এক ছড়াতেই ৫১১ সুপারি!

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি বাগেরহাট
প্রকাশিত: ১১:৫১ এএম, ০৫ ডিসেম্বর ২০১৭

পান নিয়ে লেখক-সাহিত্যিকরা কত না বন্দনা করেছে তার ইয়ত্তা নেই। কিন্তু সুপারি ছাড়া পানের পূর্ণতার কথা কল্পনা করাই যায় না। কাঁচা, শুকনা, মদানো (ভেজা) কতনা ভাবে পান প্রেমিকরা সুপারি খান। এছাড়া সুপারি নানাবিধ কাজে ব্যবহার করা হয়। এই ফলটি একটি অর্থকারী ফসলও।

একটি সুপারি গাছে বছরে কি পরিমাণ সুপারি হয় তা হয়তো অনুমান করা যেতে পারে। কিন্তু সুপারির এক ছড়াতে সর্বোচ্চ কত সুপারি হয়? ৫০ থেকে ১০০ বা সর্বোচ্চ দেড়শ’র বেশি হয়তো কল্পনা করাটা ভুল হবে। কিন্তু একটি ছড়াতে ৫১১টি সুপারি বললে হয়তো একটু অবাকই হবেন।

বাগেরহাট সদর উপজেলার রাখালগাছি ইউনিয়নের ছোট পাইকপাড়া গ্রামের মো. তৈয়বুর রহমানের একটি সুপারি গাছের এক ছড়াতে ৫১১টি সুপারি হয়েছে। স্থানীয় সিঅ্যান্ডবি বাজারে সোমবার বিকেলে বিক্রি করার জন্য ওই ছড়াটি নিয়ে আসলে কৌতূহলবসত একনজর দেখতে ভিড় জমায় সবাই।

তৈয়বুর রহমান জানান, সখের বসে প্রায় ১০ বছর আগে বাড়ির আঙ্গিনায় ৫টি সুপারি গাছ লাগান। লাগানোর ৫ বছর পর প্রথম ফলন পান। গাছে ফলনের প্রথম ২ বছর সুপারি কম হলেও এখন সুপারির ফলন অনেক বেশি। প্রতিটি গাছে বছরে মাত্র ৩ থেকে ৪টি ছড়া হয়। আর প্রতি ছড়াতে ৫শ’র বেশি সুপারি হয়।

অঞ্চলভিত্তিক সুপারির গণনার পদ্ধতির ভিন্নতা রয়েছে। বাগেরহাটে প্রতি ১২টি সুপারিতে ১ঘা (ডজন) আর ২২ ঘায় এক কুড়ি সুপারি হয়। খুচরা হিসাবে প্রতি ঘা পাকা সুপারি ২৫-৩৫ টাকায় বিক্রি হয়। তবে কুড়ি হিসাবে বিক্রি করলে ৫০০ থেকে ৮০০ টাকার মধ্যে ওঠানামা করে।

তৈয়বুর রহমান আরও জানান, প্রতিটি গাছে বছরে ২ হাজার টাকার বেশি আয় হয় তার। সে হিসাবে তার ৫টি গাছ থেকে বিনা পরিশ্রমে ১০ হাজার টাকা আয় হয়। প্রতি বছর এই গাছের সুপারি দিয়ে চারা বানাবার জন্য অনেকে আগাম সুপারির অর্ডার দিয়ে রাখেন। ভবিষ্যতে এই সুপারির বড় বাগান করার ইচ্ছা রয়েছে এবং ইতোমধ্যে নতুন একশ’ চারা গাছ লাগিয়েছেন তিনি।

স্থানীয় রওশন ওয়াজ বিউটি, উজ্জ্বল, আমজেদ হোসেন, হাসিব, মোহাম্মদ হেলাল, দীপকসহ কয়েকজন পানপ্রেমী জানান, তারা প্রতিনিয়ত পান খান। পানের সঙ্গে সুপারি লাগে। তাই তারা তৈয়বুর রহমানের কাছ থেকে সুপারি সংগ্রহ করে চারা বানিয়েছেন। ৩ থেকে ৪ বছরের মধ্যে এই গাছ থেকে সুপারি পাওয়া যাবে।

বাগেরহাটের যাত্রাপুর ইউনিয়নের সুপারি বাগান মালিক আসাদ শেখ বলেন, তৈয়বুর রহমানের সুপারির ফলন অনেক বেশি। তাই আমি তার কাছ থেকে সুপারি সংগ্রহ করে বড় পরিসরে আবাদের জন্য চারা লাগিয়েছি। আশাকরি ভালো ফলন হবে।

বাগেরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. আফতাব উদ্দিন জানান, সুপারি একটি অর্থকারী ফসল। তৈয়বুর রহমানের সুপারিটি একটি উচ্চফলনশীল জাত। এই জাতের সুপারির ফলন অত্যন্ত বেশি।

তবে পরিমাণে বেশি হয় বলে সুপারির আকার কিছুটা ছোট হয়। বাণিজ্যিকভাবে এই জাতের সুপারি চাষ করা গেলে অনেক বেশি লাভবান হওয়া যাবে।

শওকত আলী বাবু/এএম/আইআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।