টার্কি পালনে সাফল্যের স্বপ্নযাত্রায় মানিকছড়ির জামাল উদ্দীন

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি খাগড়াছড়ি
প্রকাশিত: ০১:৩৩ পিএম, ০৮ অক্টোবর ২০১৮

মাত্র দুটি টার্কি দিয়ে শুরু করে বর্তমানে টার্কি পালনে সাফল্যের মুখ দেখতে শুরু করেছেন খাগড়াছড়ির মানিকছড়ির ছেলে মো. জামাল উদ্দীন মৃধা। গত এক বছরে তিন লাখ টাকা আয়সহ প্রায় চার শতাধিক টার্কির সফল খামারি তিনি। খাগড়াছড়ির মানিকছড়ির গচ্ছাবিল এলাকায় গড়ে তুলেছেন ‘মৃধা টার্কি ফার্ম’।

পাহাড়ে মুখীকচু চাষ, আম বাগান, আনারস বাগান সৃজনসহ মৌসুমি ব্যবসা-বাণিজ্য ছিল জামাল উদ্দিনের আয়ের একমাত্র উৎস। পাশাপাশি ছিল ক্ষুদ্র ব্যবসা। এ দিয়ে কোনো রকমে টেনেটুনে তার সংসার চলছিল। একটি বেসরকারি টেলিভিশনের একটি প্রতিবেদনে পাল্টে যায় তার বাণিজ্যিক গতিপথ।

২০১৭ সালের আগস্টে ওই প্রতিবেদন দেখেন জামাল উদ্দিন। প্রতিবেদনে একজন সফল টার্কি চাষির সাফল্য গাঁথা দেখানো হয়। জানতে পারেন হাঁস-মুরগী পালনের পাশাপাশি টার্কি পালনে ব্যাপক সফলতার কথা। ওই প্রতিবেদন দেখে উৎসাহী হয়ে জামাল উদ্দিন সাফল্যের আশায় টার্কির সন্ধানে বের হন এবং চট্টগ্রাম থেকে দুটি টার্কি কিনে আনেন। ৪ মাস বয়সী একটি টার্কি টানা ৬০ দিন ডিম দিয়েছে। এর এক থেকে দেড় মাস পর আবার টানা দুই মাস ডিম দেয়। সেই থেকেই জামাল উদ্দীনের সাফল্যের পথে স্বপ্নযাত্রা শুরু।

টার্কি পালনের মাধ্যমে মাত্র এক বছরে স্বপ্নপূরণের দুয়ারে পৌঁছে গেছেন স্বপ্নযাত্রী মো. জামাল উদ্দিন মৃধা। তবে পর্যাপ্ত প্রচারণার অভাব এবং টার্কির ডিম ও মাংস বাজারজাতকরণে এখনও পর্যাপ্ত গ্রাহক সৃষ্টি না হওয়ায় টার্কির উৎপাদন বাড়ানো যাচ্ছে না বলেও জানার তিনি।

Tarki-Pic

টার্কি চাষি মো. জামাল উদ্দিন মৃধা বলেন, দুটি টার্কি দিয়ে শুরু করে এখন তিনি তিনশ টার্কির মালিক। টার্কির পাশাপাশি চায়না মোরগ তিতির ও ইন্দোনেশিয়ার কেদারনাথ মোরগ পালন শুরু করেছেন। সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই তার খামারে যুক্ত হবে টাইগার মুরগী।

তিনি বলেন, তিনটি মহিলা টার্কির সঙ্গে একটি পুরুষ টার্কির সংমিশ্রণে রাখা হলে সকল ডিমে শতভাগ বাচ্চা পাওয়া সম্ভব। একটি সুস্থ টার্কি ৩-৪ বছর পর্যন্ত ডিম দেয়। আর ওইসব ডিম মেশিনের মাধ্যমে বাচ্চ ফুটাতে হয়। তবে টার্কি সর্ম্পকে এখনও পর্যাপ্ত প্রচারণার অভাব এবং ক্রেতা সঙ্কটে উৎপাদন বাড়ানো যাচ্ছে না।

জামাল উদ্দিন মৃধা বলেন, একটি পূর্ণবয়স্ক টার্কির গড় ওজন ৭-৮ কেজি হয়। প্রতি কেজি টার্কির মাংস প্রায় ৪০০ টাকা, প্রতিটি ডিম ১০০-১২০ টাকা, একমাস বয়সী বাচ্চা ৪০০-৪৫০ টাকা দরে বিক্রি করেন। ইতোমধ্যে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি, ফেনীর দাঁগনভুইয়া, খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটির ক্ষুদ্র খামারিরা তার খামার থেকে ডিম ও বাচ্চা সংগ্রহ করেছেন।

টার্কি চাষ অত্যন্ত সহজ, লাভজনক ও প্রোটিন সমৃদ্ধ জানিয়ে পাহাড়ের সফল টার্কি চাষি মো. জামাল উদ্দিন মৃধা বলেন, কেউ টার্কি চাষে এগিয়ে আসলে তাকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। টার্কি চাষ বেকারত্ব ঘোচাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে বলে জানান সফল এ টার্কি চাষি।

মুজিবুর রহমান ভুইয়া/আরএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।