বাংলাদেশি আখ্যা দিয়ে ১৪ ভারতীয় নাগরিককে ঠেলে পাঠালো বিএসএফ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি চুয়াডাঙ্গা
প্রকাশিত: ০৬:৪৪ পিএম, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫

চুয়াডাঙ্গার দর্শনা সীমান্ত দিয়ে নারী, পুরুষ, বৃদ্ধা ও শিশুসহ একই পরিবারের ১৪ জন ভারতীয় নাগরিককে বাংলাদেশি আখ্যা দিয়ে জোরপূর্বক বাংলাদেশে ঠেলে পাঠিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) রাতে এ ঘটনা ঘটে। বর্তমানে ওই ১৪ জন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-এর হেফাজতে আছে।

স্থানীয় ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার দিবাগত রাতে ঘন কুয়াশার সুযোগে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা নিমতলা সীমান্ত গেটের একটি পয়েন্ট দিয়ে তাদের অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে বাধ্য করা হয়। ভুক্তভোগী সবাই একই পরিবারের সদস্য।

তাদের দাবি, তারা ভারতের উড়িষ্যা (ওডিশা) প্রদেশের জগৎসিংহপুর এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা। মুসলিম পরিবার হওয়ায় ভারতীয় পুলিশ ও বিএসএফ তাদের নিজ দেশ থেকে জোর করে বাংলাদেশে পাঠিয়েছে।

তারা অভিযোগ করেন, জন্মসূত্রে তারা ভারতীয় নাগরিক এবং তাদের কাছে আধার কার্ড ও রেশন কার্ড ছিলো, যা ভারতীয় পুলিশ জোরপূর্বক কেড়ে নিয়েছে।

বাংলাদেশে প্রবেশের পর তারা দর্শনা সীমান্তবর্তী এলাকায় দিশেহারা অবস্থায় ঘোরাফেরা করতে থাকেন। পরে রাতে দর্শনা শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবস্থান নিলে বিষয়টি স্থানীয়দের নজরে আসে। মানবিক বিবেচনায় স্থানীয়রা খোলা জায়গায় অস্থায়ীভাবে তাবু স্থাপন করে তাদের থাকার ব্যবস্থা করেন। পাশাপাশি খাবার ও শীতবস্ত্র দিয়ে সহায়তা করেন।

পরবর্তীতে বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে প্রশাসনেরও নজরে আসে।

খবর পেয়ে দর্শনা থানা পুলিশ ও চুয়াডাঙ্গা-৬ বিজিবির সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই ১৪ জনকে নিজেদের তত্ত্বাবধানে নেন এবং তাদের পরিচয় ও নাগরিকত্ব যাচাই-বাছাই শুরু করেন।

১৪ ভারতীয় নাগরিকরা হলেন- গুলশান বিবি (৯০), শেখ জব্বার (৭০), আলকুম বিবি (৬৫), শেখ উকিল (৪০), সাবেরা বিবি (৩৫), শাকিলা খাতুন (১১), শেখ হাকিম (৪৫), সামসেরি বিবি (৪০), শেখ রাজা (৩০), মেহেরুন বিবি (২৫), নাসরিন পারভিন (১২), শেখ তৌহিদ (১১), শেখ রহিদ (২) ও শেখ বান্টি (২৮)।

৬ বিজিবি চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. নাজমুল হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অনুপ্রবেশকারী ব্যক্তিদের পরিচয় ও নাগরিকত্ব যাচাই-বাছাই কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তাদের কাছে কোনো পাসপোর্ট, ভারতীয় আধার কার্ড বা অন্য কোনো বৈধ পরিচয়পত্র পাওয়া যায়নি। বিষয়টি নিশ্চিত করতে বিএসএফসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, মানবিক বিবেচনায় তাদের খাবার, শীতবস্ত্র ও প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যাচাই-বাছাই শেষে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

হুসাইন মালিক/এনএইচআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।