রাঙ্গামাটিতে কোরবানির পশুর হাটে মন্দাভাব

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি রাঙ্গামাটি
প্রকাশিত: ০৪:০০ এএম, ২৯ আগস্ট ২০১৭

পাহাড় ধসের প্রভাব ও হাট নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্বে এখনো জমে ওঠেনি রাঙ্গামাটির পশুর হাট। হাটে কোরবানির পশু বেচাকেনায় মন্দাভাব বিরাজ করছে। পাহাড় ধসে সৃষ্ট দুর্যোগে আর্থিক সঙ্কটে পড়ে কোরবানির পশু কিনতে পারছেন না অনেকে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও নিরাপত্তার স্বার্থে রাঙ্গামাটি শহরে শুধুমাত্র একটি জায়গায় পশুর হাট বসানোর অনুমতি দেয় স্থানীয় প্রশাসন। আর সেটি বসানো হয়েছে পৌর ট্রাক টার্মিনালে। এ হাটের ইজারা নিয়েছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. শাওয়াল উদ্দিন। অপরদিকে পৌরসভার নির্দেশনার বাইরে ট্রাক টার্মিনাল হাটের মাত্র আধা কিলোমিটার দূরে রিজার্ভবাজারের শুঁটকি পট্টিতে আরেকটি পশুর হাট বসিয়েছে স্থানীয় বাজার ব্যবসায়ী সমিতি। এতে পশু বেচাকেনা নিয়ে বিড়ম্বনার পাশাপাশি সৃষ্টি হয়েছে রেষারেষি। দেখা দিয়েছে বিশৃঙ্খলা। ফলে বেচাকেনায় মন্দাভাব দেখা দিয়েছে পশুতে ঠাসা রাঙ্গামাটির কোরাবানির পশুর হাটে।

এ ব্যাপারে রাঙ্গামাটি পৌরসভার মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী বলেন, শহরে পশুর হাট ব্যবস্থাপনা, নিয়ন্ত্রণ ও বর্জ্য অপসারণসহ পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার দায়িত্ব পৌর কর্তৃপক্ষের। এজন্য আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তাসহ পৌরবাসীর সুবিধার বিষয়টি বিবেচনায় রাখতে হয়। সব কিছুর বিবেচনা করে এবার কোরবানির ঈদে শহরের মধ্যস্থলে এবং লোড আনলোডের সুবিধাজনক স্থান রাঙ্গামাটি পৌর ট্রাক টার্মিনালে শুধু একটি পশুর হাট বসানোর সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছে। কিন্তু স্থানীয় কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষ এ নির্দেশানার বাইরে রিজার্ভবাজারের শুঁটকি পট্টিতে আরেকটি পশুর হাট বসানোর পাঁয়তারা করছে। অথচ সেখানে পশুর হাট বসানোর মতো কোনো পরিবেশ নেই।

রাঙ্গামাটি পৌর ট্রাক টার্মিনাল পশুর হাটের ইজারাদার মো. শাওয়াল উদ্দিন বলেন, অনেক টাকা পুঁজি দিয়ে হাট ইজারা নিতে হয়েছে। তা ছাড়া প্রতিদিন খরচ যাচ্ছে অনেক। হাটে প্রচুর গরু আনা হয়েছে। কিন্তু আজও বেচাকেনা নেই। ১৩ জুনের পাহাড় ধসের কারণে সড়ক যোগাযোগ ব্যাহত হওয়ায় এখানকার মানুষ অর্থনৈতিকভাবে একেবারে পঙ্গু। যে কারণে কোরবানি নিয়ে অনিশ্চিয়তায় অনেকে।

তিনি আরও বলেন, আমার ইজারার বাইরে আরেকটি অপ্রয়োজনীয় অতিরিক্ত পশুর হাট বসিয়ে নানাভাবে তৎপর কিছু স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি। সোমবার হাটে বিক্রি হয়েছে মাত্র ৭-৮টি গরু। এমন অবস্থা হলে লোকসান গুনতে হবে। যা হবে মরার ওপর খাড়ার ঘা।

এ ব্যাপারে রিজার্ভবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সভাপতি বিমল বড়ুয়া ও সাধারণ সম্পাদক মো. হেলাল উদ্দিনসহ ব্যবসায়ী নেতারা বলেন, জনগণের কেনাবেচার জন্য দীর্ঘ ৪৫ বছর ধরে রিজার্ভবাজারে পশুর হাট বসে আসছে। সেখানে দালালের উৎপাত নেই। দাম রাখা হয় নিয়ন্ত্রণে।

এদিকে পশু কেনাবেচা না জমায় কপালে হাত দিয়ে ক্রেতার অপেক্ষায় বসে আছেন বিক্রেতা ও ব্যবসায়ীরা। শহরের পৌর ট্রাক টার্মিনালের পশুর হাট গিয়ে কথা হয় আমির হোসেন, মো. জাফরসহ কয়েক জন ব্যবসায়ী ও বিক্রেতার সঙ্গে। তারা জানান, হাটে প্রচুর গরু। কিন্তু বেচাকেনা জমেনি। ফলে নিজেদের থাকা খাওয়াসহ পশু খাবার জোগাতেও কষ্ট হচ্ছে।

সুশীল চাকমা/আরএআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।