নওগাঁয় কলেজছাত্র খুনের ঘটনায় গ্রেফতার ৩
নওগাঁ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের কম্পিউটার বিভাগের ষষ্ঠ সেমিস্টারের ছাত্র ও ছাত্রলীগ কর্মী ছুরিকাঘাতে আহত শ্যামল চন্দ্র রায় (২০) নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শনিবার রাতে শ্যামলের বাবা গোপাল চন্দ্র বর্মণ বাদী হয়ে নওগাঁ সদর থানায় ৯ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ছয়-সাতজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।
মামলায় ওই দিন রাতেই পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ৭ম সেমিস্টারের ছাত্র আতোয়ার হোসেন (২০) ও মোহাম্মদ রনি (২০) ও চতুর্থ সেমিস্টারের ছাত্র ফয়সাল হোসেনকে (১৮) গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের সবার বাড়ি নাটোর জেলায় বলে জানা গেছে।
রোববার সকালে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে শ্যামলের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। বিকেলে গ্রামের বাড়ি পত্মীতলা উপজেলার মাটিন্দর ইউনিয়নের বাঁশখোলা গ্রামে তার সৎকার করা হয় বলে পারিবারিক সূত্রে জানা যায়।
শ্যামলের দুলাভাই উজ্জল বলেন, শ্যামলের বাবা গোপাল চন্দ্র একজন দিনমজুর। তারা এক ভাই ও এক বোন। শ্যামল খুব মেধাবী ছিল। এসএসসি পাশের পর স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য ও এলাকাবাসীদের সহযোগিতায় নওগাঁ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ভর্তি করানো হয়। পরিবারটা ভবিষ্যতে তার দিকে তাকিয়ে ছিল। এখন নিঃস্ব হয়ে গেল। যারা এ খুনের সাথে জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।
নওগাঁ সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোরিকুল ইসলাম বলেন, ইতোমধ্যে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হত্যা মামলা দিয়ে তাদের নওগাঁ জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। মামলার বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
উল্লেখ্য, পলিটেকনিক কলেজে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন থেকে দ্বন্দ্ব চলছিল। এ নিয়ে গত কয়েক মাস আগে মারপিট ও ভাঙচুর ঘটনা ঘটে। শ্যামল চন্দ্র পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের পাশের একটি ম্যাচে থাকতেন। শুক্রবার রাত ১০টার দিকে ম্যাচে যাচ্ছিল। পূর্বের জের ধরে তার পথ রোধ করে অপর গ্রুপের কয়েকজন ছাত্র ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।
শ্যামলের চিৎকারে আশেপাশের লোকজন এসে প্রথমে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করে দেয়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে রাতেই চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (রামেক) স্থানান্তর করা হয়। শ্যামলের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়া হলে শনিবার দুপুরের দিকে পথে টাঙ্গাইল নামক স্থানে শ্যামল মারা যায়।
আব্বাস আলী/এএম/আরআইপি