সন্তান ফিরে পেতে তিন মায়ের আহাজারি

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি খাগড়াছড়ি
প্রকাশিত: ০৯:৫৪ পিএম, ১৫ মে ২০১৮

‘আমার এতো ফটো তুলে কী হবে, আমি আমার ছেলেকে ফেরত চাই। আমি ফটো তুলতে চাই না। আমার ছোট্ট নাতিটার কি হবে..? আমি তো অপেক্ষা করি কই আমার ছেলে তো আসে না।’

নিজের শূন্য ঘরের দরজায় বসে এভাবেই আহাজারি করছেন মাটিরাঙ্গার নিখোঁজ মহরম আলীর মা ফুল মালা। যে যাচ্ছে তার কাছেই সন্তানকে ফিরে পাওয়ার আকুতি করছেন এ বৃদ্ধা। সন্তান হারানোর শোকে বিমর্ষ মহরম আলীর বৃদ্ধ মায়ের আহাজারি যেন কোনোভাবেই থামছে না। সন্তানের অপেক্ষায় এখনও বাড়ির সামনেই কাটে তার রাত-দিন।

অন্যদিকে ছেলের জন্য নামাজের বিছানায় তসবিহ হাতে বিলাপ করে যাচ্ছেন অপর নিখোঁজ যুবক মো. সালাহ উদ্দিনের মা রৌশন আরা বেগম। দিনের একটা বড় অংশ কাটে তার নফল নামাজ পড়েন। তিনিও যেকোনো মূল্যে তার ছেলেকে ফেরত চান।

তিনি বলেন, প্রতিদিন কতো মানুষ আসে যায় কিন্তু আমার বুকের ধন কেন আসে না?

অন্যদিকে একই অবস্থা বিরাজ করছে নিখোঁজ ট্রাকচালক আদর্শগ্রামের বাসিন্দা মো. বাহার মিয়ার মিয়ার বাড়িতে। খেয়ে না খেয়ে বেঁচে থাকা মো. বাহার মিয়ার বৃদ্ধা মা আমেনা বেগম জানতে চান কবে তার ছেলে ফেরত আসবে। কোনো ভাবেই ছেলে হারানোর শোক সইতে পারছেন না তিনি। ছেলেকে ছাড়া কীভাবে চলবে তার সংসার এমন জিজ্ঞাস্য তার।

খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গার নিখোঁজ তিন যুবকের পরিবারের সর্বশেষ অবস্থা জানতে নিখোঁজ তিন যুবকের বাড়িতে গেলে এমন দৃশ্য দেখা যায়। নিখোঁজ তিন হতভাগ্য যুবক বেঁচে আছেন কি-না তা কেউ না জানলেও তারা ফিরবে এ আশায় বুক বেঁধে আছে এ তিন যুবকের পরিবার।

প্রসঙ্গত, গত ১৬ এপ্রিল মহালছড়ির মাইছড়ি এলাকায় কাঠ কিনতে গিয়ে মাটিরাঙ্গা পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের নতুনপাড়া এলাকার মো. খোরশেদ আলমের ছেলে সালাউদ্দিনের সঙ্গে নিখোঁজ হন একই এলাকার মৃত আবুল কাশেমের ছেলে মহরম আলী (২৭)। একই সঙ্গে নিখোঁজ হন আদর্শ গ্রামের বাসিন্দা ট্রাক চালক মো. বাহার মিয়া। নিখোঁজ হওয়ার ৩০দিনেও তাদের সন্ধান মেলেনি।

মুজিবুর রহমান ভুইয়া/আরএআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।