রাঙ্গামাটিতে জলাশয় ইজারায় অনিয়মের অভিযোগ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি রাঙ্গামাটি
প্রকাশিত: ১০:০৩ এএম, ৩০ আগস্ট ২০১৭

রাঙ্গামাটিতে মৎস্য জলাশয় ইজারা নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে জড়িত ইজারাদাতা প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং বর্তমান ইজারাদার।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের নিয়ন্ত্রণাধীন রাঙ্গামাটি শহরের কাঠালতলীর মৎস্য জলাশয়টি আবার তিন বছরের জন্য ইজারা দেয়ার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এটির বর্তমান ইজারাদার পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. সোলাইমান চৌধুরী।

এর আগে তিনি ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব খাটিয়ে তিন বছর মেয়াদে পর পর দুই দফায় টানা ৬ বছর ধরে জলাশয়টির ইজারার দখল নেন বলে অভিযোগ রয়েছে। আবার ইজারা ভাগানোর জন্য তৎপর-এমন অভিযোগ করছেন, ইজারা নিতে ইচ্ছুক দরপত্রদাতা অনেকে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সদস্য (প্রশাসন) আশীষ কুমার বড়ুয়া এ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। বিজ্ঞপ্তিতে ৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের রাঙ্গামাটি প্রধান কার্যালয়ের এস্টেট ইন্সপেক্টর (কক্ষ নম্বর ২১৪) হতে অফিস চলাকালীন সময়ে নির্ধারিত মূল্যে দরপত্র কিনে ১০ সেপ্টেম্বর বেলা ১২টার মধ্যে একই অফিসে রক্ষিত টেন্ডার বাক্সে জমা দিতে বলা হয়েছে। একই দিন বেলা সাড়ে ১২টায় উপস্থিত দরপত্র দাতাদের সামনে বাক্স খোলা হবে।

সংশ্লিষ্টরা জানায়, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের যাবতীয় কার্যক্রম তিন পার্বত্য জেলাব্যাপী। তাই এই বোর্ডের যে কোনো টেন্ডারে তিনটি পার্বত্য জেলার দফতর হতে দরপত্র বিক্রির নিয়ম আছে। পাশাপাশি অনলাইনের মাধ্যমেও টেন্ডার প্রকাশসহ দরপত্র ক্রয়ের সুযোগ দেয়ার কথা বলা আছে।

কিন্তু রাঙ্গামাটির কাঠালতলী জলাশয় ইজারায় শুধু প্রধান কার্যালয় হতে সংগ্রহ করে দরপত্র কিনতে বলা হয়েছে। অপর দুই পার্বত্য জেলাসহ অনলাইনে দরপত্র সংগ্রহ করার কোনো সুযোগ রাখা হয়নি। এছাড়া বিজ্ঞপ্তি পত্রিকার মাধ্যমে প্রকাশ করা হলেও অনলাইনে দেয়া হয়নি।

নাম প্রকাশ না শর্তে ইজারার দরপত্র দিতে আগ্রহী অনেকে অভিযোগ করছেন, বর্তমান ইজারাদার মো. সোলাইমান চৌধুরী আবারও দলীয় প্রভাবে জলাশয়টির ইজারা ভাগানোর জন্য জোরালোভাবে তৎপর। অন্যরা যাতে দরপত্র নিতে না পারে সেজন্য নানা প্রভাব খাটাচ্ছেন তিনি।

এতে গোপন সহায়তা দিচ্ছে ইজারাদাতা প্রতিষ্ঠানটির সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এভাবে প্রভাব খাটিয়ে দুই দফায় ইজারা ভাগিয়েছেন তিনি। যে কারণে এবারও নিয়ম অনুযায়ী টেন্ডার না দিয়ে নানা টালবাহানার আশ্রয় নেয়া হচ্ছে। এছাড়া ইজারার সুযোগে জলাশয়টির ব্যাপক জায়গা বেদখলে গেছে। এ নিয়ে মাথা ব্যথা নেই কর্তৃপক্ষের।

এ ব্যাপারে ইজারা আহ্বানকারী পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সদস্য (প্রশাসন) আশীষ কুমার বড়ুয়া জানান, বর্তমান ইজারাদার কে তার নাম জানেন না তিনি। নিয়ম অনুযায়ী আবার তিন বছরের জন্য জলাশয়টির ইজারা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। বৈধভাবেই ইজারা প্রদানের কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে। এখানে অনিয়মের কোনো সুযোগ নেই। বিজ্ঞপ্তি উন্নয়ন বোর্ডের ওয়েবসাইটে দেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য চেষ্টা করা হলে বর্তমান ইজারাদারের সঙ্গে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি। তার ব্যবহার করা ফোন নম্বরে বারবার কল দিলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

সুশীল চাকমা/এএম/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।