রাঙ্গামাটিতে কাঠ পরিবহনে গাড়ির সঙ্কট
রাঙ্গামাটি চট্টগ্রাম-সড়ক পুরোপুরি সচল হলেও কাঠ পরিবহন নিয়ে সঙ্কট বিরাজ করছে। গত ১৩ জুন পাহাড়ধসের ঘটনায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সড়কটির যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে। এতে পরিবহন ও ব্যবসা বাণিজ্য নিয়ে সৃষ্টি হয় সঙ্কট। যার মারাত্মক প্রভাবে ধস নামে জেলার অর্থনীতিতে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্তমানে রাঙ্গামাটি-চট্টগ্রাম সড়ক যোগাযোগ পুরোপুরি স্বাভাবিক। রাঙ্গামাটি সদরের সাপছড়ির শালবনে বিধ্বস্ত হওয়া সড়কের উত্তর পাশে একটি নতুন বেইলি সেতু নির্মাণ করে যান চলাচল উপযোগী করা হয়।
রাঙ্গামাটি থেকে সরাসরি যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী পরিবহনসহ সব ধরনের যান চলাচল করছে চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ জেলার বাইরে। কিন্তু কাঠ পরিবহন ও বাজারজাত নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছে।
এ নিয়ে ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করছেন ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্টরা। তুলছেন বৈষম্যের অভিযোগ। তবে বিষয়টি নিয়ে ভিন্ন কথা বলছে রাঙ্গামাটি সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
এ ব্যাপারে রাঙ্গামাটি কাঠ ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক কাজী মো. শহীদ উল্ল্যাহ বলেন, গত ১৩ জুনের পাহাড়ধসের ঘটনার পর দীর্ঘদিন ধরে এ এলাকার একমাত্র অর্থনীতিনির্ভর কাঠ ব্যবসা বন্ধ থাকায় অর্থনৈতিকভাবে সক্ষমতা হারিয়েছে এখানকার মানুষ। ধস নেমেছে জেলার অর্থনীতিতে। কিন্তু এত দিন পর সড়ক সচল হয়ে উঠলেও কাঠ পরিবহন নিয়ে সঙ্কট এখনও বিরাজমান।
এ নিয়ে বৈষম্যের আচরণ করছে প্রশাসন এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগ। সড়কের সাপছড়ির শালবনে পাহাড়ধসে ভগ্নাংশে নির্মিত বেইলি সেতু দিয়ে অন্যসব ভারি যান বা পণ্যবাহী পরিবহন যেতে দেয়া হচ্ছে। অথচ কাঠ স্থানান্তরে তিন টনের অধিক পরিবাহিত পরিবহন যেতে দেয়া হচ্ছে না।
রাঙ্গামাটি উপজাতীয় কাঠ ব্যবসায়ী ও জোত মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অন্ন সাধন চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের বহু মানুষ বনজসম্পদের ওপর নির্ভরশীল।
১৩ জুন পাহাড়ধসের ঘটনায় রাঙ্গামাটি-চট্টগ্রাম সড়ক যোগাযোগ ভেঙে পড়ায় কাঠ ব্যবসা সম্পূর্ণ স্থবির হয়ে পড়ে। এতে চরম অর্থনৈতিক সঙ্কটে এখানকার মানুষ। এরই মধ্যে প্রচুর পারমিটে জোত বাগান হতে আহরিত বিপুল কাঠ রাঙ্গামাটি শহরসহ বিভিন্ন অস্থায়ী ডিপোতে মজুদ হয়ে গেছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় সেগুলো যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাজারজাত জরুরি।
কিন্তু সড়ক ও জনপথ বিভাগের বৈষম্য আদেশে কাঠ পরিবহন নিয়ে খুব সঙ্কট হচ্ছে। সঙ্কট নিরসনে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের নজরদারিসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ দরকার।
রাঙ্গামাটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এমদাদ হোসেন বলেন, রাঙ্গামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের সদরের সাপছড়ি এলাকার বিধ্বস্ত অংশে একটি সম্পূর্ণ নতুন বেইলি সেতু নির্মাণ করে সড়কটি পুরোপুরি যান চলাচলে উপযোগী করা হয়েছে। আমরা এই সেতুর কাজ মাত্র ১ মাস ১০ দিনে শেষ করতে সক্ষম হয়েছি। সব ধরনের যান সেতু পারপার করতে পারবে। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা অতিরিক্ত পণ্যবোঝাই ভারি যান চলাচলে নিষেধ করেছি। এ জন্য অতিরিক্ত কাঠবোঝাই ট্রাক যেতে দেয়া হচ্ছে না।
সুশীল চাকমা/এএম/জেআই্এম