পর্যটকশূন্য রাঙ্গামাটি, ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি রাঙ্গামাটি
প্রকাশিত: ১১:৪৭ এএম, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭

এর আগে প্রতি বছর ঈদ উপলক্ষে রাঙ্গামাটিতে প্রচুর পর্যটকের সমাগম হলেও এবার ঈদুল আজহায় ছিল পর্যটকশূন্য। ফলে ধস নেমেছে এখানকার পর্যটন ব্যবসায়। মাথায় হাত পড়েছে ব্যবসায়ীদের।

পর্যটকশূন্যতর প্রধান কারণ গত ১৩ জুন পাহাড়ধসের ঘটনা। গত ঈদুল ফিতর উপলক্ষেও পর্যটকশূন্য ছিল রাঙ্গামাটি। সরেজমিন পরিদর্শনকালে রাঙ্গামাটি পর্যটন মোটেল ও হলিডে কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমাসহ পর্যটন সংশ্লিষ্টরা এসব তথ্য জানিয়েছেন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, এর আগের বছরগুলোতে প্রতিটি ঈদ উপলক্ষে রাঙ্গামাটিতে প্রচুর পর্যটকের পদচারণা ঘটত। ঈদ অবকাশে আসতেন হাজার হাজার পর্যটক। এতে ভিড় জমত পর্যটন মোটেল, স্পট, স্থাপনাগুলোতে। পর্যটকে ঠাসা হয়ে পড়ত আবাসিক হোটেলগুলো। এমনকি সিট না পেয়ে অনেক পর্যটক রাতযাপন করতেন বাসে। এবার কোরবানি ঈদে ২০ শতাংশ পর্যটকের উপস্থিতি হয়নি এ পর্যটন নগরীতে।

তারা বলেন, গত ১৩ জুনের রাঙ্গামাটির ভয়াবহ পাহাড়ধসের ঘটনায় দেশজুড়ে আতঙ্ক ছড়ায়। এ ঘটনায় বিধ্বস্ত হয়ে ব্যাহত হয়ে পড়ে সড়ক যোগাযোগ। এরই মধ্যে রাঙ্গামাটি-চট্টগ্রাম সড়ক সচল হয়ে উঠলেও তা আজও ব্যাপক আকারে প্রচার পায়নি। ফলে ঈদুল ফিতরের মতো এবার ঈদুল আজহা উপলক্ষেও আগমন ঘটেনি পর্যটকের।

রাঙ্গামাটি পর্যটন মোটেল ও হলিডে কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা বলেন, পাহাড়ধসের ঘটনার পর থেকে এখানকার পর্যটন ব্যবসায় মারাত্মক ধস নেমেছে। এ ঘটনার পর থেকে পর্যটকের আনাগোনা একবারে বন্ধ হয়ে গেছে। ঈদুল ফিতরের ছুটিতে কোনো পর্যটকের আগমন ঘটেনি। এবার ঈদুল আজহা ছুটিতেও পরিস্থিতি আগের মতোই। রাঙ্গামাটি পর্যটন মোটেলে এবার বুকিং হয়েছে মাত্র ২০ শতাংশ। মূলত পাহাড়ধসের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ায় পর্যটকরা এ মুহূর্তে রাঙ্গামাটি ভ্রমণে আসতে চাচ্ছেন না। ফলে পর্যটক শূন্যতা বিরাজ করছে।

rangamati-Lake-1

তিনি বলেন, আগের বছরগুলোতে প্রতিটি ঈদের ছুটির দিনে গড়ে ৪-৫ হাজার পর্যটকের আনাগোনা হতো রাঙ্গামাটি পর্যটন মোটেলে। ঈদের এক সপ্তাহ আগে থেকেই আমাদের মোটেলে বুকিং শেষ হয়ে যেত। এবার ঈদে ফাঁকা পড়ে রয়েছে মোটেলের কক্ষগুলো। আগে আমরা সিট দিতে পারতাম না। এরই মধ্যে কাপ্তাই লেকে পানি বাড়ায় তলিয়ে রয়েছে এখানকার মনোরম ঝুলন্ত সেতুটি। আগের বছরগুলোতে সেতুটি ডুবে গেলেও প্রচুর পর্যটক আসতেন। তাই এবার সেতু নয়, মূল প্রভাব ১৩ জুনের পাহাড়ধসের ঘটনা।

এদিকে, রাঙ্গামাটিতে সরকারি পর্যটন মোটেল ছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি পর্যটন স্পট, স্থাপনা ও দর্শনীয় স্থান। আগে ঈদের ছুটিতে জেলা প্রশাসকের বাংলো, রাজবন বিহার, সুবলং ঝর্ণা স্পট, চাকমা রাজার বাড়িসহ সবকটি পর্যটন স্পট মুখর হয়ে উঠত প্রচুর পর্যটকের পদচারণায়।

এবার ঈদের আগের দিন থেকে ঘুরে দেখা গেছে, এসব স্পটে পর্যটক শূন্যতা। কিছু স্থানীয় লোকজন ছাড়া বাইরের থেকে আগত পর্যটককে চোখে পড়েনি।

সুশীল চাকমা/এএম/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।