রাঙ্গামাটিতে ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চালু থাকছে আশ্রয় কেন্দ্রগুলো
সরকারি বরাদ্দ শেষ হওয়ায় ৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে পাহাড় ধসের ঘটনায় খোলা সরকারি আশ্রয় কেন্দ্রগুলো বন্ধ করে দেয়ার কথা। কিন্তু মানবিক কারণে এবং সরকারের পরবর্তী সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চালু থাকছে আশ্রয় কেন্দ্রগুলো।
ওই সময় পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের জরুরি ত্রাণ তহবিল হতে শহরে বিদ্যমান ৬টি আশ্রয় কেন্দ্র চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আবু শাহেদ চৌধুরী।
এদিকে সরকারি পুনর্বাসন এখনও অনিশ্চিত। এ মুহূর্তে কোথাও গিয়ে মাথা গোজার ঠাঁই নেই ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের। ফলে কোনো অবস্থাতেই আশ্রয় কেন্দ্র ছাড়তে পারছেন না তারা। এ অবস্থায় বিষয়টি মানবিক বিবেচনায় নিয়ে এবং সরকারের পরবর্তী সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় ৭ সেপ্টেম্বর আশ্রয় কেন্দ্রগুলো চালু রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসন জানায়, ১৩ জুন ভয়াবহ পাহাড় ধসের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের আশ্রয়ে সরকারিভাবে খোলা হয় ১৯টি আশ্রয় কেন্দ্র। এসব কেন্দ্রে গিয়ে অবস্থান নেন দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় সাড়ে ৩ হাজার মানুষ। পরে অনেকে চলে যাওয়ায় সর্বশেষ চালু রাখা হয় ৬টি আশ্রয় কেন্দ্র। এসব কেন্দ্রে বর্তমানে অবস্থান করছে ৩১৩ পরিবারের প্রায় ৮ শতাধিক মানুষ। যারা সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত এবং ভিটেবাড়ি হারা। তাদেরকে সরকারিভাবে পুনর্বাসনের প্রক্রিয়া চলছে। পাহাড় ধসের ঘটনায় প্রশাসনের নিরুপণ করা তালিকায় শহরসহ রাঙ্গামাটিতে সম্পূর্ণ ও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার এক হাজার ৮০০। প্রাণহানি ঘটে ১২০ জনের।

সরকারের তরফ থেকে বলা হয়েছিল, ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে যা যা দরকার তা করবে সরকার। ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায় এবং বিধ্বস্ত হওয়া ভিটায় আর কাউকে বাস করতে দেয়া হবে না। সরকারি উদ্যোগে জায়গা খুঁজে নিয়ে সেখানে বাড়িঘর তৈরি করে দিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন করা হবে। কিন্তু ঘটনার দীর্ঘ আড়াই মাস পরও এসব ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পুনর্বাসনের বিষয়টি অনিশ্চিত। এরই মধ্যে শেষ হয়ে গেছে আশ্রয় কেন্দ্র চালানোর অর্থ ও খাবারের বরাদ্দ।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আবু শাহেদ চৌধুরী বলেন, সরকারি বরাদ্দ শেষ হওয়ায় আশ্রয় কেন্দ্র বন্ধ করে দেয়া ছাড়া আর কোনো পথ খোলা ছিল না। ২৮ আগস্ট সরকারি বরাদ্দ শেষ হয়েছিল। এরপর থেকে জেলা প্রশাসনের জরুরি ত্রাণ তহবিল হতে আশ্রয় কেন্দ্র চালানো হচ্ছে। তাই ৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আশ্রয় কেন্দ্রগুলো বন্ধ করে দেয়ার চিন্তা ছিল। কিন্তু ক্ষতিগ্রস্তদের ব্যাপারে মানবিক বিবেচনা করে ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের জরুরি ত্রাণ তহবিল হতে আশ্রয় কেন্দ্রগুলো চালানোর জন্য সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছে। আমরা সরকারের পরবর্তী সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি। এর মধ্যে আরও বরাদ্দ পাওয়া গেলে সেই বরাদ্দে যাত দিন সম্ভব চালানো হবে।
সুশীল চাকমা/আরএআর/জেআইএম