খুলনায় সিএসডির ৩টি গুদাম সিলগালা


প্রকাশিত: ০১:২১ পিএম, ০২ নভেম্বর ২০১৬

খুলনায় সরকারি খাদ্য গুদাম-সিএসডি থেকে ভালো চাল নিয়ে নিন্মমানের চাল রাখার অভিযোগে তিনটি গুদাম সিলগালা করা হয়েছে। চাল পাচার করে বহিরাগতদের কাছে বিক্রি করে দেয়া হচ্ছে বলে র‌্যাব সূত্র জানিয়েছে।

সিএসডি গোডাউনের অসাধু কর্মকর্তা এবং গুদাম হ্যান্ডলিং শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে যোগসাজসে স্থানীয় একটি সিন্ডিকেট দীর্ঘ দিন ধরে চাল পাচার করে আসছে। তারা গুদামে খাওয়ার অনুপযোগী নিম্নমানের ও পচা চাল রেখে ভাল মানের চাল উচ্চমূল্যে বিক্রির উদ্দেশ্যে পাচার করছে।

গত মঙ্গলবার রাতে ও বুধবার দুপুর পর্যন্ত দুই দিনের অভিযানে র‌্যাব সদস্যরা ১৩ হাজার ৭৫০ কেজি চালসহ একটি ট্রাক আটক করে। এ ঘটনায় একজন শ্রমিক নেতাসহ দুই জনকে আটক করা হয়েছে। সর্বশেষ বুধবার দুপুরে র্যাব সদস্যরা খুলনা মহানগরীর বৈকালী কেন্দ্রীয় খাদ্য গুদামে অভিযান চালিয়ে সেখানে ২০১৩ সালের চাল পাওয়ায় তিনটি গোডাউন সিলগালা করে দেয়। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

র‌্যাব-৬ সূত্রে জানা যায়, নগরীর বৈকালীস্থ সরকারি খাদ্য গুদাম (সিএসডি) থেকে চাল পাচারের গোপন খবর পেয়ে মঙ্গলবার রাতে নগরীর শিরোমণি পুলিশ ক্যাম্প এলাকা থেকে এক ট্রাক ওএমএস’র চাল জব্দ করা হয়। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দৌলতপুর চালপট্টি থেকে খলিলুর রহমান নামে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়। ওই সূত্রের তথ্য ধরেই তারা রাতে খুলনা সিএসডি গোডাউনে প্রথম দফা অভিযান চালান। তারই ধারাবাহিকতায় বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত পুনরায় সিএসডি গোডাউনে অভিযান চালানো হয়। এ সময় জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আব্দুল আউয়াল উপস্থিত ছিলেন।

র‌্যাব জানায়, কেন্দ্রীয় এ গুদামের ১৮ এবং ৩২ নম্বর গোডাউনে থাকা চালের বেশির ভাগই খাওয়ার অনুপযোগী এবং নিম্নমানের। এ সময় ৯৯ দশমিক ৮৮০ মেট্রিকটন চালসহ ১৮ নম্বর গুদাম এবং ৬৬ দশমিক ৬২০ মেট্রিকটন চালসহ ৩২ নম্বর গুদাম সিলগালা করা হয়। এছাড়া মঙ্গলবার পাচার হওয়া চাল গোডাউনের ২৬ নম্বর গুদাম থেকে বের হওয়ায় সেটিও সিলগালা করে দেয়া হয়। এ সময় চাল পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে সিএসডি খাদ্য গুদাম হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আলী আসগর সরদারকেও আটক করা হয়।

সিএসডি গুদামের একটি সূত্র জানায়, অভিযানের খবর পেয়ে ২৬ নম্বর গুদাম ইনচার্জ মো. ইলিয়াস হোসেন স্ট্রোক করেন। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া সিলগালাকৃত ১৮ নম্বর গুদামে জাহাঙ্গীর হোসেন এবং ৩২ নম্বর গুদাম ইনচার্জ হিসেবে মহসিন আকন দায়িত্বে রয়েছেন।

র‌্যাব-৬ এর  স্পেশাল কোম্পানি কমান্ডার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. এনায়েত হোসেন মান্নান জানান, সিএসডি গোডাউনের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা এবং গুদাম হ্যান্ডলিং শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে যোগসাজসে স্থানীয় একটি সিন্ডিকেট দীর্ঘ দিন ধরে চাল পাচার করে আসছে। এভাবে সরকারি গুদাম থেকে চাল পাচার হলেও কর্তৃপক্ষ কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেন নি। এ ঘটনায় খালিশপুর থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

তিনি আরো জানান, সরকারি গুদাম হওয়ায় বিষয়টি জেলা প্রশাসনের কাছে প্রতিবেদন আকারে দেয়া হবে। জেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্তক্রমে ঘটনার সঙ্গে জড়িত গুদাম কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়া হবে। তদন্তের স্বার্থে তিনটি গোডাউন সিলগালা করা হয়েছে বলে।

আলমগীর হান্নান/আরএআর/এবিএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।