নিজ বাড়িতে ‘যৌনকর্মীদের’ আশ্রয়, জামায়াত নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় নিজ বাড়িতে যৌনকর্মীদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে কুয়াকাটা পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড জামায়াতের সভাপতি আব্দুল হালিমকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৭টায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন কুয়াকাটা পৌর জামায়াতের আমির মাওলানা মো. শহীদুল ইসলাম।
বহিষ্কৃত আব্দুল হালিম উপজেলার লতাচাপলী ইউনিয়নের মুসুল্লিয়াবাদ গ্রামের বাসিন্দা।
স্থানীয় ও দলের নেতাকর্মীদের অভিযোগ, নিজ বাড়িতে ফ্যামিলি বাসা ভাড়া দেওয়ার নামে এমন অসামাজিক কাজ করে আসছেন আব্দুল হালিম। তিনি একসময় নিজেকে ওলামা লীগ হিসেবে দাবি করতেন। গত বছরের ৫ আগস্টের পরে সক্রিয়ভাবে জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
কুয়াকাটা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে দলটির নেতাকর্মীরা জানান, কুয়াকাটায় প্রতিনিয়ত যৌনবৃত্তি বেড়ে চলছে। আমরা এ বিষয়ে সবসময় সোচ্চার। এগুলো বন্ধে প্রচারণা চালিয়ে আসছি। তবে আমাদের সংগঠনের এক নেতার বিরুদ্ধে এমন উঠলে আমরা প্রাথমিকভাবে তদন্ত চালাই এবং তাকে বিভিন্নভাবে সতর্ক করি। তিনি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এমন ঘৃণিত কাজ থেকে ফিরে না আসায় তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে কুয়াকাটা পৌর জামায়াতের আমির শহিদুল ইসলাম, সাবেক আমির মাঈনুল ইসলাম মান্নান, লতাচাপলী ইউনিয়ন জামায়াতের আমির মো. রাসেল প্রমুখ।
কুয়াকাটা পৌরসভার আমির শহীদুল ইসলাম বলেন, সংগঠনের নীতিমালা ও আদর্শবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে দল কঠোর অবস্থানে থাকবে বলেও জানান তিনি।
সাবেক আমির মাঈনুল ইসলাম মান্নান বলেন, ‘যৌনবৃত্তির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ এবং এর প্রমাণ পাওয়ায় দল তাকে বহিষ্কার করেছে। এরকম লোক সমাজে আরও যারা রয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সব রাজনৈতিক দল ও প্রশাসনকে অনুরোধ জানাই।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আব্দুল হালিম বলেন, ‘আমার বাসায় ছয়টি ফ্যামিলি বাসা ভাড়া দেওয়া হয়। তার মধ্যে একটিতে মা-মেয়ে পরিচয়ে চারজন নারী দুই মাস আগে বাসা ভাড়া নেন। এখন তারা কোথায় কী কাজ করে সেটা আমার জানার বিষয় না। আমাকে কিছু না বলেই জামায়াতে ইসলামী থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আমি মনে করি বিষয়টি নিয়ে আমার সঙ্গে কথা বলে তারপর তাদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত ছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই। আমি এ ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন করবো।’
কলাপাড়া উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা মোহাম্মদ আব্দুল কাইয়ুম বলেন, ‘একটি অভিযোগের ভিত্তিতে বিশেষ রুকন বৈঠক ডেকে আব্দুল হালিমকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। জামায়াতে ইসলামী করতে হলে সাংগঠনিক নিয়ম-কানুন মানতে হবে।’
আসাদুজ্জামান মিরাজ/এসআর/এএসএম