বৃষ্টির অজুহাতে ময়মনসিংহে বেড়েছে সবজি ও মাছ-মাংসের দাম

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ময়মনসিংহ
প্রকাশিত: ০১:০৫ পিএম, ০৯ অক্টোবর ২০২৫
ময়মনসিংহের শম্ভুগঞ্জ বাজার

ন্যায্যমূল্যের বাজার হিসেবে পরিচিতি থাকলেও ময়মনসিংহের শম্ভুগঞ্জ বাজারে হঠাৎ করেই নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে সবজির দাম কেজিতে ৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে, আর মাংস ও মাছের দামও বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। এতে ক্ষুব্ধ নিম্ন ও মধ্যম আয়ের ক্রেতারা।

বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) সকালে শম্ভুগঞ্জ বাজার সরেজমিনে ঘুরে জানা গেছে, বাজারে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে করলার দাম, যা গত সপ্তাহে ৬০ টাকা কেজি থাকলেও এখন বেড়ে ১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া খাসির মাংস কেজিতে বাড়ানো হয়েছে ৫০ টাকা। মুরগির দাম কেজিতে ১০ ও মাছের দাম কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়ানো হয়েছে।

ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চায়না গাজর, মোটা গোল বেগুন ও শসার দাম কেজিতে ৩০ টাকা বেড়েছে। বর্তমানে চায়না গাজর ১৪০, মোটা গোল বেগুন ১২০ ও শসা ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। সিম ১৮০ টাকা থেকে বেড়ে ১৯০, কাঁকরোল ৭০ টাকা থেকে বেড়ে ৮০, ঝিঙে ৬০ টাকা থেকে বেড়ে ৭০, চিকন বেগুন ৬০ টাকা থেকে বেড়ে ৭০, ঢ্যাঁড়স ৭০ টাকা থেকে বেড়ে ৮০, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা থেকে বেড়ে ৫০ ও কাঁচা পেঁপে ২০ টাকা থেকে বেড়ে ২৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া ধুন্দল ৬০, টমেটো ১২০, পটোল ৬০, চিচিঙ্গা ৬০ ও কচুরমুখি ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। শুধুমাত্র কমেছে কাঁচামরিচের দাম। গত সপ্তাহ কাঁচামরিচ ২৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। গত দুইদিন আগে একলাফে বেড়ে ৩৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও বর্তমানে কাঁচামরিচ ১৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। অপরিবর্তিত অবস্থায় লাউ ৬০ টাকা পিস, কাঁচা কলা ৪০ টাকা হালি ও লেবু ২০ টাকা হালিতে বিক্রি হচ্ছে।

একই বাজারে মাছের দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বর্তমানে রুই ৩৪০-৪৪০, কালবাউশ ৩৫০-৪১০, মৃগেল ৩০০-৩৫০, শিং ৩৬০-৬৫০, কৈ ২৭০-৩৬০, পাবদা ৪০০-৫২০, সিলভার কার্প ২৪০-৩০০, তেলাপিয়া ২২০-৩০০, শোল ৬১০-৮৯০, ট্যাংরা ৫৫০-৮৭০, টাকি ৪৩০-৫৮০, কাতলা ৩৬০-৪২০ ও পাঙাশ ২২০-২৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

বৃষ্টির অজুহাতে ময়মনসিংহে বেড়েছে সবজি ও মাছ-মাংসের দাম

এদিকে ব্রয়লার মুরগি ও কক মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা। বর্তমানে ব্রয়লার মুরগির ১৭০ ও কক মুরগি ৩১০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংস অপরিবর্তিত অবস্থায় ৮০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও খাসির মাংসের দাম কেজিতে ৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়া ফার্মের মুরগির ডিম ৪০ টাকা হালিতে, দেশি মুরগির ডিম ও হাঁসের ডিম ৭০ টাকা হালিতে বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে ব্যাগ হাতে সবজি কিনতে বিক্রেতার সঙ্গে দামাদামি করছিলেন আসাদ মিয়া। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, সদর উপজেলার চরাঞ্চলের কয়েকটি ইউনিয়নে প্রচুর সবজি উৎপাদন হয়। আর এসব সবজি নিয়ে আসা হয় এই বাজারে। কৃষকরা বিক্রেতাদের কাছে কম দামে সবজি বিক্রি করলেও ক্রেতা পর্যায়ে দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছেন বিক্রেতারা।

মাছ কিনতে আসা আব্দুল হাই বলেন, বাজারে মাছের প্রচুর সরবরাহ রয়েছে। অথচ ইচ্ছামতো দামে বিক্রি করে নিজেদের পকেট ভারি করছেন বিক্রেতারা। বাজারে অভিযান না চালানোর কারণেই নিত্যপণ্যের দাম হু হু করে বাড়ছে।

দাম বাড়ার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে সবজি বিক্রেতা জহির মিয়া বলেন, বৃষ্টিপাতে অনেক কৃষকের সবজি খেতে পানি জমেছে। সবজি পচে নষ্টও হয়েছে। চাহিদার তুলনায় বাজারে সবজি কম আসছে। ফলে দামও বেড়ে গেছে।

মাছ বিক্রেতা খোকন মিয়া বলেন, আড়তদাররা মাছের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। এর প্রভাব পড়েছে খুচরা পর্যায়ে। ফলে আমরাও কিছুটা বাড়তি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি।

এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ময়মনসিংহের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুস ছালাম বলেন, চরাঞ্চলের বিপুল পরিমাণ সবজি শম্ভুগঞ্জ বাজারে নিয়ে আসা হয়। ফলে শহরের তুলনায় এই বাজারে সবজির দাম কম থাকে। বিক্রেতারা ইচ্ছামতো দামে বিক্রি করছে কিনা আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

কামরুজ্জামান মিন্টু/কেএইচকে/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।