আহ্বান জানিয়েছেন। বিশেষ করে নদীপথে যারা সন্দেহজনকভাবে চলাফেরা করে, তাদের শনাক্ত ও আইনের আওতায় আনতে তৎপরতা বাড়ানোর দাবি উঠেছে।
সুন্দরবনের চিত্রা হরিণ বাংলাদেশের জীববৈচিত্র্যের অন্যতম আকর্ষণ। সুন্দরবনের বনজ সম্পদ ও বন্যপ্রাণি রক্ষায় স্থানীয়দের সক্রিয় ভূমিকা আবারও প্রমাণ হলো এ ঘটনায়।
আহসানুর রহমান রাজীব/আরএইচ/এমএস