সবজির চারায় লাখপতি হারুন
বীজ নয় শীতকালীন সবজির চারা বিক্রি করেই এখন লাখপতি জয়পুরহাট সদর উপজেলার গনকবাড়ী এলাকার হারুন অর রশিদ। গড়ে তুলেছেন শাহানাজ নামে একটি নার্সারি। প্রথম অবস্থায় ৪ শতক জায়গা লিজ নিয়ে ব্যবসা শুরু করলেও এখন তিনি নিজ জমি ও লিজসহ ৩ বিঘা জায়গার উপর সবজির চারা উৎপাদন করছেন। অসময়ে বৃষ্টির কারণে ব্যবসায় কিছুটা ক্ষতি হলেও এ মৌসুমে বীজ ও শ্রমিক খরচ বাদ দিয়ে ৭-৮ লাখ টাকা লাভ করবেন বলে আশাবাদী তিনি।
হারুন অর রশিদ জানান, সবজির চারার ব্যবসা শুরুর আগে তিনি মুরগি ও কলার ব্যবসা করতেন। কিন্তু অভাব লেগেই থাকত সংসারে। পরে একদিন সিদ্ধান্ত নেন সবজির চারা উৎপাদনের। আর সেই মোতাবেক হারুন ২০১০ সালে সবজির চারা ব্যবসায়ী শ্বশুর ইসমাঈল হোসেনের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করেন। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। বর্তমানে তার নার্সারিতে ১০ জন শ্রমিকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও করেছেন।

মৌসুমের আষাঢ় মাস থেকে শুরু হওয়া চারা উৎপাদন আগামী জ্যৈষ্ঠ মাস পর্যন্ত চলবে। এতে একই জমিতে তিন থেকে চার বার পর্যন্ত বীজ অঙ্কুরোদগমের মাধ্যমে চারা উৎপাদন করা হবে বলে জানান হারুন।
মৌসুমের আষাঢ় মাস থেকে বীজতলা প্রস্তত করে বাঁধাকপি, ফুলকপি, মরিচ, টমেটো, বেগুন ও পেঁপের বীজ বপন করা হয়। ওই বীজ অঙ্কুরোদগমের মাধ্যমে চারা গজালে তা পরিচর্যা করে ২৫-৩০ দিন বয়সে তুলে অন্য কৃষকদের কাছে বিক্রি করা হয়।

বর্তমানে বাজারে মানভেদে এক হাজার পিস মরিচের চারা ৪শ থেকে হাজার টাকা, টমেটোর চারা ৫শ থেকে ৭শ টাকা, ফুলকপির চারা ৭শ থেকে ৯শ টাকা, বাঁধাকপির চারা ৬শ থেকে ৮শ টাকা, বেগুনের চারা ৩শ থেকে ৪শ টাকা ও পেঁপের চারা ৫শ থেকে ৬শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
হারুনের চারা উৎপাদনের ব্যবসার প্রতি উদ্বুদ্ধ হয়ে এই গ্রামেরই জীবন দেবনাথ, আব্দুল ওহাব ও মাসুদ রানাসহ আরও অনেকে চারা উৎপাদনের ব্যবসা শুরু করেছেন। জয়পুরহাট জেলা ছাড়াও সৈয়দপুর, লালমনিরহাট, নীলফামারী, দিনাজপুর, বগুড়াসহ বিভিন্ন জেলার কৃষক ও সবজি চারার পাইকারি ব্যবসায়ীরা হারুনের নার্সারি থেকে চারা কিনে নিয়ে যান।

জয়পুরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক সুধেন্দ্র নাথ জানান, হারুনসহ যেকোনো চারা ব্যবসায়ী আমাদের কৃষি অফিসে আসলে তাদেরকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।
রাশেদুজ্জামান/এফএ/পিআর